‘তোমার অবদান অসীম’ টুইটারে বার্তা গাভাস্কার-টেন্ডুলকার-গাঙ্গুলী-কোহলিদের

281

নয়াদিল্লি, ১৬ আগস্ট ২০২০ (বাসস) : ১৬ বছরের বর্ণাঢ্য আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ক্যারিয়ারের ইতি টেনেছেন ভারতের দু’টি বিশ্বকাপজয়ী সাবেক অধিনায়ক মহেন্দ্র সিংহ ধোনি। বিদায় বেলায় ধোনির প্রশংসা ও তার ভবিষ্যতের জন্য শুভ কামনা জানিয়েছেন বিশ্বের তারকা খেলোয়াড়রা। ধোনির সতীর্থরা বাদ যাননি।
ধোনির জন্য শুভকামনা জানিয়েছেন ভারতের দুই মাস্টার ব্লাস্টার ব্যাটসম্যান সুনীল গাভাস্কার-শচীন টেন্ডুলকার-সাবেক অধিনায়ক সৌরভ গাঙ্গুলী-বর্তমান অধিনায়ক বিরাট কোহলি-বর্তমান কোচ রবি শাস্ত্রীসহ আরও অনেকে।
গাভাস্কার বলেছেন, ‘আমার মনে হয় মার্চ-এপ্রিলে আইপিএল হলে, সেই পারফরমেন্স দেখতে চেয়েছিল ধোনি। এমনকি, অক্টোবর-নভেম্বরে টি-২০ বিশ্বকাপ হচ্ছে কি না তা দেখার জন্য অপেক্ষা করেছিল সে। কিন্তু টি-২০ বিশ্বকাপ পিছিয়ে যাওয়ায়, সে বুঝতে পারলো আর অপেক্ষা করার প্রয়োজন নেই। তাই অবসরের সিদ্ধান্ত জানাল সে। যদি টি-২০ বিশ্বকাপ অক্টোবর-নভেম্বরে হত, তা হলে আইপিএলে ভাল খেলে একটা চেষ্টা করত। ভারতকে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জিতিয়ে মাথা উঁচু করে বিদায় নেওয়ার পরিকল্পনা করতো সে।’
টুইটারে টেন্ডুলকার লিখেছেন, ‘ভারতীয় ক্রিকেটে তোমার অবদান অসীম। ২০১১ বিশ্বকাপ একসঙ্গে জিতেছিলাম। যা আমার জীবনের সেরা মূর্হুত। দ্বিতীয় ইনিংসের জন্য তোমাকে ও তোমার পরিবারকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। আমার সাথে ধোনির সম্পর্ক সবসময় দারুণ ছিলো। অনেকবার শুনেছি যে ধোনি নাকি দাম্ভিক, নিজ থেকে কথা বলে না। কিন্তু এটা ঠিক নয়। অনেকে ধোনিকে রাগী মনে করত, আমরা সেই ধারণাও ভেঙে যায়। যখন কেউ দলে নতুন আসে, তখন কিছুটা সময় তো লাগেই। ধোনির বড় গুণ শান্ত থাকতে পারে। যা তাকে সফল হতে অনেক সহায়তা করেছে। তার এই যাত্রা সত্যিই অসাধারণ। ছোট শহর থেকে উঠে এসে ভারতের হয়ে ১৫ বছর খেলা সত্যিই প্রশংসার দাবীদার।’
ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) সভাপতি ও সাবেক অধিনায়ক গাঙ্গুলীও শুভ কামনা জানাতে ভুল করেননি। তিনি লিখেছেন, ‘একটা যুগ শেষ হল। কী অসাধারণ ক্রিকেটার। তার নেতৃত্ব গুণের তুলনা হয় না। বিশেষ করে ওয়ানডে ক্রিকেটে। ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে একদিনের ক্রিকেটে তার ব্যাটিং গোটা বিশ্বের নজর কেড়েছিলো। তবে সকল ভাল জিনিসই এক পর্যায়ে শেষ হয়। উইকেটকিপারদের জন্য সে একটা মান বেঁধে দিল। কোনও আফসোস থাকার কথা নয় তার। একটা অসাধারণ ক্যারিয়ার। আইসিসির তিনটি ট্রফিই সে ভারতকে জিতিয়েছে। অবিশ্বাস্য। তার প্রতি শুভেচ্ছা রইল।’
