ঢাকা, ৯ আগস্ট, ২০২০(বাসস) : বৈশ্বিক মহামারী আর করোনাভাইরাসের ভয়াবহ সংক্রমণের মধ্যেও সীমিত পরিসরে ব্রাজিলে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব এবং মুক্তিযোদ্ধা শেখ কামালের জন্মবার্ষিকী পালিত হয়েছে।
আজ এখানে প্রাপ্ত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ব্রাজিলিয়াস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস যথাযথ ভাবগাম্ভীর্য ও প্রাণবন্ত পরিবেশে বঙ্গমাতার ৯০তম ও শেখ কামালের ৭১ তম জন্মবার্ষিকী পালন করা হয়। করোনা মহামারীর কারণে এবং ব্রাজিল সরকারের আরোপিত স্বাস্থ্যবিধি মেনে শুধুমাত্র দূতাবাস সদস্যদের অংশগ্রহনে এ অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ মুক্তিযুদ্ধে আত্মত্যাগকারী শহীদ, সম্ভ্রমহারা মা-বোন এবং ১৯৭৫ এর ১৫ আগস্টের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা করা হয়। বঙ্গবন্ধুসহ মুক্তিযুদ্ধের শহীদ, ১৫ আগষ্টে নির্মম হত্যাকান্ডে নিহত বঙ্গবন্ধু পরিবারের সকল শহীদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করা হয়। অনুষ্ঠানে করোনা ভাইরাস সৃষ্ট পরিস্থিতি থেকে বাংলাদেশসহ পুরো পৃথিবীর সকল মানুষকে রক্ষা করার জন্য বিশেষ প্রার্থনা করা হয়।
অনুষ্ঠানে বঙ্গমাতা এবং শেখ কামালের জীবনী ও কর্মের উপর ভিত্তি করে নির্মিত তথ্যবহুল তিনটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়।
আলোচনা পর্বে রাষ্ট্রদূত মোঃ জুলফিকার রহমান স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রেক্ষাপট বর্ণনা করে একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশ উপহার দেয়র জন্য বঙ্গবন্ধুকে কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করেন। এরপর তিনি বঙ্গবন্ধুর জীবনীর উপর আলোকপাত করে স্বাধীনতা অর্জনে তাঁর অবিস্মরণীয় অবদানের কথা উল্লেখ করে বলেন, বঙ্গবন্ধুর বঙ্গবন্ধু হয়ে ওঠার পেছনে মহীয়সী নারী বঙ্গমাতার যে অপরিসীম ভূমিকা আছে, তা কোন মতেই ভুলে যাবার নয়।
মুক্তিযুদ্ধের ঐতিহাসিক পটভূমি বিশ্লেষণ করে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু যখন ৭ মার্চের ভাষণের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তখন বঙ্গমাতা তাঁকে সাহস যুগিয়েছিলেন, তাঁর মনের কথা প্রকাশ করতে উৎসাহিত করেছিলেন। কোন লিখিত স্ক্রিপ্ট ছাড়াই বঙ্গবন্ধু সেদিন যে ঐতিহাসিক ভাষণ দিয়েছিলেন, বাঙালি জাতিকে স্বাধীনতা যুদ্ধের দিকনির্দেশনা দিয়েছিলেন, যার ফলশ্রুতিতে বাঙালি জাতি পেয়েছে স্বাধীনতা, সেই ভাষণই আজ বাংলাদেশের গন্ডি পেরিয়ে বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ। বিশ্ব পেয়েছে এক অনন্য সাধারণ দূরদর্শী রাজনৈতিক ভাষণ। আর এসব অনন্য অর্জনে বঙ্গমাতার বুদ্ধিদীপ্ত অবদান রাষ্ট্রদূত কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করেন।
রাষ্ট্রদূত বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠ পুত্র শহীদ শেখ কামালের মুক্তিযুদ্ধে এবং স্বাধীনতাত্তোর কালে দেশ জাতির উন্নয়নে অপরিসীম অবদানের কথা তুলে ধরেন।
রাষ্ট্রদূত জুলফিকার বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার লক্ষ্যে নিরলসভাবে কাজ করে যাওয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করে বিদ্যমান করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় সকলকে একযোগে কাজ করার আহবান জানান। তিনি আরো বলেন, করোনা পরিস্থিতি অর্থনৈতিকভাবে পুরো পৃথিবীকেই এক বিশাল চ্যালেঞ্জের মধ্যে ফেলে দিয়েছে। এ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে বাংলাদেশের ক্রমঃঅগ্রসরমান অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে সকলকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে আরো বেশী নিবেদিত হয়ে কাজ করতে হবে।