হাফিজ-হায়দার-রিয়াজের নৈপুণ্যে জয় দিয়ে সফর শেষ করলো পাকিস্তান

252

ম্যানচেষ্টার, ২ সেপ্টেম্বর ২০২০ (বাসস) : অভিজ্ঞ মোহাম্মদ হাফিজের দুর্দান্ত ব্যাটিং-এর সাথে তরুণ হায়দার আলীর অভিষেক হাফ-সেঞ্চুরি ও শেষদিকে পেসার ওয়াহাব রিয়াজের বুদ্ধিদীপ্ত বোলিংএ ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ম্যাচের টি-২০ সিরিজ সমতায় শেষ করলো সফরকারী পাকিস্তান। একই সঙ্গে জয় দিয়ে ইংল্যান্ড সফর শেষ করলো উপমহগাদেশের দলটি। গতরাতে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ টি-২০ ম্যাচে ইংলিশদের ৫ রানে হারিয়েছে পাকিস্তান। ফলে তিন ম্যাচের সিরিজ ১-১ সমতায় শেষ হয়। প্রথম ম্যাচ বৃষ্টিতে ভেসে গেলেও, দ্বিতীয়টি ৫ উইকেটে জিতেছিলো ইংলিশরা।
ম্যানচেষ্টারে টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিং করতে নামে ইংল্যান্ড। কারন আগের ম্যাচে রান তাড়া করে জয় পেয়েছিলো তারা। ব্যাট হাতে নেমে ৩২ রানের মধ্যে পাকিস্তানের দুই ওপেনারের বিদায় ঘটে। ফখর জামান ১ ও অধিনায়ক বাবর ২১ রান করে ফিরেন।
এরপর জুটি বাঁধেন গত অনুর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে খেলা হায়দার ও হাফিজ। অভিষেক ম্যাচে ব্যাট হাতে নিজেকে রঙ্গীন করেছেন হায়দার। ইংল্যান্ড বোলারদের উপর চড়াও হন তিনি। তাকে সঙ্গ দিচ্ছিলেন হাফিজ। পরবর্তীতে পাল্লা দিয়ে রান তুলতে থাকেন তারা।
২৮ বলে হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন হায়দার। টি-২০ ক্রিকেটে অভিষেকেই প্রথম হাফ-সেঞ্চুরি করা প্রথম পাকিস্তানী খেলোয়াড় বনে যান তিনি।
হাফ-সেঞ্চুরির পর হায়দারকে বেশি দূর যেতে দেননি ইংল্যান্ডের পেসার ক্রিস জর্ডান। ৫টি চার ও ২টি ছক্কায় ৩৩ বলে ৫৪ রানেন আউট হন তিনি। তৃতীয় উইকেট জুটিতে ৬১ বলে ১০০ রান যোগ করেন হায়দার-হাফিজ।
হায়দার ফিরে গেলেও বড় সংগ্রহ এনে দিয়েছেন আগের ম্যাচে ৩৬ বলে ৬৯ রান করা হাফিজ। টি-২০ ক্যারিয়ারের ১৩তম হাফ-সেঞ্চুরির স্বাদ নিয়ে ৮৬ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি। তার ৫২ বলের ইনিংসে ৪টি চার ও ৬টি ছক্কা ছিলো। ফলে ২০ ওভারে ৪ উইকেটে ১৯০ রানের সংগ্রহ পায় পাকিস্তান। ইংল্যান্ডের জর্ডান ২৯ রানে ২ উইকেট নেন।
আগের ম্যাচে ১৯৬ রানের টার্গেট স্পর্শ করেছিলো ইংল্যান্ড। এবারও বড় টার্গেট স্পর্শ করার স্বপ্ন দেখছিলো তারা। কিন্তু জয়ের জন্য ১৯১ রানের বড় লক্ষ্যে পৌঁছাতে যেরকম শুরুর প্রয়োজন ছিলো, তা হয়নি স্বাগতিকদের। ২৬ রানের মধ্যে জনি বেয়ারস্টো ও ডেভিড মালান ফিরে যান। বেয়ারস্টো শুন্য ও মালান ৭ রান করেন।
শুরুর ধাক্কা সামাল দেয়ার চেষ্টা করেন আরেক ওপেনার টম ব্যান্টন ও অধিনায়ক ইয়োইন মরগান। ২১ বলে ৩৯ রানের জুটি গড়ে বিচ্ছিন্ন হন তারা। দলীয় ৬৫ ও ৬৯ রানে ফিরেন দু’জনে। এতে ম্যাচ থেকে ছিটকে পড়ে ইংল্যান্ড। ব্যান্টন ৪৬ ও মরগান ১০ রান করে ফিরেন।
এই অবস্থায় দলকে লড়াইয়ে ফেরানোর চেষ্টা করেন মঈন আলি ও স্যাম বিলিংস। তবে মঈন ব্যক্তিগত ৭ রানে সরফরাজের কল্যাণে জীবন পান। জীবন পেয়ে বিধ্বংসী হয়ে উঠেন তিনি। এতে লড়াইয়ে ফিরে ইংল্যান্ড।
১৫তম ওভারে মঈন ও বিলিংসের জুটি ভাঙ্গেন রিয়াজ। ২৪ বলে ২৬ রান করেন বিলিংস। বিলিংস ফিরে গেলেও, ব্যাট হাতে মারমুখী মেজাজেই ছিলেন মঈন। তাই শেষ ৩ ওভারে জয়ের সমীকরন ৩০এ নামিয়ে আনেন তিনি। এরপর ২ ওভারে ২০এর লক্ষ্য ছিলো ইংল্যান্ডের।
কিন্তু ১৯তম ওভারের প্রথম বলে জর্ডানের রান আউট ও পঞ্চম বলে মঈনকে থামিয়ে পাকিস্তানের জয়ের পথ সহজ করেন রিয়াজ। ৪টি করে চার ও ছক্কায় ৩৩ বলে ৬১ রান করে আউট হন মঈন। শেষ পর্যন্ত ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১৮৫ রান করে ইংল্যান্ড। পাকিস্তানের আফ্রিদি-রিয়াজ ২টি করে উইকেট নেন।
ম্যাচ ও সিরিজ সেরা হন পাকিস্তানের হাফিজ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর (টস-ইংল্যান্ড) :
পাকিস্তান : ১৯০/৪, ২০ ওভার (হাফিজ ৮৬*, হায়দার ৫৪, জর্ডান ২/২৯)।
ইংল্যান্ড : ১৮৫/৮, ২০ ওভারে (মঈন ৬১, ব্যান্টন ৪৬, রিয়াজ ২/২৬)।
ফল : পাকিস্তান ৫ রানে জয়ী।
ম্যাচ সেরা : মোহাম্মদ হাফিজ (পাকিস্তান)।
সিরিজ সেরা : মোহাম্মদ হাফিজ (পাকিস্তান)।
সিরিজ : তিন ম্যাচের সিরিজ ১-১ সমতায় শেষ।