দেশে ২৪ ঘন্টায় কোভিড-১৯ এ মৃত্যু ৪১ জন, সুস্থ ৩,২৫৩

381

ঢাকা, ২০ আগস্ট, ২০২০ (বাসস) : দেশে করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) শনাক্তের ১৬৬তম দিনে ২৪ ঘন্টায় এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ৪১ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। আর সুস্থ হয়েছেন ৩ হাজার ২৫৩ জন।
গতকালও ৪১ জন মৃত্যুবরণ করেছিলেন। এখন পর্যন্ত দেশে এ ভাইরাসে মৃত্যুবরণ করেছেন ৩ হাজার ৮২২ জন। করোনা শনাক্তের বিবেচনায় আজ মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৩৩ শতাংশ। গতকালও মৃত্যুর একই হার বিদ্যমান ছিল।
আজ স্বাস্থ্য অধিদফতরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে গত ২৪ ঘন্টায় হাসপাতাল এবং বাসায় মিলিয়ে সুস্থ হয়েছেন ৩ হাজার ২৫৩ জন। গতকালের চেয়ে ৩৪০ জন বেশি সুস্থ হয়েছেন। গতকাল সুস্থ হয়েছিলেন ২ হাজার ৯১৩ জন। এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ১ লাখ ৬৮ হাজার ৯৯১ জন।
আজ শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৫৮ দশমিক ৬৯ শতাংশ। আগের দিন এই হার ছিল ৫৮ দশমিক ১৪ শতাংশ। আগের দিনের চেয়ে আজ সুস্থতার হার দশমিক ৫৫ শতাংশ বেশি।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘন্টায় ১৪ হাজার ৫৯ জনের নমুনা পরীক্ষায় ২ হাজার ৮৬৮ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। গতকালের চেয়ে আজ ১২১ জন বেশি শনাক্ত হয়েছেন। গতকাল ১৪ হাজার ৬৭৮ জনের নমুনা পরীক্ষায় শনাক্ত হয়েছিলেন ২ হাজার ৭৪৭ জন। গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ২০ দশমিক ৪০ শতাংশ। আগের দিন এ হার ছিল ১৮ দশমিক ৭২ শতাংশ। আগের দিনের চেয়ে আজ শনাক্তের হার ১ দশমিক ৬৮ শতাংশ বেশি।
দেশে এ পর্যন্ত মোট ১৪ লাখ ৭ হাজার ৫৫৬ জনের নমুনা পরীক্ষায় ২ লাখ ৮৭ হাজার ৯৫৯ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। মোট পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ২০ দশমিক ৪৬ শতাংশ।
বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, ‘করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ১৪ হাজার ১৭৬ জনের। আগের দিন সংগ্রহ করা হয়েছিল ১৫ হাজার ৭৪ জনের। গতকালের চেয়ে আজ ৮৯৮টি নমুনা কম সংগ্রহ করা হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় দেশের ৯১টি পরীক্ষাগারে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১৪ হাজার ৫৯ জনের। আগের দিন নমুনা পরীক্ষা হয়েছিল ১৪ হাজার ৬৭৮ জনের। গত ২৪ ঘন্টায় আগের দিনের চেয়ে ৬১৯টি কম নমুনা পরীক্ষা হয়েছে।
২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণকারীদের ৩২ জন পুরুষ এবং ৯ জন নারী। এখন পর্যন্ত ৩ হাজার ১৯ জন পুরুষ; যা ৭৮ দশমিক ৯৯ শতাংশ এবং ৮০৩ জন নারী মারা গেছেন; যা শতকরা ২১ দশমিক ০১ শতাংশ। ২৪ ঘন্টায় ৩৮ জন হাসপাতালে এবং বাড়িতে ৩ জন মৃত্যুবরণ করেছেন।

