করোনায় ২৪ ঘন্টায় মারা গেছেন ৩৫ জন, সুস্থ ২,৮৩৯

494

ঢাকা, ২ সেপ্টেম্বর , ২০২০ (বাসস) : দেশে করোনাভাইরাস শনাক্তের ১৭৯তম দিনে ২৪ ঘন্টায় এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ৩৫ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। আর সুস্থ হয়েছেন ২ হাজার ৮৩৯ জন।
গতকালও ৩৫ মৃত্যুবরণ করেছেন। এখন পর্যন্ত দেশে এ ভাইরাসে মৃত্যুবরণ করেছেন ৪ হাজার ৩৫১ জন।করোনা শনাক্তের বিবেচনায় আজ মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৩৭ শতাংশ। গত ৩০ আগস্ট থেকে মৃত্যুর একই হার বিদ্যমান।
আজ স্বাস্থ্য অধিদফতরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত এই সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে গত ২৪ ঘন্টায় হাসপাতাল এবং বাসায় মিলিয়ে সুস্থ হয়েছেন ২ হাজার ৮৩৯ জন। গতকালের চেয়ে ৪৫১ জন কম সুস্থ হয়েছেন। গতকাল সুস্থ হয়েছিলেন ৩ হাজার ২৯০ জন। এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ২ লাখ ১১ হাজার ১৬ জন।
আজ শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৬৬ দশমিক ৪৬ শতাংশ। আগের দিন এই হার ছিল ৬৬ দশমিক ১০ শতাংশ। আগের দিনের চেয়ে আজ সুস্থতার হার শূন্য দশমিক ৩৬ শতাংশ বেশি।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘন্টায় ১৫ হাজার ২০৪ জনের নমুনা পরীক্ষায় ২ হাজার ৫৮২ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। গতকালের চেয়ে আজ ৬৩২ জন বেশি শনাক্ত হয়েছেন। গতকাল ১২ হাজার ২০৯ জনের নমুনা পরীক্ষায় শনাক্ত হয়েছিলেন ১ হাজার ৯৫০ জন। গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৬ দশমিক ৯৮ শতাংশ। আগের দিন এ হার ছিল ১৫ দশমিক ৯৭ শতাংশ। আগের দিনের চেয়ে আজ শনাক্তের হার ১ দশমিক শূন্য ১ শতাংশ বেশি।
দেশে এ পর্যন্ত মোট ১৫ লাখ ৭৭ হাজার ৬১৬ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৩ লাখ ১৭ হাজার ৫২৮ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। মোট পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ২০ দশমিক ১৩ শতাংশ। গতকাল এই হার ছিল ২০ দশমিক ১৬ শতাংশ।
বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, ‘করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ১৫ হাজার ৭৩৪ জনের। আগের দিন সংগ্রহ করা হয়েছিল ১১ হাজার ৯৮১ জনের। গতকালের চেয়ে আজ ৩ হাজার ৭৫৩টি নমুনা বেশি সংগ্রহ করা হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় দেশের ৯৩টি পরীক্ষাগারে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১৫ হাজার ২০৪ জনের। আগের দিন নমুনা পরীক্ষা হয়েছিল ১২ হাজার ২০৯ জনের। গত ২৪ ঘন্টায় আগের দিনের চেয়ে ২ হাজার ৯৯৫টি বেশি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে।
২৪ ঘণ্টায় মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে ২৩ জন পুরুষ এবং ১২ জন নারী। এখন পর্যন্ত ৩ হাজার ৪০৮ জন পুরুষ; ৭৮ দশমিক ৩৩ শতাংশ এবং ৯৪৩ জন নারী; ২১ দশমিক ৬৭ শতাংশ মৃত্যুবরণ করেছেন।
