বাংলাদেশে করোনায় ২৪ ঘন্টায় মারা গেছেন ৩৪ জন, সুস্থ ১,০১২

355

ঢাকা, ১৫ আগস্ট, ২০২০ (বাসস) : দেশে করোনাভাইরাস শনাক্তের ১৬১তম দিনে ২৪ ঘন্টায় এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ৩৪ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। আর সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ১২ জন।
গতকালও ৩৪ জন মৃত্যুবরণ করেছিলেন। এখন পর্যন্ত দেশে এ ভাইরাসে মৃত্যুবরণ করেছেন ৩ হাজার ৬২৫ জন। করোনা শনাক্তের বিবেচনায় আজ মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৩২ শতাংশ। ৫ আগস্ট থেকে মৃত্যুর একই হার বিদ্যমান রয়েছে।
আজ স্বাস্থ্য অধিদফতরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত এই সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে গত ২৪ ঘন্টায় হাসপাতাল এবং বাসায় মিলিয়ে সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ১২ জন। গতকালের চেয়ে ৭৪০ জন কম সুস্থ হয়েছেন। গতকাল সুস্থ হয়েছিলেন ১ হাজার ৭৫২ জন। এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ১ লাখ ৫৭ হাজার ৬৩৫ জন।
তিনি জানান, আজ শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৫৭ দশমিক ৪২ শতাংশ। আগের দিন এই হার ছিল ৫৭ দশমিক ৬১ শতাংশ। আগের দিনের চেয়ে আজ সুস্থতার হার দশমিক ১৯ শতাংশ কম।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘন্টায় ১২ হাজার ৮৯১ জনের নমুনা পরীক্ষায় ২ হাজার ৬৪৪ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। গতকালের চেয়ে আজ ১২২ জন কম শনাক্ত হয়েছেন। গতকাল ১২ হাজার ৮৫৬ জনের নমুনা পরীক্ষায় শনাক্ত হয়েছিলেন ২ হাজার ৭৬৬ জন। গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ২২ দশমিক ৫১ শতাংশ। আগের দিন এ হার ছিল ২২ দশমিক ৫২ শতাংশ। আগের দিনের চেয়ে আজ শনাক্তের হার দশমিক ০১ শতাংশ কম।
দেশে এ পর্যন্ত মোট ১৩ লাখ ৪১ হাজার ৬৪৮ জনের নমুনা পরীক্ষায় ২ লাখ ৭৪ হাজার ৫২৫ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। মোট পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ২০ দশমিক ৪৬ শতাংশ।
বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, ‘করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ১২ হাজার ৮০০ জনের। আগের দিন সংগ্রহ করা হয়েছিল ১৩ হাজার ৭৫৭ জনের। গতকালের চেয়ে আজ ৯৫৭টি নমুনা কম সংগ্রহ করা হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় দেশের ৮৭টি পরীক্ষাগারে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১২ হাজার ৮৯১ জনের। আগের দিন নমুনা পরীক্ষা হয়েছিল ১২ হাজার ৮৫৬ জনের। গত ২৪ ঘন্টায় আগের দিনের চেয়ে ৩৫টি বেশি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে।
২৪ ঘণ্টায় মৃত্যুবরণকারী ৩৪ জনের মধ্যে নারী ১০ জন, পুরুষ ২৪ জন। এখন পর্যন্ত মোট নারী মারা গেছেন ৭৬০ জন; ২০ দশমিক ৯৭ শতাংশ এবং পুরুষ মারা গেছেন ২ হাজার ৮৬৫ জন; ৭৯ দশমিক ০৩ শতাংশ। ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে মারা গেছেন ৩১ জন এবং বাড়িতে মারা গেছেন ৩ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ১ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ২ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ৯ জন এবং ৬০ বছরের ঊর্ধ্বে ২২ জন রয়েছেন। বয়সের হিসেবে এখন পর্যন্ত মারা যাওয়াদের মধ্যে শূন্য থেকে ১০ বছরের মধ্যে রয়েছে ১৯ জন; যা দশমিক ৫২ শতাংশ। ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে ৩৪ জন; যা দশমিক ৯৪ শতাংশ। ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ৯১ জন; যা ২ দশমিক ৫১ শতাংশ। ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ২৩০ জন; যা ৬ দশমিক ৩৪ শতাংশ। ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ৪৯৩ জন; যা ১৩ দশমিক ৬০ শতাংশ। ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ১ হাজার ২৩ জন; যা ২৮ দশমিক ২২ শতাংশ এবং ৬০ বছরের ঊর্ধ্বে রয়েছেন ১ হাজার ৭৩৫ জন; যা ৪৭ দশমিক ৮৬ শতাংশ।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকা বিভাগে মারা গেছেন ১৬ জন, চট্টগ্রাম ও খুলনা বিভাগে ৭ জন, রাজশাহী ও রংপুর বিভাগে ১ জন এবং সিলেট বিভাগে ২ জন মারা গেছেন। এ পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের বিভাগভিত্তিক বিশ্লেষণে ঢাকা বিভাগে মারা গেছেন ১ হাজার ৭৩৪ জন; যা ৪৭ দশমিক ৮৩ শতাংশ। চট্টগ্রাম বিভাগে ৮৩৪ জন; যা ২৩ দশমিক ০১ শতাংশ। রাজশাহী বিভাগে ২৩৪ জন; যা ৬ দশমিক ৪৬ শতাংশ। খুলনা বিভাগে ২৮৬ জন; যা ৭ দশমিক ৮৯ শতাংশ। বরিশাল বিভাগে ১৩৯ জন; যা ৩ দশমিক ৮৩ শতাংশ। সিলেট বিভাগে ১৭২ জন; যা ৪ দশমিক ৭৪ শতাংশ। রংপুর বিভাগে ১৪৬ জন; যা ৪ দশমিক ০৩ শতাংশ এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ৮০ জন; যা ২ দশমিক ২১ শতাংশ।
গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থতার সংখ্যা, ঢাকা বিভাগে ৫৯২ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৭৫ জন, রংপুর বিভাগে ৪৪ জন, খুলনা বিভাগে ১৩৭ জন, বরিশাল বিভাগে ২৯ জন, রাজশাহী বিভাগে ১০৮ জন এবং সিলেট বিভাগে ২৭ জন।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে যুক্ত হয়েছেন ৭৩৪ জন, ছাড় পেয়েছেন ২৮৮ জন। এ পর্যন্ত আইসোলেশনে যুক্ত হয়েছেন ৬১ হাজার ৪৯৩ জন এবং ছাড় পেয়েছেন ৪১ হাজার ২৮৪ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ২০ হাজার ২০৯ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় কোয়ারেন্টিনে যুক্ত হয়েছেন ১ হাজার ৯৫৪ জন, ছাড় পেয়েছেন ১ হাজার ৮২৭ জন। এখন পর্যন্ত কোয়ারেন্টিনে যুক্ত হয়েছেন ৪ লাখ ৬৫ হাজার ৯১৫ জন এবং ছাড় পেয়েছেন ৪ লাখ ১৩ হাজার ৬৪ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টিনে আছেন ৫২ হাজার ৮৫১ জন।
ঢাকা মহানগরীতে কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৭ হাজার ৬২টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তি রোগীর সংখ্যা ২ হাজার ২১৮ জন ও শয্যা খালি আছে ৪ হাজার ৮৪৪টি। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৩০৫টি, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি রোগী আছে ২০৪ জন ও শয্যা খালি আছে ১০১টি। চট্টগ্রাম মহানগরীতে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৭৮২টি, ভর্তিকৃত রোগীর সংখ্যা ২৫৪ জন ও শয্যা খালি আছে ৫২৮টি। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৩৯টি, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি আছে ১৭ জন ও শয্যা খালি আছে ২২টি। সারাদেশে অন্যান্য হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৭ হাজার ৪৩৬টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগীর সংখ্যা ১ হাজার ৮৯২ জন ও শয্যা খালি আছে ৫ হাজার ৫৪৪টি এবং আইসিইউ শয্যা রয়েছে ১৯৯টি ও আইসিইউ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগীর সংখ্যা ১০৪ জন ও শয্যা খালি আছে ৯৫টি । সারাদেশে হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ১৫ হাজার ২৮০টি, রোগী ভর্তি আছে ৪ হাজার ৩৬৪ জন এবং শয্যা খালি আছে ১০ হাজার ৯১৬টি। সারাদেশে আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৫৪৩টি, রোগী ভর্তি আছে ৩২৫ জন এবং খালি আছে ২১৮টি। সারাদেশে অক্সিজেন সিলিন্ডারের সংখ্যা ১২ হাজার ৫৮৪টি। সারাদেশে হাই ফ্লো নেজাল ক্যানেলা সংখ্যা ৩৫০টি এবং অক্সিজেন কনসেনট্রেটর ১৬০টি।
