বাসস প্রধানমন্ত্রী-১ (তৃতীয় কিস্তি) : ১৯৭৫-এর ১৫ আগস্ট বাংলাদেশে কারবালার বিয়োগান্তক ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটে : প্রধানমন্ত্রী

181

বাসস প্রধানমন্ত্রী-১ (তৃতীয় কিস্তি)
শেখ হাসিনা-আশুরা
১৯৭৫-এর ১৫ আগস্ট বাংলাদেশে কারবালার বিয়োগান্তক ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটে : প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানের জেলে আটক থাকাকালে বঙ্গবন্ধুর ওজন ৪০ পাউন্ড কমে গিয়েছিল। স্বাধীনতা লাভের পর ১০ জানুয়ারি যখন তিনি দেশে ফিরে এলেন, তখন তিনি একদম শুকনো হয়ে গিয়েছিলেন।
তিনি আরো বলেন, ‘ওই অবস্থায় থাকাকালে তিনি জানতেন যে, দেশ স্বাধীন হবে এবং তিনি সেখানে এতটুকুও মানসিক শক্তি হারাননি। জাতির পিতা তাঁর জীবনের ঝুঁকি নিয়েছিলেন এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও তাঁর জনগণের মুক্তির জন্য সকল কষ্ট সহ্য করেছিলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধু সব দুঃখ-কষ্ট বরণ করে নেন, কিন্তু তাঁর মুক্তির বিনিময়ে তবুও কোন শর্ত মেনে নেননি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা যখন জেলখানা থেকে মুক্তি পেলেন, তখন তিনি প্রথমে লন্ডন যান এবং সেখানে গিয়ে তাঁর বক্তব্য রাখেন।
শেখ হাসিনা বলেন, দেশে ফিরে আসার পর বঙ্গবন্ধু যুদ্ধ-বিধ্বস্ত দেশের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। ১০ জানুয়ারির ঐতিহাসিক ভাষণে তিনি ঘোষণা করেন কোন নীতি ও আদর্শেও ভিত্তিতে এবং কিভাবে দেশ পরিচালিত হবে। তিনি সমগ্র দেশের জন্য একটি রূপরেখাও তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশ গঠনের সকল ক্ষেত্রে ভিত গড়ে দিয়েছিলেন। এছাড়া, তিনি খাদ্য, বাসস্থান ও স্বাস্থ্যসেবাসহ সাধারণ মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণের মাধ্যমে তাদের মুখে হাসি ফুটানোর জন্য প্রয়োজনীয় সকল আইন প্রণয়ন করেছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু সরকারের আমলেই বাংলাদেশ সকল আন্তর্জাতিক সংস্থার সদস্যপদ লাভ করে।
তিনি আরো বলেন, ‘এতো অল্প সময়ের মধ্যে বিশ্বের অন্য কোন দেশ এত বেশি কিছু অর্জন করতে পারেনি। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বের কারণেই তা সম্ভব হয়েছিল।
এক শ্রেণীর লোক সব সময় গণতন্ত্রের ব্যাপারে প্রশ্ন তোলেন তাদের কঠোর সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা সংবিধান স্থগিত ও লংঘন করে এবং মার্শাল ল’ জারি করে ক্ষমতা দখল করেছিল, তারা কিভাবে গণতন্ত্র দেবে।
১৯৭৫ পরবর্তী সময়ে ক্ষমতা দখলকারী সামরিক শাসকদের প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, আইয়ুব খান ও ইয়াহিয়া যা করেছিলেন, জিয়াউর রহমান ও এইচ এম এরশাদ সেই একই কাজ করেছেন।
তিনি বলেন, ‘তাদের আমলে গণতন্ত্র শুধু মুখেই শোভা পেত। তখন কি দেশে গণতন্ত্রের চর্চা হতো? যারা মার্শাল ল’ এর মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করে, তারা গণতন্ত্র দিতে পারে না।’
আওয়ামী লীগের সভানেত্রী আরো বলেন, ক্ষমতা দখল করার পর জিয়াউর রহমান আওয়ামী লীগের বহু নেতা-কর্মীকে হত্যা করেন। এছাড়া, তার আমলে একের পর এক ক্যু হয় এবং তিনি এগুলোর মাধ্যমে হাজার হাজার মুক্তিযোদ্ধা সেনা কর্মকর্তাকে হত্যা করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, এভাবে জিয়া দেশে হত্যার রাজনীতি প্রতিষ্ঠিত করেন।
তিনি প্রশ্ন রাখেন, ‘জিয়া বিদেশে বাংলাদেশের মিশনগুলোতে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের নিয়োগ দিয়ে তাদের পুরস্কৃত করেছিলেন। তখন কি গণতন্ত্র ছিল?’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, অনেক বুদ্ধিজীবী ও শিক্ষিত মানুষ রয়েছেন যারা গণতন্ত্র খোঁজেন। যখন জরুরি অবস্থা আরোপ করা হয়েছিল বা সামরিক স্বৈরশাসকরা ক্ষমতা দখল করেছিল, তখন তারা কি এই কাজটি করেছিলেন?’
তিনি বলেন, ‘যখন এ ধরনের (অনির্বাচিত) সরকার ক্ষমতা কুক্ষিগত করেছিল, তখন তারা গণতন্ত্রের স্বাদ পেয়েছিল।’
শেখ হাসিনা আরো বলেন, এই সব লোকেরা সব সময় অনির্বাচিত সরকারের দ্বারা ব্যবহৃত হওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকে। তিনি বলেন, ‘যখন প্রকৃত গণতান্ত্রিক পদ্ধতি বিদ্যমান থাকে, তখন তাদের কোন মূল্য থাকে না।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জনগণের মৌলিক চাহিদা পূরণই একটি সরকারের প্রধান লক্ষ্য, আর একমাত্র গণতান্ত্রিক সরকারের পক্ষেই এটা সম্ভব।’
চলবে/বাসস/এসএইচ/অনুবাদ-কেএটি/২০২২/-শআ