বাজিস-৩ : জয়পুরহাটে মোল্লাপাড়ার মানুষের ঘুম ভাঙ্গে পাখির ডাকে

215

বাজিস-৩
জয়পুরহাট-পাখির ডাকে
জয়পুরহাটে মোল্লাপাড়ার মানুষের ঘুম ভাঙ্গে পাখির ডাকে
॥ শাহাদুল ইসলাম সাজু ॥
জয়পুরহাট, ১৮ আগস্ট, ২০২০(বাসস): জেলার কালাই উপজেলার মাত্রাই এলাকার মোল্লাপাড়া গ্রাম এখন পরিচিতি পেয়েছে পাখি গ্রাম হিসাবে । পাখির ডাকে ঘুম ভাঙ্গে এখানকার মানুষের। মোল্লাপাড়া এখন বিভিন্ন পাখিদের অভয়াশ্রমে পরিণত হয়েছে।
সরজমিনে ঘুরে দেখা যায়, প্রায় ১০ একর এলাকা জুড়ে থাকা বাঁশ বাগানে বিলুপ্ত প্রায় কালো পানকৌরি, সাদা বক, ( পাখিদের স্থানিয় নাম) জ্যাটা বক, আম বক, কানি বক, রাতচোরাসহ অন্যান্য পাখিদের দখলে পুরো পাড়া। বিগত প্রায় ১৫ বছর ধরে মোল্লাপাড়া পাখ-পাখালির অভয়াশ্রম হিসাবে গড়ে উঠেছে। ওই পাড়ায় এখন পাখিদের আনা গোনায় মনে হয় পাখিদের মেলা বসেছে।
সকাল সন্ধ্যা সাঁঝে ঝাঁকে ঝাঁকে দলে-দলে পানকৌরি, সাদা বক, জ্যাট্যাবক, কানি বক, আম বক, রাতচোরা সহ অন্যান্য বিভিন্ন প্রকারের পাখি যখন গাছে আসতে থাকে তখন পাখিদের কোলাহলে ওই এলাকা মুখোরিত হয়ে ওঠে। মোল্লাপাড়ার বাঁশ ঝাড়, বিভিন্ন গাছ-গাছালি যেন ওদের জন্য আলাদা এক স্বর্গরাজ্য ও অভয়াশ্রম । ওরা মানুষের সঙ্গে মিতালি তৈরি করে নিরাপদে এতো কাছাকাছি বসবাস করছে যেন প্রতিবেশী ও সন্তানের মতোই, যা না দেখলে বিশ্বাস হবে না। মোল্লাপড়ার বাসীন্দারা ঐসব পাখিদের ভালোবাসেন ।
সকালে পাখিগুলো উড়ে আহারের জন্য আশপাশে খোলা মাঠে চলে যায় আবার সন্ধ্যা নামার আগেই পাখিগুলো দল বেঁধে ফিরতে শুরু করে, এ যেন এক নয়নাভিরাম দৃশ্য। এ সময় চার পাশে শুধু পাখিদের কোলাহল ও কিচির মিচির শব্দ । পান কৌরি, বক, রাতচোর পাখিরা বাঁশের বা বিভিন্ন গাছের চুড়ায় বসে ডানা ঝাপটায় আবার গাছের মাথার উপর দিয়ে দুই-এক চক্কর দিয়ে এসে চূড়ায় বসে। আবার কোনটা বাঁশের এক কুঞ্চি থেকে অন্য কুঞ্চিতে, এক গাছ থেকে অন্য গাছে নির্বিঘেœ উড়ে যেতে থাকে। সন্ধ্যা যত ঘনিয়ে আসে তখন বিভিন্ন গাছের সবুজ পাতাগুলো সাদা বকের রংয়ে সাদা ফুলের মতো দেখায়
স্থানিয় মোল্লাপাড়া বাসিন্দা সাদিকুর রহমান, মোফাজ্জল হোসেন, মনসুর রহমান বলেন, প্রায় ১৫ বছর ধরে ঐসব পাখির বসবাস । পাখিগুলো আমাদের পরিবারের সদস্য ও সন্তানের মতো লাগে। তারা দিনরাত কিচিরমিচির করে ডাকে। পাখিগুলোর ডাকে আমাদের সকালে ঘুমভাঙ্গে আমাদের পাড়া এখন পাখিদের অভয়াশ্রমে পরিণত হয়েছে। তাছাড়া আমরা কাউকে পাখিগুলো শিকার করতে দেইনা। তারা আমাদের প্রতিবেশী ও নিকট আত্মীয়ের মতো ।
কালাই উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা: আবু তালেব বলেন, পাখিগুলো ওই এলাকাতে দীর্ঘদিন ধরে নির্বিঘেœ বসবাস করছে। কেউ পাখি শিকার করে না। এ ছাড়াও পাখি গুলোর সুরক্ষার জন্য উপজেলা প্রাণী সম্পদ বিভাগ তৎপর রয়েছে। পাখি গুলোর কারণে এলাকার নাম এখন পাখি পাড়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
বাসস/সংবাদদাতা/১০৩৫/-নূসী