০১৩১৩-৭৯১১৩০, ০১৩১৩-৭৯১১৩৮, ০১৩১৩৭৯১১৩৯ এবং ০১৩১৩৭৯১১৪০ এই নম্বরগুলো থেকে হাসপাতালের সকল তথ্য পাওয়া যাবে। কোন হাসপাতালে কতটি শয্যা খালি আছে। কত রোগী ভর্তি ও কতজন ছাড় পেয়েছেন এবং আইসিইউ শয্যা খালি আছে কি না এই ফোন নম্বরগুলোতে ফোন করে জানা যাবে। এছাড়া www.dghs.gov.bd Gi CORONA কর্ণারে “করোনা বিষয়ক অভিযোগ প্রেরণ” লিঙ্ক অথবা http:/app.dghs.gov.bd/covid19-complain লিঙ্ক ব্যবহার করে করোনা বিষয়ক যেকোন অভিযোগ পাঠানো যাবে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, গত ২৪ ঘন্টায় স্বাস্থ্য বাতায়ন ১৬২৬৩ হটলাইন নম্বরে ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৮ হাজার ৪৫৯টি, ৩৩৩ এই নম্বরে ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৪৪ হাজার ৪৮১টি এবং আইইডিসিআর’র হটলাইন ১০৬৫৫, এই নম্বরে ফোন এসেছে গত ২৪ ঘন্টায় ২৭৫টি। সব মিলিয়ে ২৪ ঘন্টায় ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৫৩ হাজার ২০৬টি। এ পর্যন্ত হটলাইনে ফোনকল এসেছে ১ কোটি ৮৮ লাখ ৮৯ হাজার ৭৬টি।
করোনাভাইরাস চিকিৎসা বিষয়ে এ পর্যন্ত ১৬ হাজার ৪৯৮ জন চিকিৎসক অনলাইনে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন। এদের মধ্যে ৪ হাজার ২১৭ জন স্বাস্থ্য বাতায়ন ও আইইডিসিয়ার’র হটলাইনগুলোতে স্বেচ্ছাভিত্তিতে সপ্তাহে ৭ দিন ২৪ ঘন্টা জনগণকে চিকিৎসাসেবা ও পরামর্শ দিচ্ছেন। এছাড়া ২৪ ঘন্টায় কোভিড বিষয়ক টেলিমেডিসিন সেবা গ্রহণ করেছেন ৩ হাজার ৯৩৭ জন। এ পর্যন্ত শুধু কোভিড বিষয়ে স্বাস্থ্য সেবা গ্রহণ করেছেন ২ লাখ ৫ হাজার ৮৯ জন। প্রতিদিন ৩৫ জন চিকিৎসক ও ১০ জন স্বাস্থ্য তথ্যকর্মকর্তা দুই শিফটে মোট ৯০ জন টেলিমেডিসিন সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, দেশের বিমানবন্দর, নৌ, সমুদ্রবন্দর ও স্থলবন্দর দিয়ে গত ২৪ ঘন্টায় ১ হাজার ৯৬২ জনসহ সর্বমোট বাংলাদেশে আগত ৮ লাখ ২৩ হাজার ৭২০ জনকে স্কিনিং করা হয়েছে।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পরিস্থিতি তুলে ধরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ১৪ আগস্ট পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী ২৪ ঘন্টায় দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৬৯ হাজার ৯৪৩ জন। এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ২৯ লাখ ৩৪৭ জন। ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণ করেছেন ১ হাজার ১২০ জন এবং এ পর্যন্ত ৫৭ হাজার ৭৫৬ জন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ১৪ আগস্ট পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী সারাবিশ্বে ২৪ ঘন্টায় করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ২ লাখ ৮৬ হাজার ৭১০ জন। এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ২ কোটি ৭ লাখ ৩০ হাজার ৪৫৬ জন। ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণ করেছেন ৬ হাজার ৭১৩ জন এবং এ পর্যন্ত ৭ লাখ ৫১ হাজার ১৫৪ জন।