দেশে ২৪ ঘন্টায় কোভিড-১৯ এ মৃত্যু ৪২ জন, সুস্থ ৩,৭৮৪

237

ঢাকা, ২৪ আগস্ট, ২০২০ (বাসস) : দেশে করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) শনাক্তের ১৭০তম দিনে ২৪ ঘন্টায় এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ৪২ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। আর সুস্থ হয়েছেন ৩ হাজার ৭৮৪ জন।
গতকালের চেয়ে আজ ৮ জন বেশি মৃত্যুবরণ করেছেন। গতকাল ৩৪ জন মৃত্যুবরণ করেছিলেন। এখন পর্যন্ত দেশে এ ভাইরাসে মৃত্যুবরণ করেছেন ৩ হাজার ৯৮৩ জন। করোনা শনাক্তের বিবেচনায় আজ মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৩৪ শতাংশ। গতকালও মৃত্যুর হার ছিল ১ দশমিক ৩৪ শতাংশ।
আজ স্বাস্থ্য অধিদফতরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে গত ২৪ ঘন্টায় হাসপাতাল এবং বাসায় মিলিয়ে সুস্থ হয়েছেন ৩ হাজার ৭৮৪ জন। গতকালের চেয়ে ২৬০ জন বেশি সুস্থ হয়েছেন। গতকাল সুস্থ হয়েছিলেন ৩ হাজার ৫২৪ জন। এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ১ লাখ ৮২ হাজার ৮৭৫ জন।
আজ শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৬১ দশমিক ৫৬ শতাংশ। আগের দিন এই হার ছিল ৬০ দশমিক ৭৯ শতাংশ। আগের দিনের চেয়ে আজ সুস্থতার হার দশমিক ৭৭ শতাংশ বেশি।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘন্টায় ১৩ হাজার ৩৮২ জনের নমুনা পরীক্ষায় ২ হাজার ৪৮৫ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। গতকালের চেয়ে আজ ৫১২ জন বেশি শনাক্ত হয়েছেন। গতকাল ১০ হাজার ৮০১ জনের নমুনা পরীক্ষায় শনাক্ত হয়েছিলেন ১ হাজার ৯৭৩ জন। গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৮ দশমিক ৫৭ শতাংশ। আগের দিন এ হার ছিল ১৮ দশমিক ২৭ শতাংশ। আগের দিনের চেয়ে আজ শনাক্তের হার দশমিক ৩ শতাংশ বেশি।
দেশে এ পর্যন্ত মোট ১৪ লাখ ৫৬ হাজার ৩৮ জনের নমুনা পরীক্ষায় ২ লাখ ৯৭ হাজার ৮৩ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। মোট পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ২০ দশমিক ৪০ শতাংশ।
বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, ‘করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ১৩ হাজার ৬৭৫ জনের। আগের দিন সংগ্রহ করা হয়েছিল ১০ হাজার ৯৫৯ জনের। গতকালের চেয়ে আজ ২ হাজার ৭১৬টি নমুনা বেশি সংগ্রহ করা হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় দেশের ৯১টি পরীক্ষাগারে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১৩ হাজার ৩৮২ জনের। আগের দিন নমুনা পরীক্ষা হয়েছিল ১০ হাজার ৮০১ জনের। গত ২৪ ঘন্টায় আগের দিনের চেয়ে ২ হাজার ৫৮১টি বেশি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে।
মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে ৩১ জন পুরুষ এবং ১১ জন নারী। এখন পর্যন্ত পুরুষ ৩ হাজার ১৩৭ জন; ৭৮ দশমিক ৭৬ শতাংশ এবং নারী মৃত্যুবরণ করেছেন ৮৪৬ জন; ২১ দশমিক ২৪ শতাংশ। ২৪ ঘন্টায় হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেছেন ৩৮ জন এবং ৪ জন বাড়িতে মৃত্যুবরণ করেছেন।
