বাসস প্রধানমন্ত্রী-৪ (প্রথম কিস্তি) : বিএনপি ১৯৭৫ সালের হত্যাকান্ডে জিয়ার সম্পৃক্ততা অস্বীকার করতে পারে না : প্রধানমন্ত্রী

238

বাসস প্রধানমন্ত্রী-৪ (প্রথম কিস্তি)
প্রধানমন্ত্রী-শোক দিবস
বিএনপি ১৯৭৫ সালের হত্যাকান্ডে জিয়ার সম্পৃক্ততা অস্বীকার করতে পারে না : প্রধানমন্ত্রী
ঢাকা, ৩১ আগস্ট, ২০২০ (বাসস) : প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকারীরা স্বীকার করেছে যে, এই বর্বরোচিত ঘটনায় জিয়া তাদের সম্পূর্ণ সমর্থন দিয়েছিলেন। তাই বিএনপি ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট হত্যাকান্ডের সাথে জিয়াউর রহমানের সম্পৃক্ততা অস্বীকার করতে পারে না।
তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারী কর্নেল ফারুক ও রশিদ বিবিসিকে দেয়া সাক্ষাতকারে বলেছে, জিয়া ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট হত্যাকান্ডের আগে ‘গো এ্যাহেড’ বলে তাদের সব ধরনের সহায়তা দিয়েছিলেন। তাই বিএনপি জাতির পিতার হত্যাকান্ডে জিয়ার সম্পৃক্ততাকে অস্বীকার করতে পারে না।’
প্রধানমন্ত্রী আজ তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, বিএনপি এই ঘটনা থেকে তাদের দলীয় নেতাকে যতই আড়াল করার চেষ্টা করুক না কেন, সত্যকে কখনো দাবিয়ে রাখা যায় না।
বাংলাদেশ ছাত্রলীগ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৫তম শাহাদাৎ বার্ষিকী উপলক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু এভিন্যুস্থ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই আলোচনা সভার আয়োজন করে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এছাড়াও অন্যান্য হত্যাকারীদের স্বীকারোক্তিমূলক বক্তব্যে এটা বেরিয়ে এসেছে যে জিয়াও তাদের সাথে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট হত্যাকান্ডের ষড়যন্ত্রে জড়িত ছিলেন।
বঙ্গবন্ধু হত্যাকা-ে জিয়াউর রহমান সবচেয়ে বেশি লাভবান হয়েছেন উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, ‘১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের পর খন্দকার মোশতাক অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে জিয়াউর রহমানকে সেনা প্রধান করে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, একটি জাতিকে ধ্বংস করার জন্য যা প্রয়োজন জিয়া তার সবকিছুই করে গেছেন।
তিনি বলেন, ‘জিয়া মেধাবী ছাত্রদের হাতে অস্ত্র ও অর্থ তুলে দিয়ে ছাত্র সমাজকে ধ্বংস করেছেন। তিনি ছাত্রদের নিয়ে ‘হিলফুলফুজুলে’ প্রমোদ ভ্রমণে বের হন। বঙ্গবন্ধু এই জাহাজটিকে পবিত্র হজ পালনের জন্য কিনেছিলেন।’
বিএনপির ছাত্র সংগঠন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের উদাহরণ টেনে শেখ হাসিনা বলেন, স্বামীর পদাঙ্ক অনুসরণ করে খালেদা জিয়াও তার নিজ স্বার্থে ছাত্রদের ব্যবহার করেছেন।
এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ‘আমি ছাত্রদের হাতে কলম ও খাতা তুলে দিয়েছিলাম। কারণ আমি জানতাম যে একটি স্বাধীন দেশে ছাত্রদের সুনাগরিক হওয়া অত্যন্ত জরুরি।’
বাংলাদেশের বিগত সকল আন্দোলনে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের গৌরবময় অধ্যায়ের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া সংগঠনটি বিগত সকল আন্দোলন সংগ্রামে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু ১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। ওই সময়ে পাকিস্তানী শাসক গোষ্ঠী আমাদের মুখের ভাষা কেড়ে নিতে চেয়েছিল। ছাত্রলীগ ভাষা আন্দোলনে সম্পূর্ণ সমর্থন দিয়েছিল ও অংশ নিয়েছিল।’
শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধু ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের সাধারণ মানুষকে জয় বাংলা স্লোগানে উদ্ভুদ্ধ করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। তিনি সাধারণ মানুষের কাছে ছয় দফা তুলে ধরার জন্য এবং আন্দোলনের পক্ষে জনমত গড়ে তুলতে ও প্রস্তাবিত স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা সম্পর্কে জনসাধারণের মতামত জানতে তাদের প্রতি নির্দেশ দিয়েছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের বঙ্গবন্ধুর আদর্শ মেনে চলার নির্দেশ দিয়ে বলেন, ‘জাতির পিতা কখনোই নিজ স্বার্থের কথা চিন্তা করেননি। তিনি সব সময় দেশ ও দেশের জনগণের কল্যাণের কথা ভাবতেন।’
তিনি ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের বঙ্গবন্ধু রচিত ‘আমার দেখা নয়া চীন’, ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ ও ‘কারাগারের রোজনামচা’ পড়ার নির্দেশ দিয়ে বলেন, ‘যদি তোমরা ভাল নেতা হতে চাও, তবে তোমাদের অবশ্যই এই তিনিটি বই পড়ে ভাল রাজনীতি সম্পর্কে জানতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী ছাত্রলীগ নেতাদের বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে পাকিস্তানী গোয়েন্দা প্রতিবেদন পড়তে নির্দেশ দেন। এ থেকে তারা বঙ্গবন্ধুর প্রকৃত ইতিহাস ও তাঁর কাজ সম্পর্কে জানতে পারবে।
তিনি মানুষের জন্য আত্মউৎসর্গকারী ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান। ছাত্রলীগ নেতা কর্মীদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কোভিড-১৯ রোগে যারা মারা গেছে, তাদের জানাজা ও দাফন করানোর কথা উল্লেখ করেন।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়ের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টচার্য অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী ছাত্রলীগের প্রকাশনা ‘মাতৃভূমি’র মোড়ক উন্মোচন করেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে ১৫ আগস্ট হত্যাকান্ডে শহীদ বঙ্গবন্ধু ও অন্যান্যদের স্মৃতির প্রতি সম্মান জানিয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।
চলবে/বাসস/এএইচজে/অনুবাদ-কেএআর/২১৫৭/এবিএইচ