দেশে ২৪ ঘন্টায় কোভিড-১৯ এ মৃত্যু ৩৫ জন, সুস্থ ১,৬৬১

345

ঢাকা, ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২০ (বাসস) : দেশে গত ২৪ ঘন্টায় কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়ে ৩৫ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। আর সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৬৬১ জন।
গতকালের চেয়ে আজ ৬ জন বেশি মৃত্যুবরণ করেছেন। গতকাল ২৯ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। এখন পর্যন্ত দেশে এ ভাইরাসে মৃত্যুবরণ করেছেন ৪ হাজার ৪৪৭ জন। করোনা শনাক্তের বিবেচনায় আজ মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৩৭ শতাংশ। গত ৩০ আগস্ট থেকে মৃত্যুর একই হার বিদ্যমান রয়েছে।
আজ স্বাস্থ্য অধিদফতরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে গত ২৪ ঘন্টায় হাসপাতাল এবং বাসায় মিলিয়ে সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৬৬১ জন। গতকালের চেয়ে ৫৫০ জন কম সুস্থ হয়েছেন। গতকাল সুস্থ হয়েছিলেন ২ হাজার ২১১ জন। এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ২ লাখ ১৭ হাজার ৮৫২ জন।
আজ শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৬৭ দশমিক ৩৩ শতাংশ। আগের দিন এই হার ছিল ৬৭ দশমিক ২২ শতাংশ। আগের দিনের চেয়ে আজ সুস্থতার হার দশমিক ১১ শতাংশ বেশি।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘন্টায় ১২ হাজার ৮৪৭ জনের নমুনা পরীক্ষায় ১ হাজার ৯৫০ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। গতকালের চেয়ে আজ ২১ জন বেশি শনাক্ত হয়েছেন। গতকাল ১৩ হাজার ৭৩ জনের নমুনা পরীক্ষায় শনাক্ত হয়েছিলেন ১ হাজার ৯২৯ জন। গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৫ দশমিক ১৮ শতাংশ। আগের দিন এ হার ছিল ১৪ দশমিক ৭৬ শতাংশ। আগের দিনের চেয়ে আজ শনাক্তের হার দশমিক ৪২ শতাংশ বেশি।
দেশে এ পর্যন্ত মোট ১৬ লাখ ১৭ হাজার ৯৫৮ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৩ লাখ ২৩ হাজার ৫৬৫ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। মোট পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ২০ শতাংশ। গতকাল এই হার ছিল ২০ দশমিক ০৪ শতাংশ।
বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, ‘করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ১২ হাজার ৩১৮ জনের। আগের দিন সংগ্রহ করা হয়েছিল ১৩ হাজার ৩৬৯ জনের। গতকালের চেয়ে আজ ১ হাজার ৫১টি নমুনা কম সংগ্রহ করা হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় দেশের ৯৩টি পরীক্ষাগারে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১২ হাজার ৮৪৭ জনের। আগের দিন নমুনা পরীক্ষা হয়েছিল ১৩ হাজার ৭৩ জনের। গত ২৪ ঘন্টায় আগের দিনের চেয়ে ২২৬টি কম নমুনা পরীক্ষা হয়েছে।’
মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে ২৫ জন পুরুষ এবং ১০ জন নারী। এখন পর্যন্ত পুরুষ ৩ হাজার ৪৭৯ জন; ৭৮ দশমিক ২৩ শতাংশ এবং নারী মৃত্যুবরণ করেছেন ৯৬৮ জন; ২১ দশমিক ৭৭ শতাংশ। ২৪ ঘন্টায় হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেছেন ৩৪ জন এবং বাড়িতে মারা গেছেন ১ জন।
