দেশে করোনায় মৃতের সংখ্যা কমেছে, বেড়েছে সুস্থতার হার

267

ঢাকা, ১৪ আগস্ট, ২০২০ (বাসস) : দেশে করোনাভাইরাস শনাক্তের ১৬০তম দিনে গত ২৪ ঘন্টায় এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা কমেছে। বেড়েছে সুস্থতার হার।
গত ২৪ ঘন্টায় দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আরও ৩৪ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। গতকালের চেয়ে আজ ১০ জন কম মৃত্যুবরণ করেছেন। গতকাল ৪৪ জন মৃত্যুবরণ করেছিলেন। এখন পর্যন্ত দেশে এ ভাইরাসে মৃত্যুবরণ করেছেন ৩ হাজার ৫৯১ জন। করোনা শনাক্তের বিবেচনায় আজ মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৩২ শতাংশ। গত ৫ আগস্ট থেকে মৃত্যুর একই হার বিদ্যমান রয়েছে ।
আজ স্বাস্থ্য অধিদফতরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত এই সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে গত ২৪ ঘন্টায় হাসপাতাল এবং বাসায় মিলিয়ে সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৭৫২ জন। এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ১ লাখ ৫৬ হাজার ৬২৩ জন।
আজ শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৫৭ দশমিক ৬১ শতাংশ। আগের দিন এই হার ছিল ৫৭ দশমিক ৫৫ শতাংশ। আগের দিনের চেয়ে আজ সুস্থতার হার শূন্য দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ বেশি।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ২৪ ঘন্টায় ১২ হাজার ৮৫৬ জনের নমুনা পরীক্ষায় ২ হাজার ৭৬৬ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। গতকালের চেয়ে আজ ৩০৬ জন বেশি শনাক্ত হয়েছে। গতকাল ১৩ হাজার ১৬২ জনের নমুনা পরীক্ষায় ২ হাজার ৬১৭ জনের দেশে করোনা শনাক্ত হয়েছিল।
গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ২১ দশমিক ৫২ শতাংশ। আগের দিন এ হার ছিল ১৯ দশমিক ৮৮ শতাংশ। আগের দিনের চেয়ে আজ শনাক্তের হার ১ দশমিক ৬৪ শতাংশ বেশি।
দেশে এ পর্যন্ত মোট ১৩ লাখ ২৮ হাজার ৭৫৭ জনের নমুনা পরীক্ষায় ২ লাখ ৭১ হাজার ৮৮১ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। মোট পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ২০ দশমিক ৪৬ শতাংশ।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ‘করোনাভাইরাস শনাক্ত করতে গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ১৩ হাজার ৭৫৭ জনের। আগের দিন সংগ্রহ করা হয়েছিল ১২ হাজার ৮৯২ জনের। গতকালের চেয়ে আজ ৮৬৫টি নমুনা বেশি সংগ্রহ করা হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় দেশের ৮৭টি পরীক্ষাগারে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১২ হাজার ৮৫৬ জনের। আগের দিন নমুনা পরীক্ষা হয়েছিল ১৩ হাজার ১৬২ জনের। গত ২৪ ঘন্টায় আগের দিনের চেয়ে ৩০৬টি কম নমুনা পরীক্ষা হয়েছে।
২৪ ঘণ্টায় মৃত্যুবরণকারী ৩৪ জনের মধ্যে নারী ৬ জন, পুরুষ ২৮ জন। এখন পর্যন্ত মোট নারী মারা গেছেন ৭৫০ জন; ২০ দশমিক ৮৯ শতাংশ এবং পুরুষ মারা গেছেন ২ হাজার ৮৪১ জন; ৭৯ দশমিক ১১ শতাংশ। ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে মারা গেছেন ৩৩ জন এবং বাড়িতে মারা গেছেন ১ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ২ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ৪ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ৬ জন এবং ৬০ বছরের ঊর্ধ্বে ২২ জন রয়েছেন। বয়সের হিসাবে এখন পর্যন্ত মারা যাওয়াদের মধ্যে শূন্য থেকে ১০ বছরের মধ্যে রয়েছে ১৯ জন; যা শূন্য দশমিক ৫৩ শতাংশ। ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে ৩৪ জন; যা শূন্য দশমিক ৯৫ শতাংশ। ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ৯১ জন; যা ২ দশমিক ৫৩ শতাংশ। ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ২২৯ জন; যা ৬ দশমিক ৩৮ শতাংশ। ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ৪৯১ জন; যা ১৩ দশমিক ৬৭ শতাংশ। ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ১ হাজার ১৪ জন; যা ২৮ দশমিক ২৪ শতাংশ এবং ৬০ বছরের ঊর্ধ্বে রয়েছেন ১ হাজার ৭১৩ জন; যা ৪৭ দশমিক ৭০ শতাংশ।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকা বিভাগে মারা গেছেন ১৮ জন, চট্টগ্রাম, রংপুর ও ময়মনসিংহ বিভাগে ২ জন করে, রাজশাহী ও সিলেট বিভাগে ৪ জন করে এবং খুলনা ও বরিশাল বিভাগে ১ জন করে মারা গেছেন। এ পর্যন্ত বিভাগভিত্তিক বিশ্লেষণে ঢাকা বিভাগে মারা গেছেন ১ হাজার ৭১৮ জন; যা ৪৭ দশমিক ৮৪ শতাংশ। চট্টগ্রাম বিভাগে ৮২৭ জন; যা ২৩ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ। রাজশাহী বিভাগে ২৩৩ জন; যা ৬ দশমিক ৪৯ শতাংশ। খুলনা বিভাগে ২৭৯ জন; যা ৭ দশমিক ৭৭ শতাংশ। বরিশাল বিভাগে ১৩৯ জন; যা ৩ দশমিক ৮৭ শতাংশ। সিলেট বিভাগে ১৭০ জন; যা ৪ দশমিক ৭৩ শতাংশ। রংপুর বিভাগে ১৪৫ জন; যা ৪ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ৮০ জন; যা ২ দশমিক ২৩ শতাংশ।
গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থতার সংখ্যা, ঢাকা বিভাগে ৬৩০ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ২৮০জন, রংপুর বিভাগে ১৪০ জন, খুলনা বিভাগে ১৬৯ জন, বরিশাল বিভাগে ৬৪ জন, রাজশাহী বিভাগে ২৯১ জন, সিলেট বিভাগে ৩৬ জন এবং ময়মনসিংহ বিভাগে সুস্থ হয়েছেন ১৪২ জন।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে যুক্ত হয়েছেন ৭৩৯ জন, ছাড়া পেয়েছেন ৬৮৪ জন। এ পর্যন্ত আইসোলেশনে যুক্ত হয়েছেন ৬০ হাজার ৭৫৯ জন এবং ছাড়া পেয়েছেন ৪০ হাজার ৯৯৬ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ১৯ হাজার ৭৬৩ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় কোয়ারেন্টিনে যুক্ত হয়েছেন ১ হাজার ৭৯৮ জন, ছাড়া পেয়েছেন ১ হাজার ৯৩৫ জন। এখন পর্যন্ত কোয়ারেন্টিনে যুক্ত হয়েছেন ৪ লাখ ৩৬ হাজার ৭৭৯ জন এবং ছাড়া পেয়েছেন ৩ লাখ ৮৯ হাজার ১৭৩ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টিনে আছেন ৪৭ হাজার ৬০৬ জন।
ঢাকা মহানগরীতে কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৭ হাজার ৬২টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তি রোগীর সংখ্যা ২ হাজার ১৬৮ জন ও শয্যা খালি আছে ৪ হাজার ৮৯৪টি। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৩০৫টি, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি রোগী আছে ১৯৬ জন ও শয্যা খালি আছে ১০৯টি। চট্টগ্রাম মহানগরীতে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৭৮২টি, ভর্তিকৃত রোগীর সংখ্যা ২৪৮ জন ও শয্যা খালি আছে ৫৩৪টি। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৩৯টি, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি আছে ১৫ জন ও শয্যা খালি আছে ২৪টি। সারাদেশে অন্যান্য হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৭ হাজার ৪৩৬টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগীর সংখ্যা ১ হাজার ৮৪৬ জন ও শয্যা খালি আছে ৫ হাজার ৫৯০টি এবং আইসিইউ শয্যা রয়েছে ১৯৯টি ও আইসিইউ শ্বজ্জায় ভর্তিকৃত রোগীর সংখ্যা ১০৩ জন ও শয্যা খালি আছে ৯৬টি । সারাদেশে হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ১৫ হাজার ২৮০টি, রোগী ভর্তি আছে ৪ হাজার ২৬২ জন এবং শয্যা খালি আছে ১১ হাজার ১৮টি। সারাদেশে আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৫৪৩টি, রোগী ভর্তি আছে ৩১৪ জন এবং খালি আছে ২২৯টি। সারাদেশে অক্সিজেন সিলিন্ডারের সংখ্যা ১২ হাজার ৫৯৩টি। সারাদেশে হাই ফ্লো নেজাল ক্যানেলা সংখ্যা ৩৫০টি এবং অক্সিজেন কনসেনট্রেটর ১৬০টি।
