ইউরোপা লিগের সেমিফাইনালে সেভিয়া, শাখতার

192

ডুইসবার্গ, ১২ আগস্ট ২০২০ (বাসস) : লুকাস ওকাম্পোসের শেষ মুহূর্তের গোলে উলভারহ্যাম্পটন ওয়ান্ডার্সকে ১-০ গোলে পরাজিত করে ইউরোপা লিগের সেমিফাইনাল নিশ্চিত করেছে স্প্যানিশ ক্লাব সেভিয়া। আরেক ম্যাচে বাসেলকে ৪-১ গোলে উড়িয়ে দিয়ে শেষ চারের টিকিট পেয়েছে শাখতার দোনেস্ক। ম্যাচ শেষের দুই মিনিট আগে আর্জেন্টাইন মিডফিল্ডার ওকাম্পাসের হেডে সেভিয়ার জয় নিশ্চিত হয়।
আগামী রোববার কোলনে অনুষ্ঠিতব্য সেমিফাইনালে পাঁচ বারের বিজয়ী সেভিয়ার প্রতিপক্ষ ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। পরের দিন দ্বিতীয় সেমিফাইনালে খেলবে ইন্টার মিলান ও শাখতার।
পুরো ম্যাচেই সেভিয়া তাদের ইংলিশ প্রতিপক্ষের উপর আধিপত্য দেখিয়েছে। এর মাধ্যমে অনেকটাই পরিশ্রান্ত উল্ফসের ইউরোপীয়ান স্বপ্ন শেষ হয়ে গেল। সব ধরনের প্রতিযোগিতায় এ নিয়ে টানা ১৯ ম্যাচে অপরাজিত থাকলো সেভিয়া। ম্যাচ শেষে সেভিয়ার কোচ জুলেন লোপেতেগুই বলেছেন, ‘আমি খেলোয়াড়দের নিয়ে দারুন গর্বিত। একটি ভাল দলের বিপক্ষে খেলতে হলে আমাদের অবশ্যই অনেক বেশী ধৈর্য্যের প্রয়োজন ছিল। কঠোর পরিশ্রম করার ইচ্ছা ও লক্ষ্য দুটোই আমাদের মধ্যে রয়েছে। কিন্তু বিশে^র অন্যতম বড় দল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের বিপক্ষে আমরা মাঠে নামতে যাচ্ছি।’
ম্যাচের ১১ মিনিটে প্রিমিয়ার লিগের ক্লাব উল্ফসের হয়ে দারুন একটি সুযোগ সৃষ্টি করেছিলেন এ্যাডাম ট্রায়োরে। কিন্তু দিয়েগো কার্লোসের ফাউলে শেষ পর্যন্ত ট্রায়োরেকে থামতে হয়। এই ফাউলে অবশ্য হলুদ কার্ড দেখতে হয়েছে সেভিয়ার ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্ডারকে। বিপরীতে পেনাল্টি উপহার পাওয়া উল্ফসকে হতাশ করেন আগের আটটি পেনাল্টিতেই গোল পাওয়া রাউল জিমিনেজ। স্পট কিকের আগে জিমিনেজকে বেশ নার্ভাস মনে হচ্ছিল। তার দূর্বল স্পট কিকটি রক্ষা করতে সেভিয়ার মরোক্কান গোলরক্ষক ইয়সিন বুনুর খুব একটা কষ্ট করতে হয়নি। এই মিসেই মূলত পিছিয়ে পড়েছিল হতাশ উল্ফস।
এরপর থেকেই ম্যাচের নিয়ন্ত্রন ধীরে ধীরে নিজেদের করে নেয় সেভিয়া। অনেকটাই চাপে থাকা উল্ফস বাধ্য হয় প্রথমার্ধের বাকিটা সময় নিজেদের অর্ধেই থাকতে। যদিও সেভিয়া বেশ কয়েকটি গোলের সুযোগ হাতছাড়া করেছে। এক্ষেত্রে অবশ্য উল্ফসের রক্ষনভাগকেও সফল বলা যায়।
দ্বিতীয়ার্ধে প্রথম ভাল সুযোগটি আসে ৬৬ মিনিটে। সুসোর দুর্দান্ত একটি ক্রসে ফ্রেঞ্চম্যান জুলেস কুন্ডের শট অল্পের জন্য বারের উপর দিয়ে বাইরে চলে যায়। ১১ মিনিট পর এভার বানেগার ফ্রি-কিক রুখে দেন উল্ফস গোলরক্ষক রুই প্যাট্রিসিও। কিন্তু দুই মিনিট পর প্যাট্রিসিও আর উল্ফসকে রক্ষা করতে পারেননি। বানেগার ক্রসে লুকাম ওকাম্পাস দুর্দান্ত এক গোল করে দলকে সেমিফাইনালের টিকিট উপহার দেন।
এদিকে গেলসেনকার্চেনে বাসেলকে দাঁড়াতেই দেয়নি শাখতার। দুর্দান্ত এই জয়ে সেমিফাইনালে আগে শাখতারকে নিয়ে নতুন করে ভাবতেই হচ্ছে ইতালিয়ান জায়ান্ট ইন্টার মিলানকে।
ম্যাচের দুই মিনিটে প্রথম গোল করা জুনিয়র মোরায়েস বলেছেন, ‘আমি দারুন খুশী। কারন আমরা অনেক পরিশ্রম করেছি। ফাইনালে পৌঁছানোর ব্যাপারে আমরা আত্মবিশ^াসী। কেউ যদি নিজেকে পরীক্ষা করতে চায় তবে এই পর্যায়ে এই ধরনের উচ্চ মানের দলের বিপক্ষেই খেলা উচিৎ।’
মারলোসের কর্ণার থেকে ব্রাজিলিয়ান বংশোদ্ভূত মোরায়েস দুই মিনিটেই ইউক্রেনিয়ার দলকে দারুন দক্ষতায় এগিয়ে দেন। এরপর থেকে শাখতারকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। ২০ মিনিট পর টাইসন ব্যবধান দ্বিগুন করেন। তার ডিফ্লেকটেড শটে বাসেলের গোলরক্ষক ডোরডেক নিকোলিচের কিছুই করার ছিলনা। ৭৫ মিনিটে স্পট কিক থেকে দলের হয়ে তৃতীয় গোলটি করেন এ্যালান প্যাট্রিক। বক্সের ভিতর টাইসনকে ফাউলের অপরাধে বাসেল ডিফেন্ডার ইয়ানিক মারচান্দের বিপক্ষে পেনাল্টি আদায় করে নেয় শাখতার। ৮৮ মিনিটে তেতের সহযোগিতায় রাইট-ব্যাক ডোডে গোল করে দলকে বড় জয় উপহার দেন। স্টপেজ টাইমে রিকি ফন উল্ফসরিঙ্কেলের গোল সুইস দলটির হয়ে কেবল পরাজয়ের ব্যবধানই কমিয়েছে।