দেশে ২৪ ঘন্টায় কোভিড-১৯ এ মৃত্যু ৪৬ জন, সুস্থ ৩,২৩৪

431

ঢাকা, ১৮ আগস্ট, ২০২০ (বাসস) : দেশে করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) শনাক্তের ১৬৪তম দিনে ২৪ ঘন্টায় এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ৪৬ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। আর সুস্থ হয়েছেন ৩ হাজার ২৩৪ জন।
গতকালের চেয়ে আজ ৯ জন বেশি মৃত্যুবরণ করেছেন। গতকাল ৩৭ জন মৃত্যুবরণ করেছিলেন। এখন পর্যন্ত দেশে এ ভাইরাসে মৃত্যুবরণ করেছেন ৩ হাজার ৭৪০ জন। করোনা শনাক্তের বিবেচনায় আজ মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৩২ শতাংশ। ৫ আগস্ট থেকে মৃত্যুর একই হার বিদ্যমান রয়েছে।
আজ স্বাস্থ্য অধিদফতরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে গত ২৪ ঘন্টায় হাসপাতাল এবং বাসায় মিলিয়ে সুস্থ হয়েছেন ৩ হাজার ২৩৪ জন। গতকালের চেয়ে ১ হাজার ৫৯৩ জন বেশি সুস্থ হয়েছেন। গতকাল সুস্থ হয়েছিলেন ১ হাজার ৬৪১ জন। এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ১ লাখ ৬২ হাজার ৮২৫ জন।
আজ শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৫৭ দশমিক ৬৭ শতাংশ। আগের দিন এই হার ছিল ৫৭ দশমিক ৫৩ শতাংশ। আগের দিনের চেয়ে আজ সুস্থতার হার দশমিক ১৪ শতাংশ বেশি।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘন্টায় ১৪ হাজার ৬৩০ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৩ হাজার ২০০ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। গতকালের চেয়ে আজ ৬০৫ জন বেশি শনাক্ত হয়েছেন। গতকাল ১২ হাজার ৫২৩ জনের নমুনা পরীক্ষায় শনাক্ত হয়েছিলেন ২ হাজার ৫৯৫ জন। গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ২১ দশমিক ৮৭ শতাংশ। আগের দিন এ হার ছিল ২০ দশমিক ৭২ শতাংশ। আগের দিনের চেয়ে আজ শনাক্তের হার ১ দশমিক ১৫ শতাংশ বেশি।
দেশে এ পর্যন্ত মোট ১৩ লাখ ৭৮ হাজার ৮১৯ জনের নমুনা পরীক্ষায় ২ লাখ ৮২ হাজার ৩৪৪ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। মোট পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ২০ দশমিক ৪৮ শতাংশ।
বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, ‘করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ১৫ হাজার ৪৩৫ জনের। আগের দিন নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল ১২ হাজার ৮৩৬ জনের। গতকালের চেয়ে আজ ২ হাজার ৫৯৯টি নমুনা বেশি সংগ্রহ করা হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় দেশের ৮৭টি পরীক্ষাগারে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১৪ হাজার ৬৩০ জনের। আগের দিন নমুনা পরীক্ষা হয়েছিল ১২ হাজার ৮৩৬ জনের। গত ২৪ ঘন্টায় আগের দিনের চেয়ে ১ হাজার ৭৯৪টি বেশি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে।
২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণকারীদের ৩৫ জন পুরুষ এবং ১১ জন নারী। এখন পর্যন্ত ২ হাজার ৯৫৩ জন পুরুষ; ৭৮ দশমিক ৯৬ শতাংশ এবং ৭৮৭ জন নারী মারা গেছেন; ২১ দশমিক ১৪ শতাংশ। ২৪ ঘন্টায় ৪৪ জন হাসপাতালে এবং বাড়িতে ২ জন মৃত্যুবরণ করেছেন।
