ম্যানুফ্যাকচারিং শিল্পখাত করোনার প্রভাব কাটিয়ে উঠতে শুরু করেছে : শিল্পমন্ত্রী

272

ঢাকা, ৫ সেপ্টেম্বর,২০২০ (বাসস): প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিচক্ষণ নেতৃত্ব ও ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশের ম্যানুফ্যাকচারিং শিল্পখাত ধীরে ধীরে করোনার নেতিবাচক প্রভাব কাটিয়ে উঠতে শুরু করেছে বলে জানিয়েছেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন।
তিনি বলেন, তৈরি পোশাক শিল্প বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ম্যানুফ্যাকচারিং শিল্পখাত। বিশ্বব্যাপী ঘরবন্দির প্রথম পর্যায়ে এখাতে রপ্তানি বাধাগ্রস্ত হলেও চলতি বছরে জুলাই থেকে এটি আবার সচল হতে শুরু করেছে। ০১-২২ আগস্ট, ২০২০ সময়ে বাংলাদেশ ২ দশমিক ৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের তৈরি পোশাক রপ্তানি করেছে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৪৫ দশমিক ৮ শতাংশ বেশি।
শিল্পমন্ত্রী আজ ভার্চ্যুয়াল মাধ্যমে আয়োজিত বৈশ্বিক উৎপাদন এবং শিল্পায়ন সম্মেলনের অংশ হিসেবে ‘নীতিনির্ধারকদের চ্যালেঞ্জ : মন্দার মধ্য দিয়ে যাত্রা’ শীর্ষক উচ্চ পর্যায়ের অধিবেশনের আলোচক হিসেবে অংশ নিয়ে এ কথা জানান। কোভিড-১৯ উত্তরণে উৎপাদনশীল শিল্পখাতে ভ্যালু চেইনের উন্নয়নে বিশ্ব সম্প্রদায়ের করণীয় নির্ধারণের লক্ষ্যে জাতিসংঘ শিল্প উন্নয়ন সংস্থা (ইউনিডো) এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের জ্বালানি ও শিল্প মন্ত্রণালয় যৌথভাবে সম্মেলনের আয়োজন করে।
প্রখ্যাত সাংবাদিক ও সিএনএন ইন্টারন্যাশনালের বিজনেস এমার্জিং মার্কেটস্ এডিটর জন কে. ডেফটারিয়সের সঞ্চালনায় অধিবেশনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সৌদি আরবের শিল্প ও খনিজ সম্পদমন্ত্রী বান্দার বিন ইব্রাহীম আল-খোরায়েফ।
অনুষ্ঠানে রাশিয়ার সলকোবো ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান আরকাদি দোভোরোভিচ ইন্দোনেশিয়ার সমুদ্র সম্পদ ও বিনিয়োগ বিষয়ক মন্ত্রী জেনারেল (অব.) লুহুত বিনসার পাজায়ান এবং রুয়ান্ডার বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী সোরায়া হাকুজিয়েরেমি আলোচনায় অংশ নেন।
শিল্পমন্ত্রী বলেন, করোনা মহামারির ফলে বৈশ্বিক সাপ্লাই চেইন ও উৎপাদনশীল শিল্পখাত মারাত্বকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এমএসএমইখাতের সুরক্ষায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সময়োপযোগি সিদ্ধান্তের ফলে বাংলাদেশ করোনার নেতিবাচক প্রভাব মোকাবেলায় শুরু থেকেই স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিল্প উৎপাদন চালু ও নিররচ্ছিন্ন সাপ্লাই চেইন অব্যাহত রাখার কৌশল গ্রহণ করেছে।এর ফলে দেশিয় উৎপাদনমুখী শিল্পখাত ক্রমেই ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। আগামী ছয় মাসের পর থেকে বাংলাদেশ করোনার ক্ষতি পুষিয়ে ওঠতে সক্ষম হবে বলে ইউনিডো পরিচালিত সাম্প্রতিক সমীক্ষার সাথে তিনি একমত পোষণ করেন।
উৎপাদনমুখী শিল্পখাতে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সুফল উল্লেখ করে শিল্পমন্ত্রী বলেন,এ শিল্প বিপ্লবের ফলে উৎপাদনমুখী শিল্প কারখানায় ডিজিটাল টেকনোলজির ব্যবহারের বিশাল সুযোগ তৈরি হয়েছে। বাংলাদেশে এখাতে কয়েকটি পাইলট উদ্যোগ ইতোমেধ্যে সাফল্য পেয়েছে। ম্যানুফ্যাকচারিং শিল্পখাত শ্রমঘন হওয়ায় বাংলাদেশের মত জনবহুল দেশে ডিজিটাল প্রযুক্তিনির্ভর ম্যানুফ্যাকচারিং শিল্পখাত করোনা পরবর্তীতে ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও দারিদ্র্য বিমোচনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। তিনি উন্নত ও উন্নয়নশীল নির্বিশেষে বিশ্বের সকল রাষ্ট্রে উৎপাদনমুখী শিল্পখাতের বিকাশে গবেষণা ও উন্নয়ন (আরঅ্যান্ডডি) সহায়তা জোরদার, হাইটেক সার্ভিস সহজলভ্যকরণ এবং অদক্ষ ও আধাদক্ষ জনগোষ্ঠির জন্য উচ্চমানের দক্ষতা সম্পন্ন টাস্কফোর্স গঠনের ওপর গুরুত্ব দেন।
প্রতিবছর ২০ লাখ মানুষ বাংলাদেশের কর্মবাজারে প্রবেশ করছে উল্লেখ করে তিনি এই জনগোষ্ঠির কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে বর্তমান সরকার চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের প্রযুক্তিগত সুবিধা কাজে লাগাতে পরিকল্পিত উদ্যোগ গ্রহণ করছে বলে জানান।