মৃত্যুবরণকারী ৩৫ জনের বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায় ষাটোর্ধ্ব ২৫ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ৫ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ২ জন এবং ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ৩ জন রয়েছেন। এখন পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, শূন্য থেকে ১০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ১৯ জন; যা দশমিক ৪৩ শতংশ। ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৩৭ জন; যা দশমিক ৮৩ শতাংশ। ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ১০৫ জন; যা ২ দশমিক ৩৬ শতাংশ। ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ২৭০ জন; যা ৬ দশমিক ০৭ শতাংশ। ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৫৮৭ জন; যা ১৩ দশমিক ২০ শতাংশ। ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ১ হাজার ২১৩ জন; যা ২৭ দশমিক ২৮ শতাংশ এবং ৬০ বছরের বেশি বয়সের রয়েছেন ২ হাজার ২১৬ জন; যা ৪৯ দশমিক ৮৩ শতাংশ।
বিভাগ বিশ্লেষণে দেখা যায়, মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে ঢাকা বিভাগে ২০ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৪ জন, খুলনা বিভাগে ৬ জন, বরিশাল, সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগে ১ জন করে এবং রংপুর বিভাগে ২ জন রয়েছেন। এ পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের বিভাগভিত্তিক বিশ্লেষণে ঢাকা বিভাগে মারা গেছেন ২ হাজার ১৫৪ জন; যা ৪৮ দশমিক ৪৪ শতাংশ। চট্টগ্রাম বিভাগে ৯৫৬ জন; যা ২১ দশমিক ৫০ শতাংশ। রাজশাহী বিভাগে ২৯৫ জন; যা ৬ দশমিক ৬৩ শতাংশ। খুলনা বিভাগে ৩৭১ জন; যা ৮ দশমিক ৩৪ শতাংশ। বরিশাল বিভাগে ১৭৩ জন; যা ৩ দশমিক ৮৯ শতাংশ। সিলেট বিভাগে ১৯৮ জন; যা ৪ দশমিক ৪৫ শতাংশ। রংপুর বিভাগে ২০৪ জন; যা ৪ দশমিক ৫৯ শতাংশ এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ৯৬ জন; যা ২ দশমিক ১৬ শতাংশ।
ঢাকা মহানগরীতে কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৬ হাজার ২৬৬টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তি রোগীর সংখ্যা ২ হাজার ১২১ জন ও শয্যা খালি আছে ৪ হাজার ১৪৫টি। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৩১০টি, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি রোগী আছে ২০৪ জন ও শয্যা খালি আছে ১০৬টি। চট্টগ্রাম মহানগরীতে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৭৮২টি, ভর্তিকৃত রোগী ১৬৪ জন ও শয্যা খালি আছে ৬১৮টি। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৩৯টি, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি আছে ১৬ জন ও শয্যা খালি আছে ২৩টি। সারাদেশে অন্যান্য হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৭ হাজার ৪২৬টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগী ১ হাজার ৫৫৪ জন ও শয্যা খালি আছে ৫ হাজার ৮৭২টি এবং আইসিইউ শয্যা রয়েছে ২০১টি ও আইসিইউ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগীর সংখ্যা ৯৮ জন ও শয্যা খালি আছে ১০৩টি । সারাদেশে হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ১৪ হাজার ৪৭৪টি, রোগী ভর্তি আছে ৩ হাজার ৮৩৯ জন এবং শয্যা খালি আছে ১০ হাজার ৬৩৫টি। সারাদেশে আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৫৫০টি, রোগী ভর্তি আছে ৩১৮ জন এবং খালি আছে ২৩২টি। সারাদেশে অক্সিজেন সিলিন্ডারের সংখ্যা ১৩ হাজার ১১টি। সারাদেশে হাই ফ্লো নেজাল ক্যানেলা সংখ্যা ৪৯০টি এবং অক্সিজেন কনসেনট্রেটর ১৮০টি।
