ঢাকা জলবায়ু পরিবর্তনের বৈশ্বিক লড়াইয়ে যুবকদের অংশ গ্রহণ চায় : মোমেন

362

ঢাকা, ১৩ আগস্ট, ২০২০ (বাসস) : পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন আজ বলেছেন, বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবের প্রেক্ষিতে ন্যায় বিচার পাওয়ার লক্ষে বৈশ্বিক লড়াইয়ে দেশের যুবকদের অংশ গ্রহণ চায়।
‘কোস্টাল ইয়ুথ অ্যাকশন হাব’ এর উদ্বোধন উপলক্ষে ‘ক্লাইমেট ডায়লগ অন ইয়ং পিপল লিডিং কোস্টাল রিজিলেন্স টু ক্লাইমেট চেঞ্জ’ শিরোনামে এক ডিজিটাল আলোচনা সভায় বক্তব্য প্রদানকালে তিনি বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশের জন্য জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ন্যায্য ক্ষতিপূরণ আদায়ে বৈশ্বিক লড়াইয়ে আমাদের যুব সমাজের অংশ গ্রহণ চাই।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ সম্প্রতি ঘোষিত বিশেষ ‘ডেল্টা ফান্ড’ এর সহায়তা জরুরি জলবায়ু পরিস্থিতি মোকাবেলায় যুবকদের উদ্ভাবনী শক্তিকে কাজে লাগেতে বদ্ধপরিকর।
তিনি আরো বলেন, ‘আমি যুবকদের জলবায়ু পরিবর্তনের তথ্য ছড়িয়ে দিতে বলেছি। বিজ্ঞানকে ছড়িয়ে দিতে বলেছি। জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কে তথ্য ও সচেতনতা এবং পরিবেশে এর বিরূপ প্রভাবসমূহ সম্পর্কে সমাজের সবাইকে অবশ্যই জানিতে দিতে হবে।’
মোমেন বলেন, বাংলাদেশের অধিকাংশ জনগণই যুবক এবং সহ¯্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) বাস্তবায়নে তারাই সম্মুখ সারির যোদ্ধা। তাই ঢাকা আগামী দুই দশক এই জনসংখ্যা তাত্ত্বিক সুবিধা পাবার আশা করছে।
তিনি আরো বলেন, ‘‘আমাদের যুবক ও বিশেষত স্বেচ্ছাসেবকরা সাইক্লোন ও জরুরি ভিত্তিতে মানুষ সরিয়ে নেয়ার ক্ষেত্রে দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস ডিআরআর) দেশীয় ও পরীক্ষিত কৌশল চালানোর আমাদের প্রয়াসে প্রেরণা যোগাচ্ছে। এটা কার্যকরভাবে প্রাকৃতিক দুর্যোগের আঘাতে হতাহতের সংখ্যা হ্রাস করছে।’
মোমেন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশ উন্নয়নে যুবকদের অংশ গ্রহণ ও ক্ষমতায়নে অসামান্য সাফল্য অর্জন করে অন্যান্য অনেক উন্নয়নশীল দেশের জন্য রোল মডেলে পরিণত হয়েছে।
তিনি বলেন, আজ, জলবায়ু পরিবার্তনের হুমকি ও কোভিড-১৯ মহামারির বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জের প্রেক্ষিতে স্থানীয়, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে যুবকদের অংশ গ্রহণ অন্যান্য যে কোন সময়ের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
মোমেন আরো বলেন, কোভিড-১৯ এর হুমকি ও দ্রুত জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সৃষ্টি প্রতিকুল পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে স্পষ্টতই যুবকরা মানব ইতিহাসের সবচেয়ে কঠিন সময় পার করছে।
বাংলাদেশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এ ব্যাপারে আমাদের বদ্ধমূল ধারণা থাকতে হবে যে, কোভিড-১৯ এর চেয়েও জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সামাজিক ও অর্থনৈতিক ক্ষতির পরিমান হবে অনেক বেশি। পাশাপাশি এতে ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণহানিও হবে বেশি।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের এই সময়ে, জলবায়ু পরিবর্তন সবচেয়ে সংকটপূর্ণ বৈশ্বিক সমস্যা।
মোমেন আরো বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ২০৩০ সাল নাগাদ বাংলাদেশের গড় তাপমাত্রা ১.০ ডিগ্রী ও ২০৫০ সাল নাগাদ ১.৪ ডিগ্রি বেড়ে যাবে।
তিনি আরো বলেন, বিশ্বে প্রতি ৫৪ জনের মধ্যে একজন লোক এবং বাংলাদেশে প্রতি ৭ জনের মধ্যে একজন জলবায়ু পরিবর্তন জনিত কারণে গৃহহীন হবে।
মোমেন বলেন, ‘বাংলাদেশ অভিযোজনে বিশ্বের নেতৃত্ব দিচ্ছে।’
মন্ত্রী আরো বলেন, অভিজোযনের একটি সীমা রয়েছে। তাছাড়া দূষণ সৃষ্টিকারী দেশগুলো প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ ও প্রচেষ্টা না চালালে অভিজোযন বাড়বে না।
মোমেন আশা করেন যে, যুবকদের কর্মকেন্দ্রে অংশ গ্রহণ ঝুঁকিপূর্ণ উপক’লীয় যুবকদের জন্য আরো বেশি সুযোগ সৃষ্টি করবে এবং তাদের কথা বিশ্বের দরবারে ছড়িয়ে দিবে।
ক্লাইমেট পার্লামেন্ট বাংলাদেশ এর আহ্বায়ক নাহিম রাজ্জাক এমপি বিশেষ অতিথি হিসেবে ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন।
পিকেএসএফ-এর চেয়ারম্যান ড. কাজী খলিকুজ্জামান আহমেদ, কোপ-২৬ এর এশিয়া প্যাসিফিক ও দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক আঞ্চলিক দূত কেন ও’ফ্লাহের্থি, জলবায়ু পরিবর্তন এবং উন্নয়ন সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক কেন্দ্রের পরিচালক প্রফেসর ড. সালিমুল হক, এ্যাকশনএইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবির এবং ব্রিটিশ কাউন্সিলের ইনক্লুসিভ কমিউনিটিজ পরিচালক ড. শাহনাজ করিমও আলোচনায় অংশ নেন।