বাজিস-৭ : বগুড়ার হিজড়া জনগোষ্ঠী চাঁদাবাজির পথ থেকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে শুরু করেছে

149

বাজিস-৭
বগুড়া-হিজড়া
বগুড়ার হিজড়া জনগোষ্ঠী চাঁদাবাজির পথ থেকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে শুরু করেছে
বগুড়া, ২৯ জুলাই, ২০১৮ (বাসস) : এক সময় হিজড়ারা দলবদ্ধ হয়ে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বাড়ি বাড়ি গিয়ে চাঁদাবাজি করতো। কারো বাড়িতে সন্তান জন্মালে দলবদ্ধ হয়ে গান গেয়ে টাকা আদায় করতো। তারা এভাবে জীবিকা নির্বাহ করতো। তারা প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণ ও দক্ষতা উন্নয়নের জন্য ৫০ দিনের আর্থসামাজিক প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে ঘৃর্ণিত পথ থেকে সরে এসেছে।
জেলা সমাজসেবা অফিসে উপ-বৃত্তির চেক নিতে আসা উজ্জল হিজড়া , আশা হিজড়া, আনোয়ার হিজড়া, জাহিদ হিজড়াসহ ২০০ জন হিজড়া প্রাথমিক শিক্ষা নিয়ে সমাজে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার স্বপ্ন দেখছে।
জেলার ৪০৩ জন হিজড়ার মধ্যে মাসে ৩শ’ টাকা করে উপ-বৃত্তির টাকা নিয়ে ২০০ জন প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণ করছে। মাসে ৪৫০ টাকা করে উপবৃত্তির টাকা নিয়ে ৩৪ জন মাধ্যমিক শিক্ষা গ্রহণ করছে। মাসে ৬০০ উপবৃত্তি নিয়ে ১১ জন উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা গ্রহণ করছে। মাসে ১০০০ হাজার টাকা করে উপবৃত্তি নিয়ে ৭ জন ব্যাচেলর ডিগ্রি নেয়ার জন্য পড়াশোনা করছে।
তপু হিজড়া জানায়,তাদের জন্য ভাল শিক্ষক প্রয়োজন। সরকার যেন এ বিষয়ে নজর দেয়। হিজড়া হয়ে জন্মানো বড় অভিশাপ। এই অভিশাপ থেকে মুক্তি পেতে মোঃ নাসিরুজ্জামান খান তপু হিজড়া ১০ম শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশোনা করে এখন প্রাথমিক শিক্ষাক হিসেবে অন্য হিজড়াদের শিক্ষাদান করছে। তপু হিজড়া বগুড়ার সেন্ট্রালস্কুলে ২০০০ সালে দশম শ্রেণী পর্যন্ত লেখা পড়া করে আর অর্থের অভাবে এগুতে পারেনি। তপুর ভাষ্য, এখন শেখ হাসিনার সরকার হিজড়াদের জন্য যে পদক্ষেপ নিয়েছে তাতে শুধু তার প্রশংসা নয়, মনে হয় তার পায়ে ছালাম করি। তার মতে সারা দেশের হিজড়াদের নিয়ে মহাসমাবেশ করা উচিত। হিজড়ারা গলা ফাটিয়ে বলবে, আমরা শেখ হাসিনার নৌকার পক্ষে থাকবো। শিক্ষকতার জন্য বছরে তাকে তার ‘গুরু মাতা’ সুমি হিজড়া সমাজসেবা থেকে বছরে উপবৃত্তি ছাড়া ৬০০০ টাকা দেয়া হয়।
উজ্জল হিজড়া, ফটু হিজড়া ,রবি হিজড়া জানায়, কোন সরকার তাদের জীবনমান উন্নয়নের জন্য এগিয়ে আসেনি। এ সরকার আমাদের আঁধার থেকে আলোর পথে এনেছে।
সমাজে অবহেলিত ও অনগ্রসর হিজড়াদের মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে সমাজসেবা অধিদপ্তরের মাধ্যমে সরকার সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছে। বয়স্ক, বিশেষ ভাতা ও শিক্ষা উপবৃত্তির হিজড়া জনগোষ্ঠীর জীবনমান পাল্টে দিয়েছে। চাঁদবাজী একটি ঘৃর্ণিত কাজ তারা উপলদ্ধি করেতে পেরেছে সমাজসেবা অধিদফতরের মাধ্যমে। করছে।
তাদের অনেকে অভিযোগ, কিছু কিছু হিজড়া নামধারী ব্যাক্তি তাদেও ভাল পথে আসতে দেয় না। এই সব ব্যাক্তি চাঁদাবাজিতে উদ্ধুদ্ধ করে।
হিজড়াদের অনেকে ৫ শতাংশ সুদে ঋণ নিয়ে হাস-মুরগী, গরু-ছাগল পালন করছে। জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শহীদুল ইসলাম খান জানান, বছরে জেলায় ২৫২ জনকে ১০ লাখ ৬৬ হাজার ৮০০ টাকা শিক্ষা উপ-বৃত্তি প্রদান করা হয়। মাসে ৬০০ টাকা করে ১৫১ জন বয়স্ক হিজড়াকে ভাতা প্রদান করা হচ্ছে।তাদের অনেকে ১০ হাজার টাকা করে ঋণ নিয়ে মুদির দোকান, মোবাইলের ফ্ল্যাক্সি লোডের দোকান দিয়েছে। ওরা স্বাভাবিক মানুষের মত বাঁচতে চায় । সরকার তাদেল জন্য সে ব্যবস্থাই করছে।
বাসস/সংবাদদাতা/১৮২০/মরপা