২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ উন্নত দেশে পরিণত হবে : ওবায়দুল কাদের

403

ঢাকা, ২৯ জুলাই, ২০১৮ (বাসস) : আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাঙ্গালী জাতি ২০৪১ সালের মধ্যে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীন বাংলাদেশকে উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করবে।
তিনি আজ ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস- জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে দেয়া এক বিবৃতিতে বলেন, সেই স্বপ্নময় ভবিষ্যতের বিনির্মাণের জন্য জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাইকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ঘাতকেরা শুধু এদিন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যাই করেনি, হত্যা করেছিল বাঙালি জাতির মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, অগ্রযাত্রা, সমৃদ্ধি ও সুন্দর আগামীর স্বপ্নকে। একটি সশস্ত্র যুদ্ধের মাধ্যমে ৩০ লক্ষ শহীদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশকে স্বাধীন করে সোনার বাংলা বিনির্মাণের যে স্বপ্ন দেখেছিলেন ১৫ আগস্ট খুনিদের বুলেট বাঙালির সেই স্বপ্নকে হত্যা করে।
সড়ক পরিবহন মন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শত বছরের একটি পরাধীন জাতিকে স্বাধীনতা দিয়ে বিশ্বের দরবারে বাঙালিদের বীরের জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার মাত্র তিন বছর সাত মাসের মধ্যে দেশী ও বিদেশী চক্রান্তের মাধ্যমে ঘাতকরা জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যা করে বাঙালি জাতির কপালে কলঙ্কের তিলক পরিয়ে দেয়। খুনিরা শুধু বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেই ক্ষান্ত হয়নি, বঙ্গবন্ধু হত্যার ষড়যন্ত্রের অন্যতম সহযোগী জিয়াউর রহমান অবৈধভাবে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল করে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ করতে ঘৃণ্য ইনডেমনিটি আইন জারি করে।
কাদের বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট থেকে দীর্ঘ ২১ বছর জাতি হিসেবে আমরা বিচারহীনতার কলঙ্ককের বোঝা বহন করেছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গঠিত সরকার বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে নিয়মতান্ত্রিক বিচারিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ২০১০ সালে ঘাতকদের ফাঁসির রায় কার্যকর করার মাধ্যমে বাঙালি জাতিকে কলঙ্কমুক্ত করেন।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর খুনিদের অনেকেই এখনও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পালিয়ে থেকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনার সরকার খুনিদের দেশে ফিরিয়ে এনে আদালতের রায় কার্যকর করার প্রক্রিয়া অব্যাহত রেখেছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, হত্যাকারীরা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করতে সক্ষম হলেও বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও চেতনাকে কখনো হত্যা করতে পারেনি। হত্যা করতে পারেনি বঙ্গবন্ধুর লালিত স্বপ্নকে। বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের জনগণের যে মুক্তির স্বপ্ন দেখেছিলেন তারই কন্যা শেখ হাসিনার হাত ধরে বাংলাদেশ আজ সেই লক্ষ্যেই এগিয়ে যাচ্ছে।
সেতুমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলা বিনির্মাণের স্বপ্ন দেখেছিলেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ ক্ষুধা ও দারিদ্র্যকে জয় করে বাংলাদেশকে বিশ্বের দরবারে একটি উন্নয়নশীল, মর্যাদাবান জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, বাংলার মাটিতে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হবেই। শেখ হাসিনা সকল ষড়যন্ত্রকে উপেক্ষা করে নানা প্রতিকূলতার মুখোমুখি হয়েও ঘৃণ্য যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের সম্মুখীন করেছেন।
বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের বলেন, আজ বঙ্গবন্ধু আমাদের মাঝে নেই। কিন্তু তাঁর আদর্শ, চেতনা আর রক্তের উত্তরাধিকার শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা রয়েছেন। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও চেতনাকে ধারণ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের মহাসড়কে। সারা বিশ্বে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের রোল মডেল। বাঙালি জাতি কৃতজ্ঞচিত্তে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ‘‘মুজিববর্ষ” হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে বলেও জানান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। তিনি ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৩তম শাহাদাত বার্ষিকী, জাতীয় শোক দিবস যথাযথ মর্যাদার সাথে পালনের জন্য দেশবাসী, আওয়ামী লীগ এবং তার সকল সহযোগী, ভ্রাতৃপ্রতিম, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন এবং সংস্থাসমূহের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছেন।
আওয়ামী লীগের সকল জেলা, মহানগর, উপজেলা, পৌর, ইউনিয়ন, ওয়ার্ডসহ সমস্ত শাখার নেতৃবৃন্দকে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ কর্মসূচি গ্রহণ করে দিবসটিকে পালন করার জন্য বিনীত অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।