গাঙ্গুলীর নেতৃত্বেই ওয়ানডেতে অভিষেক হয়েছিলো ধোনির। ৩ ইনিংস পরই ধোনিকে ব্যাটিং অর্ডারে প্রমোশন দেন গাঙ্গুলী। প্রমোশন পেয়ে তিন নম্বরে ব্যাট হাতে কতটা ভয়ংকর হতে পারেন ধোনি, তা দেখান ক্রিকেটবিশ্বকে। বিশাখাপত্তমে পাকিস্তানের বিপক্ষে ছয় ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ১২৩ বলে ১৫টি চার ও ৪টি ছক্কায় হাঁকান ধোনি। এরপর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি ধোনিকে।
ধোনির সাথে দু‘টি ছবি দিয়ে ভারতের বর্তমান অধিনায়ক বিরাট কোহলি লিখেছেন, ‘প্রত্যেক ক্রিকেটারকেই একদিন সফর শেষ করতে হয়। কিন্তু ধোনির মতো এত ঘনিষ্ঠ কেউ যখন অবসরের সিদ্ধান্ত নেয়, তখন আবেগপ্রবণ হতে হয়। দেশের জন্য তেমার অবদান প্রত্যেকের হৃদয়ে থেকে যাবে। আমার মনে থাকবে পারস্পরিক সর্ম্পকের স্মৃতিগুলো। যা তোমার থেকে বরাবর পেয়ে এসেছি। বিশ্ব দেখেছে তোমার কীর্তিকে। আমি দেখেছি তোমাকে। শুভ কামনা ক্যাপ্টেন-কুল।‘
২০১১ বিশ্বকাপ ফাইনালে ধোনির সঙ্গে ১০৯ রানে ম্যাচ-জেতানো জুটি গড়া ওপেনার গৌতম গম্ভীরও টুইট করেছেন। তিনি লিখেছেন, ‘ভারত ‘এ’ দল থেকে ভারতীয় দল পর্যন্ত আমাদের প্রত্যকটি সফরে প্রচুর স্মৃতি রয়েছে। তুমি যখন তোমার অধ্যায়ে দাঁড়ি টানার সিদ্ধান্ত নিয়েছো, তখন অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি যে, এই পর্যায়ও একই রকম রোমাঞ্চের। আর এখানে ডিআরএস নেওয়ার ক্ষেত্রে কোনও সীমাবদ্ধতাও নেই। ওয়েল প্লেড ধোনি।’
ভারতের পেসার জসপ্রিত বুমরা টুইট করেছেন, ‘মাঠে ও তার বাইরে সর্বত্রই তুমি বন্ধু ও গাইড ছিলে। তোমাকে কাছ থেকে কত মূল্যবান শিক্ষা পেয়েছি। তোমার পেশাদার জীবনের অংশ হতে পেরে খুশি। এমন ঝলমলে ক্যারিয়ারের জন্য অভিনন্দন। মাহি ভাই, স্মৃতিগুলোর জন্য ধন্যবাদ।’
জাতীয় দল ও চেন্নাই সুপার কিংসে ধোনির খুব কাছের সতীর্থ রবিচন্দ্রন অশ্বিন। টুইট করে অশ্বিন লিখেছেন, ‘বরাবরের মতোই নিজস্ব স্টাইলে অবসর নিলো ধোনি ভাই। দেশের জন্য সর্বস্ব দিয়েছো তুমি। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি, ২০০৭ ও ১১ বিশ্বকাপ, চেন্নাইয়ের হয়ে আইপিএল জেতার মূর্হুতগুলো স্মৃতিতে চিরকাল উজ্জ্বল থাকবে। ভবিষ্যতের জন্য শুভেচ্ছা রইল।’
অধিনায়ক শাস্ত্রী লিখেছেন, ‘অসাধারন ক্রিকেট ক্যারিয়ারের সমাপ্তি দেখলো ক্রিকেট বিশ্ব। শুভ কামনা।’