২৪ ঘণ্টায় মৃত্যুবরণকারীদের বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, ষাটোর্ধ্ব ২৪ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ৭ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ৩ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ১ জন রয়েছেন। এখন পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, শূন্য থেকে ১০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ১৯ জন; যা শূন্য দশমিক ৪৪ শতংশ। ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৩৬ জন; যা শূন্য দশমিক ৮৩ শতাংশ। ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ১০৫ জন; যা ২ দশমিক ৪১ শতাংশ। ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ২৬৪ জন; যা ৬ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ। ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৫৮০ জন; যা ১৩ দশমিক ৩৩ শতাংশ। ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ১ হাজার ১৮৯ জন; যা ২৭ দশমিক ৩৩ শতাংশ এবং ৬০ বছরের বেশি বয়সের রয়েছেন ২ হাজার ১৫৮ জন; যা ৪৯ দশমিক ৬০ শতাংশ।
২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণকারীদের বিভাগ বিশ্লেষণে দেখা যায়, ঢাকা বিভাগে ২২ জন, চট্টগ্রামে ৪ জন, রাজশাহীতে ১ জন, খুলনায় ৪ জন, বরিশালে ১ জন, সিলেটে ২ জন এবং ময়মনসিংহে ১ জন রয়েছেন। এরা সবাই হাসপাতালে মারা গেছেন। এ পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের বিভাগভিত্তিক বিশ্লেষণে ঢাকা বিভাগে মারা গেছেন ২ হাজার ১০৫ জন; যা ৪৮ দশমিক ২৮ শতাংশ। চট্টগ্রাম বিভাগে ৯৪৩ জন; যা ২১ দশমিক ৬৭ শতাংশ। রাজশাহী বিভাগে ২৯১ জন; যা ৬ দশমিক ৬৯ শতাংশ। খুলনা বিভাগে ৩৬৩ জন; যা ৮ দশমিক ৩৪ শতাংশ। বরিশাল বিভাগে ১৬৯ জন; যা ৩ দশমিক ৮৮ শতাংশ। সিলেট বিভাগে ১৯৪ জন; যা ৪ দশমিক ৪৬ শতাংশ। রংপুর বিভাগে ১৯৪ জন; যা ৪ দশমিক ৪৬ শতাংশ এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ৯২ জন; যা ২ দশমিক ১১ শতাংশ।
গত ২৪ ঘন্টায় সুস্থ হওয়া ২ হাজার ৮৩৯ জনের মধ্যে ঢাকা বিভাগে রয়েছেন ১ হাজার ৫৮০ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৫২৫ জন, রংপুর বিভাগে ১৬৮ জন, খুলনা বিভাগে ১৬২ জন, বরিশাল বিভাগে ৭২ জন, রাজশাহী বিভাগে ১৫৪ জন, সিলেট বিভাগে ১৬৫ জন এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ১৩ জন রয়েছেন।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে রাখা হয়েছে ৫৮৯ জনকে। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ১৯ হাজার ৯৫৪ জন। আইসোলেশন থেকে ২৪ ঘণ্টায় ৫৭২ জন এবং এখন পর্যন্ত ৫২ হাজার ৫৯৮ জন ছাড় পেয়েছেন। এখন পর্যন্ত আইসোলেশন করা হয়েছে ৭২ হাজার ৫৫২ জনকে।
প্রাতিষ্ঠানিক ও হোম কোয়ারেন্টিন মিলে ২৪ ঘণ্টায় কোয়ারেন্টিন করা হয়েছে ২ হাজার ৩ জনকে। কোয়ারেন্টিন থেকে গত ২৪ ঘণ্টায় এক হাজার ৯৩৩ জন এবং এখন পর্যন্ত ৪ লাখ ৪৭ হাজার ৩৭ জন ছাড় পেয়েছেন। এখন পর্যন্ত কোয়ারেন্টিন করা হয়েছে ৪ লাখ ৯৯ হাজার ১২২ জনকে। বর্তমানে কোয়ারেন্টিনে আছেন ৫২ হাজার ৮৫ জন।
ঢাকা মহানগরীতে কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৬ হাজার ২৬৬টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তি রোগীর সংখ্যা ২ হাজার ১৩২ জন ও শয্যা খালি আছে ৪ হাজার ১৩৪টি। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৩১০টি, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি রোগী আছে ১৮৫ জন ও শয্যা খালি আছে ১২৫টি। চট্টগ্রাম মহানগরীতে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৭৮২টি, ভর্তিকৃত রোগী ১৫২ জন ও শয্যা খালি আছে ৬৩০টি। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৩৯টি, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি আছে ১৯ জন ও শয্যা খালি আছে ২০টি। সারাদেশে অন্যান্য হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৭ হাজার ৪২৬টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগী ১ হাজার ৫৬১ জন ও শয্যা খালি আছে ৫ হাজার ৮৬৫টি এবং আইসিইউ শয্যা রয়েছে ২০১টি ও আইসিইউ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগীর সংখ্যা ১০২ জন ও শয্যা খালি আছে ৯৯টি । সারাদেশে হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ১৪ হাজার ৪৭৪টি, রোগী ভর্তি আছে ৩ হাজার ৮৪৫ জন এবং শয্যা খালি আছে ১০ হাজার ৬২৯টি। সারাদেশে আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৫৫০টি, রোগী ভর্তি আছে ৩০৬ জন এবং খালি আছে ২৪৪টি। সারাদেশে অক্সিজেন সিলিন্ডারের সংখ্যা ১৩ হাজার ১১টি। সারাদেশে হাই ফ্লো নেজাল ক্যানেলা সংখ্যা ৪৮২টি এবং অক্সিজেন কনসেনট্রেটর ১৮০টি।
০১৩১৩-৭৯১১৩০, ০১৩১৩-৭৯১১৩৮, ০১৩১৩৭৯১১৩৯ এবং ০১৩১৩৭৯১১৪০ এই নম্বরগুলো থেকে হাসপাতালের সকল তথ্য পাওয়া যাবে। কোন হাসপাতালে কতটি শয্যা খালি আছে। কত রোগী ভর্তি ও কতজন ছাড় পেয়েছেন এবং আইসিইউ শয্যা খালি আছে কি না এই ফোন নম্বরগুলোতে ফোন করে জানা যাবে। এছাড়া িি.িফমযং.মড়া.নফ এর ঈঙজঙঘঅ কর্ণারে “করোনা বিষয়ক অভিযোগ প্রেরণ” লিঙ্ক অথবা যঃঃঢ়:/ধঢ়ঢ়.ফমযং.মড়া.নফ/পড়ারফ১৯-পড়সঢ়ষধরহ লিঙ্ক ব্যবহার করে করোনা বিষয়ক যেকোন অভিযোগ পাঠানো যাবে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, গত ২৪ ঘন্টায় স্বাস্থ্য বাতায়ন ১৬২৬৩ হটলাইন নম্বরে ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৯ হাজার ৫৮৫টি, ৩৩৩ এই নম্বরে ২৪ ঘন্টায় ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৪৭ হাজার ৬৩১টি এবং আইইডিসিআর’র হটলাইন ১০৬৫৫, এই নম্বরে ফোন এসেছে গত ২৪ ঘন্টায় ২৯৭টি। সব মিলিয়ে ২৪ ঘন্টায় ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৫৭ হাজার ৫১৩টি। এ পর্যন্ত হটলাইনে ফোনকল এসেছে ১ কোটি ৯৮ লাখ ৪৭ হাজার ৮১৮টি।
করোনাভাইরাস চিকিৎসা বিষয়ে এ পর্যন্ত ১৬ হাজার ৪৯৮ জন চিকিৎসক অনলাইনে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন। এদের মধ্যে ৪ হাজার ২১৭ জন স্বাস্থ্য বাতায়ন ও আইইডিসিয়ার’র হটলাইনগুলোতে স্বেচ্ছাভিত্তিতে সপ্তাহে ৭ দিন ২৪ ঘন্টা জনগণকে চিকিৎসাসেবা ও পরামর্শ দিচ্ছেন। এছাড়া ২৪ ঘন্টায় কোভিড বিষয়ক টেলিমেডিসিন সেবা গ্রহণ করেছেন ৫ হাজার ৩৮৫ জন। এ পর্যন্ত শুধু কোভিড বিষয়ে স্বাস্থ্য সেবা গ্রহণ করেছেন ২ লাখ ৮৪ হাজার ৪৭ জন। প্রতিদিন ৩৫ জন চিকিৎসক ও ১০ জন স্বাস্থ্য তথ্যকর্মকর্তা দুই শিফটে মোট ৯০ জন টেলিমেডিসিন সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, দেশের বিমানবন্দর, নৌ, সমুদ্রবন্দর ও স্থলবন্দর দিয়ে গত ২৪ ঘন্টায় ৩ হাজার ১৮০ জনসহ সর্বমোট বাংলাদেশে আগত ৮ লাখ ৮৩ হাজার ৬০০ জনকে স্কিনিং করা হয়েছে।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পরিস্থিতি তুলে ধরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় করোনায় এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ৪২ লাখ ৩৩ হাজার ৮২৭ জন এবং এ পর্যন্ত মৃত্যুবরণ করেছেন ৭৭ হাজার ৩১৮ জন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী সারাবিশ্বে এ পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ২ কোটি ৫৩ লাখ ২৭ হাজার ৯৮ জন এবং এ পর্যন্ত ৮ লাখ ৪৮ হাজার ২৫৫ জন মৃত্যুবরণ করেছেন।