২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণকারীদের বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, ষাটোর্ধ্ব ২২ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ১৭ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ২ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ৩ জন, ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ১ জন, ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে ১ জন রয়েছেন। বয়সের হিসেবে এখন পর্যন্ত মারা যাওয়াদের মধ্যে শূন্য থেকে ১০ বছরের মধ্যে রয়েছে ১৯ জন; যা দশমিক ৫১ শতাংশ। ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে ৩৫ জন; যা দশমিক ৯৪ শতাংশ। ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ৯২ জন; যা ২ দশমিক ৪৬ শতাংশ। ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ২৩৭ জন; যা ৬ দশমিক ৩৪ শতাংশ। ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ৫০৬ জন; যা ১৩ দশমিক ৫৩ শতাংশ। ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ১ হাজার ৫৭ জন; যা ২৮ দশমিক ২৬ শতাংশ এবং ৬০ বছরের ঊর্ধ্বে রয়েছেন ১ হাজার ৭৯৪ জন; যা ৪৭ দশমিক ৯৭ শতাংশ।
বিভাগ বিশ্লেষণে দেখা যায়, তাদের মধ্যে ঢাকা বিভাগে ২৩, চট্টগ্রামে ৬, রাজশাহীতে ৪, খুলনায় ৭, বরিশালে ২, রংপুরে ৩ এবং ময়মনসিংহে ১ জন রয়েছেন। এ পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের বিভাগভিত্তিক বিশ্লেষণে ঢাকা বিভাগে মারা গেছেন ১ হাজার ৭৯১ জন; যা ৪৭ দশমিক ৮৯ শতাংশ। চট্টগ্রাম বিভাগে ৮৪৭ জন; যা ২২ দশমিক ৬৫ শতাংশ। রাজশাহী বিভাগে ২৪৭ জন; যা ৬ দশমিক ৬০ শতাংশ। খুলনা বিভাগে ৩০২ জন; যা ৮ দশমিক ০৭ শতাংশ। বরিশাল বিভাগে ১৪৪ জন; যা ৩ দশমিক ৮৫ শতাংশ। সিলেট বিভাগে ১৭৪ জন; যা ৪ দশমিক ৬৫ শতাংশ। রংপুর বিভাগে ১৫৪ জন; যা ৪ দশমিক ১২ শতাংশ এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ৮১ জন; যা ২ দশমিক ১৭ শতাংশ।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়, গত ২৪ ঘন্টায় আইসোলেশনে রাখা হয়েছে ৮২১ জনকে। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ২০ হাজার ২৯৮ জন। আইসোলেশন থেকে ২৪ ঘন্টায় ৬২৪ জন এবং এখন পর্যন্ত ৪৩ হাজার ২৩৫ জন ছাড় পেয়েছেন। এখন পর্যন্ত আইসোলেশন করা হয়েছে ৬৩ হাজার ৫৩৩ জনকে।
প্রাতিষ্ঠানিক ও হোম কোয়ারেন্টিন মিলে ২৪ ঘন্টায় কোয়ারেন্টিন করা হয়েছে ২ হাজার ৪৮৩ জনকে। কোয়ারেন্টিন থেকে গত ২৪ ঘন্টায় ১ হাজার ৮৯৭ জন এবং এখন পর্যন্ত ৪ লাখ ১৮ হাজার ৪০৩ জন ছাড় পেয়েছেন। এখন পর্যন্ত কোয়ারেন্টিন করা হয়েছে ৪ লাখ ৭১ হাজার ৭৯৫ জনকে। বর্তমানে কোয়ারেন্টিনে আছেন ৫৩ হাজার ৩৯২ জন।
ঢাকা মহানগরীতে কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৭ হাজার ৩৭টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তি রোগীর সংখ্যা ২ হাজার ২৪৮ জন ও শয্যা খালি আছে ৪ হাজার ৭৮৯টি। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৩০৬টি, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি রোগী আছে ২১৭ জন ও শয্যা খালি আছে ৮৯টি। চট্টগ্রাম মহানগরীতে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৭৮২টি, ভর্তিকৃত রোগীর সংখ্যা ২৪৮ জন ও শয্যা খালি আছে ৫৩৪টি। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৩৯টি, আইসিইউ শয্যায় রোগী ভর্তি আছে ২৩ জন ও শয্যা খালি আছে ১৬টি। সারাদেশে অন্যান্য হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৭ হাজার ৪৩৬টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগীর সংখ্যা ১ হাজার ৮৩৪ জন ও শয্যা খালি আছে ৫ হাজার ৬০২টি এবং আইসিইউ শয্যা রয়েছে ১৯৯টি ও আইসিইউ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগীর সংখ্যা ৯৩ জন ও শয্যা খালি আছে ১০৬টি । সারাদেশে হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ১৫ হাজার ২৫৫টি, রোগী ভর্তি আছে ৪ হাজার ৩৩০ জন এবং শয্যা খালি আছে ১০ হাজার ৮৯৫টি। সারাদেশে আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৫৪৪টি, রোগী ভর্তি আছে ৩৩৩ জন এবং খালি আছে ২১১টি। সারাদেশে অক্সিজেন সিলিন্ডারের সংখ্যা ১২ হাজার ৫৬৩টি। সারাদেশে হাই ফ্লো নেজাল ক্যানেলা সংখ্যা ৪১১টি এবং অক্সিজেন কনসেনট্রেটর ১৬০টি।
০১৩১৩-৭৯১১৩০, ০১৩১৩-৭৯১১৩৮, ০১৩১৩৭৯১১৩৯ এবং ০১৩১৩৭৯১১৪০ এই নম্বরগুলো থেকে হাসপাতালের সকল তথ্য পাওয়া যাবে। কোন হাসপাতালে কতটি শয্যা খালি আছে। কত রোগী ভর্তি ও কতজন ছাড় পেয়েছেন এবং আইসিইউ শয্যা খালি আছে কি না এই ফোন নম্বরগুলোতে ফোন করে জানা যাবে। এছাড়া www.dghs.gov.bd Gi CORONA কর্ণারে ‘করোনা বিষয়ক অভিযোগ প্রেরণ’ লিঙ্ক অথবা http:/app.dghs.gov.bd/covid19-complain লিঙ্ক ব্যবহার করে করোনা বিষয়ক যেকোন অভিযোগ পাঠানো যাবে।
গত ২৪ ঘন্টায় সুস্থতার সংখ্যা- ঢাকা বিভাগে ৭৭১ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ২৪০ জন, রংপুর বিভাগে ২৪৮ জন, খুলনা বিভাগে ২৯৬ জন, বরিশাল বিভাগে ১০৯ জন, রাজশাহী বিভাগে ৪১০ জন, সিলেট বিভাগে ২০০ জন এবং ময়মনসিংহে ৬০ জন।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, গত ২৪ ঘন্টায় স্বাস্থ্য বাতায়ন ১৬২৬৩ হটলাইন নম্বরে ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৮ হাজার ৬৭৩টি, ৩৩৩ এই নম্বরে ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৪৮ হাজার ৮১২টি এবং আইইডিসিআর’র হটলাইন ১০৬৫৫, এই নম্বরে ফোন এসেছে ২২৫টি। সব মিলিয়ে ২৪ ঘন্টায় ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৫৭ হাজার ৭১০টি। এ পর্যন্ত হটলাইনে ফোনকল এসেছে ১ কোটি ৯০ লাখ ৫৫ হাজার ২৯৮টি।
করোনাভাইরাস চিকিৎসা বিষয়ে এ পর্যন্ত ১৬ হাজার ৪৯৮ জন চিকিৎসক অনলাইনে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন। এদের মধ্যে ৪ হাজার ২১৭ জন স্বাস্থ্য বাতায়ন ও আইইডিসিয়ার’র হটলাইনগুলোতে স্বেচ্ছাভিত্তিতে সপ্তাহে ৭ দিন ২৪ ঘন্টা জনগণকে চিকিৎসাসেবা ও পরামর্শ দিচ্ছেন। এছাড়া ২৪ ঘন্টায় কোভিড বিষয়ক টেলিমেডিসিন সেবা গ্রহণ করেছেন ২ হাজার ১০৪ জন। এ পর্যন্ত শুধু কোভিড বিষয়ে স্বাস্থ্য সেবা গ্রহণ করেছেন ২ লাখ ১৫ হাজার ৯৭৮ জন। প্রতিদিন ৩৫ জন চিকিৎসক ও ১০ জন স্বাস্থ্য তথ্যকর্মকর্তা দুই শিফটে মোট ৯০ জন টেলিমেডিসিন সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, দেশের বিমানবন্দর, নৌ, সমুদ্রবন্দর ও স্থলবন্দর দিয়ে গত ২৪ ঘন্টায় ৩ হাজার ১৩ জনসহ সর্বমোট বাংলাদেশে আগত ৮ লাখ ৩১ হাজার ৭৪২ জনকে স্কিনিং করা হয়েছে।