০১৩১৩-৭৯১১৩০, ০১৩১৩-৭৯১১৩৮, ০১৩১৩৭৯১১৩৯ এবং ০১৩১৩৭৯১১৪০ এই নম্বরগুলো থেকে হাসপাতালের সকল তথ্য পাওয়া যাবে। কোন হাসপাতালে কতটি শয্যা খালি আছে। কত রোগী ভর্তি ও কতজন ছাড় পেয়েছেন এবং আইসিইউ শয্যা খালি আছে কি না এই ফোন নম্বরগুলোতে ফোন করে জানা যাবে। এছাড়া িি.িফমযং.মড়া.নফ এর ঈঙজঙঘঅ কর্ণারে “করোনা বিষয়ক অভিযোগ প্রেরণ” লিঙ্ক অথবা যঃঃঢ়:/ধঢ়ঢ়.ফমযং.মড়া.নফ/পড়ারফ১৯-পড়সঢ়ষধরহ লিঙ্ক ব্যবহার করে করোনা বিষয়ক যেকোন অভিযোগ পাঠানো যাবে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, গত ২৪ ঘন্টায় স্বাস্থ্য বাতায়ন ১৬২৬৩ হটলাইন নম্বরে ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৮ হাজার ৮৯৫টি, ৩৩৩ এই নম্বরে ২৪ ঘন্টায় ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৪৭ হাজার ১০৯টি এবং আইইডিসিআর’র হটলাইন ১০৬৫৫, এই নম্বরে ফোন এসেছে গত ২৪ ঘন্টায় ৩২৭টি। সব মিলিয়ে ২৪ ঘন্টায় ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৫৬ হাজার ৩৩১টি। এ পর্যন্ত হটলাইনে ফোনকল এসেছে ১ কোটি ৮৮ লাখ ৩৫ হাজার ৮৭০টি।
করোনাভাইরাস চিকিৎসা বিষয়ে এ পর্যন্ত ১৬ হাজার ৪৯৮ জন চিকিৎসক অনলাইনে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন। এদের মধ্যে ৪ হাজার ২১৭ জন স্বাস্থ্য বাতায়ন ও আইইডিসিয়ার’র হটলাইনগুলোতে স্বেচ্ছাভিত্তিতে সপ্তাহে ৭ দিন ২৪ ঘন্টা জনগণকে চিকিৎসাসেবা ও পরামর্শ দিচ্ছেন। এছাড়া ২৪ ঘন্টায় কোভিড বিষয়ক টেলিমেডিসিন সেবা গ্রহণ করেছেন ৪ হাজার ২৫৬ জন। এ পর্যন্ত শুধু কোভিড বিষয়ে স্বাস্থ্য সেবা গ্রহণ করেছেন ২ লাখ ১ হাজার ১৫২ জন। প্রতিদিন ৩৫ জন চিকিৎসক ও ১০ জন স্বাস্থ্য তথ্যকর্মকর্তা দুই শিফটে মোট ৯০ জন টেলিমেডিসিন সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, দেশের বিমানবন্দর, নৌ, সমুদ্রবন্দর ও স্থলবন্দর দিয়ে গত ২৪ ঘন্টায় ৩ হাজার ৮৮৩ জনসহ সর্বমোট বাংলাদেশে আগত ৮ লাখ ২১ হাজার ৭৫৮ জনকে স্ক্রিনিং করা হয়েছে।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পরিস্থিতি তুলে ধরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ১৩ আগস্ট পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী ২৪ ঘন্টায় দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৭২ হাজার ৫৮২ জন। এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ২৮ লাখ ৩০ হাজার ৪০৪ জন। ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণ করেছেন ১ হাজার ৭২ জন এবং এ পর্যন্ত ৫৬ হাজার ৬৩৬ জন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ১৩ আগস্ট পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী সারাবিশ্বে ২৪ ঘন্টায় করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ২ লাখ ৭৬ হাজার ৩৯৮ জন। এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ২ কোটি ৪ লাখ ৩৯ হাজার ৮১৪ জন। ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণ করেছেন ৬ হাজার ৯৩৩ জন এবং এ পর্যন্ত ৭ লাখ ৪৪ হাজার ৩৮৫ জন।