বাজিস-১ : বঙ্গবন্ধুর খুনি রশিদের ফাঁসির রায় কার্যকরের দাবি কুমিল্লাবাসীর

125

বাজিস-১
কুমিল্লা-খুনি রশিদ
বঙ্গবন্ধুর খুনি রশিদের ফাঁসির রায় কার্যকরের দাবি কুমিল্লাবাসীর
কুুমিল্লা (দক্ষিণ), ১৬ আগষ্ট, ২০২০, (বাসস): জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার মামলায় ফাঁসির দন্ডাদেশ প্রাপ্ত পলাতক অন্যতম আসামী কর্নেল (অব.) খন্দকার আবদুর রশিদ (কর্নেল রশিদ) কে অনতিবিলম্বে দেশে ফিরিয়ে এনে ফাঁসি কার্যকরের দাবি জানিয়েছেন কুমিল্লাবাসী। জেলার চান্দিনা উপজেলা আওয়ামীলীগ, অঙ্গ সংগঠন ও সুশীল সমাজ নেতৃবৃন্দ ওই দাবি জানিয়েছেন। ঘটনার ৪৫ বছর অতিবাহিত হলেও সকল আসামীদের ফাঁসি কার্যকর না হওয়ায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন নেতৃবৃন্দ। কর্নেল (অব.) খন্দকার আবদুর রশিদ (কর্নেল রশিদ) এর বাড়ি কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার কেরনখাল ইউনিয়নের ছয়ঘড়িয়া গ্রামে। তাই তার ফাঁসি কার্যকরের মধ্য দিয়ে কুমিল্লাবাসী দায়মুক্তি লাভ করতে চায়।
ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই এর সিনিয়র সহ-সভাপতি ও চান্দিনা উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি মুনতাকিম আশরাফ টিটু বাসসকে বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে দেশি ও আন্তর্জাতিক চক্রান্তে কতিপয় বিপথগামীরা সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যা করে। আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় এসে ওই হত্যা মামলার বিচার সম্পন্ন করে এবং বেশ কয়েকজন আসামীর ফাঁসির রায় কার্যকর করে। তিনি আরোও বলেন- যতদিন সব আসামীদের ফাঁসি কার্যকর না হচ্ছে ততদিন জাতি কলঙ্কমুক্ত হবে না। তাই অনতিবিলম্বে কর্নেল রশিদ সহ পলাতক আসামীদের ফাঁসির রায় কার্যকর করে চান্দিনাবাসীকে দায় মুক্ত করা হোক।
চান্দিনা উপজেলা আওয়ামীলীগ সিনিয়র সহ-সভাপতি ও চান্দিনা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীরমুক্তিযোদ্ধা তপন বক্সী বাসসকে বলেন, কর্নেল রশিদ এর কারণে চান্দিনাবাসী আজও কলঙ্কিত। তাকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিজ্ঞ আদালতের দেওয়া ফাঁসির রায় কার্যকর করলে চান্দিনাবাসী কলঙ্ক মুক্ত হবে। দ্রুত ফাঁসি কার্যকরের ব্যবস্থা গ্রহণে সরকারের প্রতি অনুরোধ জানান তিনি।
চান্দিনা পৌরসভার মেয়র ও পৌর আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক মো. মফিজুল ইসলাম বাসসকে বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু এবং উনার পরিবারের সদস্যদের যারা নির্মমভাবে হত্যা করেছে এদের অনেকের ফাঁসির রায় ইতোমধ্যে কার্যকর করা হয়েছে। কিন্তু কর্নেল রশিদ খন্দকারসহ যারা এখনো পলাতক রয়েছে তাদের গ্রেফতার করে ফাঁসি কার্যকর করার জন্য চান্দিনা পৌরবাসীর পক্ষ থেকে বিচারবিভােগর কাছে অনুরোধ জানাই। এ ফাঁসি কার্যকরের মধ্য দিয়ে চান্দিনাবাসী দায়মুক্তি লাভ করবে।
বীরমুক্তিযোদ্ধা নির্মল চন্দ্র দাস বাসসকে বলেন, আন্তর্জাতিক কূটনীতিক তৎপরতা আরও বেগবান করে পলাতক আসামী কর্নেল রশিদকে দেশে ফিরিয়ে আনতে সরকারের প্রতি অনুরোধ জানাই। আমরা জীবিত থাকতে তার মৃত্যুদন্ডাদেশ কার্যকর দেখতে চাই।
কুমিল্লা জজ কোর্টের স্পেশাল পিপি ও চান্দিনা উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট মহিউদ্দিন আহমেদ আলম বাসসকে বলেন, আমাদের প্রাণের দাবি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের হত্যাকান্ডের মামলায় ফাঁসির দন্ডাদেশ প্রাপ্ত পলাতক আসামী কর্নেল রশিদকে অনতিবিলম্বে আইনী প্রক্রিয়ায় দেশে ফিরিয়ে আনা হোক। মৃত্যুদন্ড কার্যকরের পদক্ষেপ নেওয়া হোক। তিনি আরোও বলেন- চান্দিনার মাটিতে আমরা তার লাশ দাফন-কাফনও করতে দেব না। উপজেলা আওয়ামীলীগের কার্যকরী কিমিটির সভায় এ বিষয়ে সর্বসম্মতিক্রমে এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।
উল্লেখ্য, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা মামলায় ফাঁসির দন্ডাদেশ প্রাপ্ত পলাতক আসামী কর্নেল (অব.) খন্দকার আবদুর রশিদ এর ৬.১২ একর সম্পত্তি বর্তমানে রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করা হয়। যা এখন চান্দিনা উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমির নিকট রক্ষণাবেক্ষণ এর দায়িত্বে রয়েছে। চান্দিনা উপজেলার কেরনখাল ইউনিয়নে ছয়ঘড়িয়া খন্দকার বাড়িতে তার একটি দোতলা বাসভবন রয়েছে। এর সামনেই কুমিল্লা জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এর নির্দেশনা দিয়ে বাজেয়াপ্ত ওই সম্পত্তিতে সর্বসাধারণের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
চান্দিনা উপজেলার কেরনখাল ইউনিয়নের ছয়ঘরিয়া গ্রাম, পৌর এলাকার বেলাশ্বর, মাইজখার ইউনিয়নের পানিপাড়া ও করতলা গ্রামে খন্দকার আবদুর রশিদ এর ক্রয়কৃত ও পৈত্রিক সম্পত্তি মিলিয়ে সর্বমোট ৬.১২ একর সম্পত্তি রয়েছে। কয়েকটি মামলা প্রক্রিয়া শেষে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মিস কেইস নং-০৩/২০১৫ মূলে বর্তমানে ওই সম্পত্তি রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করা হয়। কুমিল্লা জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এর নির্দেশনা অনুযায়ী উক্ত জমিগুলোর তফসিলসহ সাইনবোর্ড লাগিয়ে রাষ্ট্রের অনুকূলে দখলে নেয়া হয়েছে।
বাসস/সংবাদদাতা/১১৩৫/নূসী