ব্রুনো ফার্নান্দেসের পেনাল্টিতে ইউরোপা লিগের সেমিফাইনালে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড

243

কোলোন, ১১ আগস্ট ২০২০ (বাসস) : অতিরিক্ত সময়ে ব্রুনো ফার্নান্দেসের পেনাল্টিতে এফসি কোপেনহেনেকে ১-০ গোলে পরাজিত করে ইউরোপা লিগের সেমিফাইনাল নিশ্চিত করেছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। করোনাভাইরাসের কারনে বন্ধ হয়ে যাওয়া টুর্নামেন্টের কোয়ার্টার ফাইনালসহ সেমিফাইনাল ও ফাইনাল অনুষ্ঠিত হবে জার্মানীতে। প্রতিটি ম্যাচই হবে সিঙ্গেল লেগ পদ্ধতিতে।
পর্তুগীজ তারকা ফার্নান্দেস এবারের আসরের সর্বোচ্চ গোলদাতা হিসেবে এখন পর্যন্ত সাত গোল করেছেন।
দিনের আরেক ম্যাচে ডাসেলড্রফে বায়ার লেভারকুজেনকে ২-১ গোলে পরাজিত করে শেষ চার নিশ্চিত করেছে ইতালিয়ান জায়ান্ট ইন্টার মিলান।
ম্যাচ শেষে ইউনাইটেড ম্যানেজার ওলে গানার সুলশার বলেছেন, ‘এই নিয়ে এবারের মৌসুমে তৃতীয়বারের মত আমরা সেমিফাইনালে উঠেছি। এভাবে পুরো মৌসুমে এগিয়ে যাওয়াটা সত্যিই কঠিন ও একইসাথে আনন্দের। আজকের জয়টা আমাদের প্রাপ্য ছিল। কোপেনহেগেনর গোলরক্ষক দুর্দান্ত খেলেছে। আমরাও বেশ কয়েকটি শট পোস্টে লাগিয়েছি। গোটা দুয়েক ভিএআর সিদ্ধান্ত আমাদের বিপক্ষে গেছে। এক পর্যায়ে মনে হচ্ছিল ম্যাচটি টাইব্রেকারে গড়াচ্ছে। তারা ম্যাচটা সত্যিকার অর্থেই কঠিন করে তুলেছিল।’
এবারের আসরে কোয়র্টার ফাইনাল থেকে প্রতিটি ম্যাচই দর্শকশুন্য স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত হয়েছে। জার্মানীর চারটি ভেন্যু কোলন, ডুইসবার্গ, ডাসেলডর্ফ ও গেলসেনকার্চেনে ম্যাচগুলো অনুষ্ঠিত হবে। পাঁচ মাস বন্ধ থাকার পর ইউরোপা লিগের নতুন ফর্মেটে ম্যাচগুলো অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
ফার্নান্দেস, পল পগবা, মার্কোস রাশফোর্ড, ম্যাসন গ্রীনউড ও এন্থনী মার্শালকে মূল দলে ডেকেছিলেন সুলশার। কিন্তু তা সত্বেও প্রথমার্ধে বেশ বেগ পেতে হয়েছে ২০১৭ বিজয়ীদের। কোপেনহেগেনের ১৮ বছর বয়সী ফরোয়ার্ড মোহাম্মদ ডারামি দুইবার ইউনাইটেডের রক্ষনভাগের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। ডারামির দারুন একটি প্রচেষ্টা রক্ষা করতে গিয়ে ইউনাইটেডের আইভরিয়ান ডিফেন্ডার এরিক বেইলিকে বেশ কষ্ট করতে হয়েছে। বিরতির ঠিক আগে অবশেষে রাশফোর্ড ইউনাইটেডের জন্য আশা দেখিয়েছিলেন। কিন্তু কোপেনহেগেনের গোলরক্ষক কার্ল-ইয়োহান জনসন কোন অঘটন হতে দেননি। রাশফোর্ডের দুর পাল্লার শট দারুন দক্ষতায় রুখে দেন এবারের আসরে দুর্দান্ত খেলা সুইডিশ গোলরক্ষক জনসন। গ্রীনউড ইউনাইটেডকে স্বস্তির গোল উপহার দিলেও ভিএআর রিভিউর মাধ্যমে অফ-সাইডের কারনে তা বাতিল হয়ে যায়।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে এই টিনএজ ফরোয়ার্ড খুব কাছে থেকে আরো একটি সুযোগ নষ্ট করেন। পর্তুগীজ ফরোয়ার্ড ফার্নান্দেস স্পোর্টিংয়ের হয়ে গ্রুপ পর্বে পাঁচ গোল করেছিলেন। এবার তাকে হতাশ করেন জনসন। ব্রায়ান অভিডিওর জোড়ালো শট শেষ মুহূর্তে এ্যারন ভন-বিসাকা না আটকালে কোপেনহেগেন হয়ত তখনই এগিয়ে যেতে পারতো।
১৯৯৭ সালের পর প্রথম কোন ড্যানিশ ক্লাব হিসেবে ইউরোপীয়ান কোন আসরের কোয়ার্টার ফাইনালে খেলেছে কোপেনহেগেন। ২০০৬ সালে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের গ্রুপ পর্বে শেষ বার যখন এই দুই দল মুখোমুখি হয়েছিল ইউনাইটেডকে ১-০ গোলে হারিয়েছিল ড্যানিশ চ্যাম্পিয়নরা। ম্যাচের শেষের দিকে মার্শাল আরো একবার ইউনাইটেডের ডেডলক ভাঙ্গার কাছাকাছি চলে গিয়েছিলেন। কিন্তু এবারও জনসন বাঁধা হয়ে দাঁড়ান। মার্শালের কার্লিন শটটি দারুন দক্ষতায় কর্ণারের মাধ্যমে রক্ষা করেন জনসন।
অতিরিক্ত সময়ের শুরুতে ফ্রেঞ্চ স্ট্রাইকার আরো একবার জনসনকে পরীক্ষার মুখে ফেলেন। কিন্তু এবার পেনাল্টি আদায় করে নেন মার্শাল। অতিরিক্ত সময়ের পাঁচ মিনিটে স্পট কিক থেকে ইউনাইটেডকে জয়সূচক গোল উপহার দেন ফার্নান্দেস। তারপরেও শেষ পর্যন্ত সুলশারের দলকে এই গোল ধরে রাখার জন্য কষ্ট করতে হয়েছে। বদলী খেলোয়াড় হুয়ান মাতার পর ভিক্টও লিন্ডেলফের শটও পোস্টে লেগে ফেরত আসে।
এদিকে দিনের আরেক ম্যাচে সাবেক ইউনাইটেড স্ট্রাইকার রোমেলু লুকাকুর গোলে এন্টোনি কন্টের ইন্টার মিলান ১৯৯১, ১৯৯৪ ও ১৯৯৮ সালের পর প্রথমবারের মত শিরোপা এত কাছে পৌঁছে গেছে।
ম্যাচের ১৫ মিনিটে নিকোলো বারেলার গোলে এগিয়ে গিয়েছিল ইন্টার। ছয় মিনিট পর ব্যবধান দ্বিগুন করেন লুকাকু। ২৫ মিনিটে জার্মান এ্যাটাকার কেভিন ভোলান্ডের সহযোগিতায় এক গোল পরিশোধ করেন কেই
হাভার্টজ। সম্ভবত লেভারকুসেনের হয়ে এটাই হাভার্টজের শেষ ম্যাচ। কিন্তু এই গোলেও শেষ রক্ষা হয়নি।