মারা যাওয়াদের বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, ৬০ ঊর্ধ্ব ১৯ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ১২ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ৯ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ২ জন রয়েছেন। এখন পর্যন্ত মোট মৃত্যুর শতকরা হারে দেখা গেছে, শূন্য থেকে ১০ বছরের মধ্যে ১৯ জন, যা দশমিক ৪৮ শতাংশ। ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে ৩৫ জন, যা দশমিক ৮৮ শতাংশ। ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ৯৫ জন, যা ২ দশমিক ৩৯ শতাংশ। ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ২৪৯ জন, যা ৬ দশমিক ২৫ শতাংশ। ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ৫৩৩ জন, যা ১৩ দশমিক ৩৮ শতাংশ। ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ১ হাজার ১০৫ জন, যা ২৭ দশমিক ৭৪ শতাংশ এবং ৬০ বছরের বেশি বয়সী মারা গেছেন ১ হাজার ৯৪৭ জন; যা ৪৮ দশমিক ৮৮ শতাংশ।
বিভাগ বিশ্লেষণে দেখা যায়, মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে ঢাকা বিভাগে ২১ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৭ জন, রাজশাহী বিভাগে ৩ জন, খুলনা বিভাগে ৬ জন, বরিশাল বিভাগে ১ জন, রংপুর বিভাগে ২ জন এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ২ জন রয়েছেন। এ পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের বিভাগভিত্তিক বিশ্লেষণে ঢাকা বিভাগে মারা গেছেন ১ হাজার ৯২০ জন; যা ৪৮ দশমিক ২০ শতাংশ। চট্টগ্রাম বিভাগে ৮৮০ জন; যা ২২ দশমিক ০৯ শতাংশ। রাজশাহী বিভাগে ২৭০ জন; যা ৬ দশমিক ৭৮ শতাংশ। খুলনা বিভাগে ৩২২ জন; যা ৮ দশমিক ০৮ শতাংশ। বরিশাল বিভাগে ১৫৫ জন; যা ৩ দশমিক ৮৯ শতাংশ। সিলেট বিভাগে ১৮৪ জন; যা ৪ দশমিক ৬২ শতাংশ। রংপুর বিভাগে ১৬৭ জন; যা ৪ দশমিক ১৯ শতাংশ এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ৮৫ জন; যা ২ দশমিক ১৩ শতাংশ।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্য অধিদফতর আরও জানায়, গত ২৪ ঘন্টায় আইসোলেশনে রাখা হয়েছে ৪৮৮ জনকে। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ২০ হাজার ২৮৭ জন। ২৪ ঘন্টায় আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন ৮২০ জন, এখন পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন ৪৬ হাজার ৯৪০ জন। এখন পর্যন্ত আইসোলেশন করা হয়েছে ৬৭ হাজার ২২৭ জনকে।
প্রাতিষ্ঠানিক ও হোম কোয়ারেন্টিন মিলে ২৪ ঘন্টায় কোয়ারেন্টিন করা হয়েছে ১ হাজার ৮৯৭ জনকে। কোয়ারেন্টিন থেকে গত ২৪ ঘন্টায় ছাড় পেয়েছেন ১ হাজার ৮৪৮ জন, এখন পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন ৪ লাখ ৩০ হাজার ১৯৪ জন। এখন পর্যন্ত কোয়ারেন্টিন করা হয়েছে ৪ লাখ ৮২ হাজার ৯২১ জনকে। বর্তমানে কোয়ারেন্টিনে আছেন ৫২ হাজার ৭২৭ জন।
ঢাকা মহানগরীতে কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৭ হাজার ৩৭টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তি রোগীর সংখ্যা ২ হাজার ১৮০ জন ও শয্যা খালি আছে ৪ হাজার ৮৫৭টি। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৩১০টি, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি রোগী আছে ২০৭ জন ও শয্যা খালি আছে ১০৩টি। চট্টগ্রাম মহানগরীতে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৭৮২টি, ভর্তিকৃত রোগীর সংখ্যা ২০৯ জন ও শয্যা খালি আছে ৫৭৩টি। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৩৯টি, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি আছে ২৩ জন ও শয্যা খালি আছে ১৬টি। সারাদেশে অন্যান্য হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৭ হাজার ৪৩৬টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগীর সংখ্যা ১ হাজার ৭৪৮ জন ও শয্যা খালি আছে ৫ হাজার ৬৮৮টি এবং আইসিইউ শয্যা রয়েছে ১৯৯টি ও আইসিইউ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগীর সংখ্যা ১০৮ জন ও শয্যা খালি আছে ৯১টি । সারাদেশে হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ১৫ হাজার ২৫৫টি, রোগী ভর্তি আছে ৪ হাজার ১৩৭ জন এবং শয্যা খালি আছে ১১ হাজার ১১৮টি। সারাদেশে আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৫৪৮টি, রোগী ভর্তি আছে ৩৩৮ জন এবং খালি আছে ২১০টি। সারাদেশে অক্সিজেন সিলিন্ডারের সংখ্যা ১২ হাজার ৫৮৩টি। সারাদেশে হাই ফ্লো নেজাল ক্যানেলা সংখ্যা ৪২৯টি এবং অক্সিজেন কনসেনট্রেটর ১৭৬টি।
০১৩১৩-৭৯১১৩০, ০১৩১৩-৭৯১১৩৮, ০১৩১৩৭৯১১৩৯ এবং ০১৩১৩৭৯১১৪০ এই নম্বরগুলো থেকে হাসপাতালের সকল তথ্য পাওয়া যাবে। কোন হাসপাতালে কতটি শয্যা খালি আছে। কত রোগী ভর্তি ও কতজন ছাড় পেয়েছেন এবং আইসিইউ শয্যা খালি আছে কি না এই ফোন নম্বরগুলোতে ফোন করে জানা যাবে। এছাড়া www.dghs.gov.bd এর CORONA কর্ণারে ‘করোনা বিষয়ক অভিযোগ প্রেরণ’ লিঙ্ক অথবা http:/app.dghs.gov.bd/covid19-complain লিঙ্ক ব্যবহার করে করোনা বিষয়ক যেকোন অভিযোগ পাঠানো যাবে।
গত ২৪ ঘন্টায় সুস্থতার সংখ্যা- ঢাকা বিভাগে ১ হাজার ৬৮৬ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৭৮৯ জন, রংপুর বিভাগে ১৫৪ জন, খুলনা বিভাগে ২৬৮ জন, বরিশাল বিভাগে ৮৭ জন, রাজশাহী বিভাগে ১৪৮ জন, সিলেট বিভাগে ৫৬৮ জন এবং ময়মনসিংহে ৮৪ জন।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, গত ২৪ ঘন্টায় স্বাস্থ্য বাতায়ন ১৬২৬৩ হটলাইন নম্বরে ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৮ হাজার ৬২১টি, ৩৩৩ এই নম্বরে ২৪ ঘন্টায় ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৪২ হাজার ৩৮২টি এবং আইইডিসিআর’র হটলাইন ১০৬৫৫, এই নম্বরে ফোন এসেছে গত ২৪ ঘন্টায় ২৫৫টি। সব মিলিয়ে ২৪ ঘন্টায় ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৫১ হাজার ২৫৮টি। এ পর্যন্ত হটলাইনে ফোনকল এসেছে ১ কোটি ৯৩ লাখ ৭১ হাজার ১৬৮টি।
করোনাভাইরাস চিকিৎসা বিষয়ে এ পর্যন্ত ১৬ হাজার ৪৯৮ জন চিকিৎসক অনলাইনে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন। এদের মধ্যে ৪ হাজার ২১৭ জন স্বাস্থ্য বাতায়ন ও আইইডিসিয়ার’র হটলাইনগুলোতে স্বেচ্ছাভিত্তিতে সপ্তাহে ৭ দিন ২৪ ঘন্টা জনগণকে চিকিৎসাসেবা ও পরামর্শ দিচ্ছেন। এছাড়া ২৪ ঘন্টায় কোভিড বিষয়ক টেলিমেডিসিন সেবা গ্রহণ করেছেন ৪ হাজার ৬১৫ জন। এ পর্যন্ত শুধু কোভিড বিষয়ে স্বাস্থ্য সেবা গ্রহণ করেছেন ২ লাখ ৪১ হাজার ৯৯০ জন। প্রতিদিন ৩৫ জন চিকিৎসক ও ১০ জন স্বাস্থ্য তথ্যকর্মকর্তা দুই শিফটে মোট ৯০ জন টেলিমেডিসিন সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, দেশের বিমানবন্দর, নৌ, সমুদ্রবন্দর ও স্থলবন্দর দিয়ে গত ২৪ ঘন্টায় ২ হাজার ৯৬০ জনসহ সর্বমোট বাংলাদেশে আগত ৮ লাখ ৫১ হাজার ৩৫৭ জনকে স্কিনিং করা হয়েছে।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পরিস্থিতি তুলে ধরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২৩ আগস্ট পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় করোনায় এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ৩৫ লাখ ৩৩ হাজার ৮০৭ জন এবং এ পর্যন্ত মৃত্যুবরণ করেছেন ৬৭ হাজার ৪৫৫ জন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২৩ আগস্ট পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী সারাবিশ্বে এ পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ২ কোটি ৩০ লাখ ৫৭ হাজার ২৮৮ এবং এ পর্যন্ত ৮ লাখ ৯০৬ জন মৃত্যুবরণ করেছেন।