০১৩১৩-৭৯১১৩০, ০১৩১৩-৭৯১১৩৮, ০১৩১৩৭৯১১৩৯ এবং ০১৩১৩৭৯১১৪০ এই নম্বরগুলো থেকে হাসপাতালের সকল তথ্য পাওয়া যাবে। কোন হাসপাতালে কতটি শয্যা খালি আছে। কত রোগী ভর্তি ও কতজন ছাড় পেয়েছেন এবং আইসিইউ শয্যা খালি আছে কি না এই ফোন নম্বরগুলোতে ফোন করে জানা যাবে। এছাড়াwww.dghs.gov.bd এর CORONA কর্ণারে “করোনা বিষয়ক অভিযোগ প্রেরণ” লিঙ্ক অথবা http:/app.dghs.gov.bd/covid19-complain লিঙ্ক ব্যবহার করে করোনা বিষয়ক যেকোন অভিযোগ পাঠানো যাবে।
গত ২৪ ঘন্টায় সুস্থ হওয়া ৯৯৩ জনের মধ্যে ঢাকা বিভাগে রয়েছেন ১ হাজার ১০৫ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৩১৮ জন, রংপুর বিভাগে ২২ জন, খুলনা বিভাগে ৯৯ জন, বরিশাল বিভাগে ২০ জন, রাজশাহী বিভাগে ৮৬ জন, সিলেট বিভাগে ১২১ জন এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ২ জন রয়েছেন।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়, গত ২৪ ঘন্টায় আইসোলেশনে রাখা হয়েছে ৩৭৮ জনকে। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ১৯ হাজার ৮২৩ জন। ২৪ ঘন্টায় আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন ২৩১ জন, এখন পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন ৫৪ হাজার ১২১ জন। এখন পর্যন্ত আইসোলেশন করা হয়েছে ৭৩ হাজার ৯৪৪ জনকে। প্রাতিষ্ঠানিক ও হোম কোয়ারেন্টিন মিলে ২৪ ঘন্টায় কোয়ারেন্টিন করা হয়েছে ১ হাজার জনকে। কোয়ারেন্টিন থেকে গত ২৪ ঘন্টায় ছাড় পেয়েছেন ১ হাজার ২১৮ জন, এখন পর্যন্ত ছাড়া পেয়েছেন ৪ লাখ ৫১ হাজার ৫৮৭ জন। এখন পর্যন্ত কোয়ারেন্টিন করা হয়েছে ৫ লাখ ৩ হাজার ৮৪১ জনকে। বর্তমানে কোয়ারেন্টিনে আছেন ৫২ হাজার ২৫৪ জন।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, গত ২৪ ঘন্টায় স্বাস্থ্য বাতায়ন ১৬২৬৩ হটলাইন নম্বরে ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৯ হাজার ৪১৪টি, ৩৩৩ এই নম্বরে ২৪ ঘন্টায় ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৪০ হাজার ২৪০টি এবং আইইডিসিআর’র হটলাইন ১০৬৫৫, এই নম্বরে ফোন এসেছে গত ২৪ ঘন্টায় ২৯৬টি। সব মিলিয়ে ২৪ ঘন্টায় ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৪৯ হাজার ৯৫৪টি। এ পর্যন্ত হটলাইনে ফোনকল এসেছে ১ কোটি ৫০৫টি।
করোনাভাইরাস চিকিৎসা বিষয়ে এ পর্যন্ত ১৬ হাজার ৪৯৮ জন চিকিৎসক অনলাইনে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন। এদের মধ্যে ৪ হাজার ২১৭ জন স্বাস্থ্য বাতায়ন ও আইইডিসিয়ার’র হটলাইনগুলোতে স্বেচ্ছাভিত্তিতে সপ্তাহে ৭ দিন ২৪ ঘন্টা জনগণকে চিকিৎসাসেবা ও পরামর্শ দিচ্ছেন। এছাড়া ২৪ ঘন্টায় কোভিড বিষয়ক টেলিমেডিসিন সেবা গ্রহণ করেছেন ৪ হাজার ১১৯ জন। এ পর্যন্ত শুধু কোভিড বিষয়ে স্বাস্থ্য সেবা গ্রহণ করেছেন ২ লাখ ৯৮ হাজার ৮৩৫ জন। প্রতিদিন ৩৫ জন চিকিৎসক ও ১০ জন স্বাস্থ্য তথ্যকর্মকর্তা দুই শিফটে মোট ৯০ জন টেলিমেডিসিন সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, দেশের বিমানবন্দর, নৌ, সমুদ্রবন্দর ও স্থলবন্দর দিয়ে গত ২৪ ঘন্টায় ৩ হাজার ৬৯৯ জনসহ সর্বমোট বাংলাদেশে আগত ৮ লাখ ৯৪ হাজার ২২০ জনকে স্কিনিং করা হয়েছে।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পরিস্থিতি তুলে ধরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় করোনায় এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ৪৪ লাখ ৯৯ হাজার ৭৮৮ জন এবং এ পর্যন্ত মৃত্যুবরণ করেছেন ৮০ হাজার ৯৬৮ জন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী সারাবিশ্বে এ পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ২ কোটি ৬১ লাখ ৭১ হাজার ১১২ জন এবং এ পর্যন্ত ৮ লাখ ৬৫ হাজার ১৫৪ জন মৃত্যুবরণ করেছেন।