২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণকারীদের বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, ষাটোর্ধ্ব ৩০ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ৮ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ১ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ১ জন এবং ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ১ জন রয়েছেন। বয়সের হিসেবে এখন পর্যন্ত মারা যাওয়াদের মধ্যে শূন্য থেকে ১০ বছরের মধ্যে রয়েছে ১৯ জন; যা দশমিক ৫০ শতাংশ। ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে ৩৫ জন; যা দশমিক ৯২ শতাংশ। ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ৯৩ জন; যা ২ দশমিক ৪৩ শতাংশ। ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ২৩৯ জন; যা ৬ দশমিক ২৫ শতাংশ। ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ৫১২ জন; যা ১৩ দশমিক ৪০ শতাংশ। ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ১ হাজার ৭৬ জন; যা ২৮ দশমিক ১৫ শতাংশ এবং ৬০ বছরের ঊর্ধ্বে রয়েছেন ১ হাজার ৮৪৮ জন; যা ৪৮ দশমিক ৩৫ শতাংশ।
বিভাগ বিশ্লেষণে দেখা যায়, তাদের মধ্যে ঢাকা বিভাগে ১৯, চট্টগ্রামে ৮, রাজশাহীতে ৪, খুলনায় ৩ এবং বরিশালে ২, রংপুরে ৫ জন রয়েছেন। এ পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের বিভাগভিত্তিক বিশ্লেষণে ঢাকা বিভাগে মারা গেছেন ১ হাজার ৮৩১ জন; যা ৪৭ দশমিক ৯১ শতাংশ। চট্টগ্রাম বিভাগে ৮৫৮ জন; যা ২২ দশমিক ৪৫ শতাংশ। রাজশাহী বিভাগে ২৫০ জন; যা ৬ দশমিক ৫৪ শতাংশ। খুলনা বিভাগে ৩১৩ জন; যা ৮ দশমিক ১৯ শতাংশ। বরিশাল বিভাগে ১৪৯ জন; যা ৩ দশমিক ৯০ শতাংশ। সিলেট বিভাগে ১৭৯ জন; যা ৪ দশমিক ৬৮ শতাংশ। রংপুর বিভাগে ১৬০ জন; যা ৪ দশমিক ১৯ শতাংশ এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ৮২ জন; যা ২ দশমিক ১৫ শতাংশ।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়, গত ২৪ ঘন্টায় আইসোলেশনে রাখা হয়েছে ৭৬৬ জনকে। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ২০ হাজার ২৯১ জন। আইসোলেশন থেকে ২৪ ঘন্টায় ৭৫৫ জন এবং এখন পর্যন্ত ৪৪ হাজার ৭৪৫ জন ছাড় পেয়েছেন। এখন পর্যন্ত আইসোলেশন করা হয়েছে ৬৫ হাজার ৩৬ জনকে।
প্রাতিষ্ঠানিক ও হোম কোয়ারেন্টিন মিলে ২৪ ঘন্টায় কোয়ারেন্টিন করা হয়েছে ১ হাজার ৯৬৯ জনকে। কোয়ারেন্টিন থেকে গত ২৪ ঘন্টায় ২ হাজার ৩২৫ জন এবং এখন পর্যন্ত ৪ লাখ ২২ হাজার ৬১৪ জন ছাড় পেয়েছেন। এখন পর্যন্ত কোয়ারেন্টিন করা হয়েছে ৪ লাখ ৭৫ হাজার ৭১১ জনকে। বর্তমানে কোয়ারেন্টিনে আছেন ৫৩ হাজার ৯৭ জন।
ঢাকা মহানগরীতে কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৭ হাজার ৩৭টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তি রোগীর সংখ্যা ২ হাজার ২৫১ জন ও শয্যা খালি আছে ৪ হাজার ৭৮৬টি। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৩০৭টি, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি রোগী আছে ২১৮ জন ও শয্যা খালি আছে ৮৯টি। চট্টগ্রাম মহানগরীতে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৭৮২টি, ভর্তিকৃত রোগীর সংখ্যা ২৪৭ জন ও শয্যা খালি আছে ৫৩৫টি। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৩৯টি, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি আছে ২৩ জন ও শয্যা খালি আছে ১৬টি। সারাদেশে অন্যান্য হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৭ হাজার ৪৩৬টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগীর সংখ্যা ১ হাজার ৮৪০ জন ও শয্যা খালি আছে ৫ হাজার ৫৯৬টি এবং আইসিইউ শয্যা রয়েছে ১৯৯টি ও আইসিইউ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগীর সংখ্যা ১০০ জন ও শয্যা খালি আছে ৯৯টি । সারাদেশে হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ১৫ হাজার ২৫৫টি, রোগী ভর্তি আছে ৪ হাজার ৩৩৮ জন এবং শয্যা খালি আছে ১০ হাজার ৯১৬টি। সারাদেশে আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৫৪৫টি, রোগী ভর্তি আছে ৩০৪ জন এবং খালি আছে ২১৮টি। সারাদেশে অক্সিজেন সিলিন্ডারের সংখ্যা ১২ হাজার ৫৬৩টি। সারাদেশে হাই ফ্লো নেজাল ক্যানেলা সংখ্যা ৪১১টি এবং অক্সিজেন কনসেনট্রেটর ১৬০টি।
০১৩১৩-৭৯১১৩০, ০১৩১৩-৭৯১১৩৮, ০১৩১৩৭৯১১৩৯ এবং ০১৩১৩৭৯১১৪০ এই নম্বরগুলো থেকে হাসপাতালের সকল তথ্য পাওয়া যাবে। কোন হাসপাতালে কতটি শয্যা খালি আছে। কত রোগী ভর্তি ও কতজন ছাড় পেয়েছেন এবং আইসিইউ শয্যা খালি আছে কি না এই ফোন নম্বরগুলোতে ফোন করে জানা যাবে। এছাড়াwww.dghs.gov.bd এর CORONA কর্ণারে “করোনা বিষয়ক অভিযোগ প্রেরণ” লিঙ্ক অথবা http:/app.dghs.gov.bd/covid19-complain লিঙ্ক ব্যবহার করে করোনা বিষয়ক যেকোন অভিযোগ পাঠানো যাবে।
গত ২৪ ঘন্টায় সুস্থতার সংখ্যা, ঢাকা বিভাগে ১ হাজার ৩১ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ২০৫ জন, রংপুর বিভাগে ২৯০ জন, খুলনা বিভাগে ৬০২ জন, বরিশাল বিভাগে ১৭৩ জন, রাজশাহী বিভাগে ৩৫৭ জন, সিলেট বিভাগে ৫৫৩ জন এবং ময়মনসিংহে ৪২ জন।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘন্টায় স্বাস্থ্য বাতায়ন ১৬২৬৩ হটলাইন নম্বরে ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৮ হাজার ২৭৪টি, ৩৩৩ এই নম্বরে ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৪৪ হাজার ৫৬৪টি এবং আইইডিসিআর’র হটলাইন ১০৬৫৫, এই নম্বরে ফোন এসেছে ২৬৫টি। সব মিলিয়ে ২৪ ঘন্টায় ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৫৩ হাজার ১০৩টি। এ পর্যন্ত হটলাইনে ফোনকল এসেছে ১ কোটি ৯১ লাখ ৬৪ হাজার ৮১২টি।
করোনাভাইরাস চিকিৎসা বিষয়ে এ পর্যন্ত ১৬ হাজার ৪৯৮ জন চিকিৎসক অনলাইনে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন। এদের মধ্যে ৪ হাজার ২১৭ জন স্বাস্থ্য বাতায়ন ও আইইডিসিয়ার’র হটলাইনগুলোতে স্বেচ্ছাভিত্তিতে সপ্তাহে ৭ দিন ২৪ ঘন্টা জনগণকে চিকিৎসাসেবা ও পরামর্শ দিচ্ছেন। এছাড়া ২৪ ঘন্টায় কোভিড বিষয়ক টেলিমেডিসিন সেবা গ্রহণ করেছেন ৪ হাজার ৩৮৭ জন। এ পর্যন্ত শুধু কোভিড বিষয়ে স্বাস্থ্য সেবা গ্রহণ করেছেন ২ লাখ ২৪ হাজার ৪৫৬ জন। প্রতিদিন ৩৫ জন চিকিৎসক ও ১০ জন স্বাস্থ্য তথ্যকর্মকর্তা দুই শিফটে মোট ৯০ জন টেলিমেডিসিন সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, দেশের বিমানবন্দর, নৌ, সমুদ্রবন্দর ও স্থলবন্দর দিয়ে গত ২৪ ঘন্টায় ৩ হাজার ৪৮ জনসহ সর্বমোট বাংলাদেশে আগত ৮ লাখ ৩৮ হাজার ৩৫৭ জনকে স্কিনিং করা হয়েছে।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পরিস্থিতি তুলে ধরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ১৯ আগস্ট পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় করোনায় এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ৩২ লাখ ৩৩ হাজার ৮৩১ জন এবং এ পর্যন্ত মৃত্যুবরণ করেছেন ৬৩ হাজার ১১৯ জন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ১৯ আগস্ট পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ি সারাবিশ্বে এ পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ২ কোটি ১৯ লাখ ৮৯ হাজার ৩৬৬ এবং এ পর্যন্ত ৭ লাখ ৭৫ হাজার ৮৯৩ জন মৃত্যুবরণ করেছেন।