তৈরি পোশাক বাংলাদেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শিল্পখাত : আমু

457

ঢাকা, ২৬ জুলাই, ২০১৮ (বাসস) : শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু তৈরি পোশাক শিল্পকে বাংলাদেশের অর্থনীতির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শিল্পখাত হিসেবে অভিহিত করেছেন।
তিনি বলেন,বাংলাদেশের উদীয়মান এ শিল্পখাত নিয়ে অতীতেও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র ছিল এবং এখনও আছে। এখাতে আমাদের রপ্তানি প্রবৃদ্ধি ঠেকাতে প্রতিযোগীরা তৎপর রয়েছে। তবে কোনো অপতৎপরতা তৈরি পোশাক শিল্পখাতের অগ্রগতি ঠেকিয়ে রাখতে পারবে না বলে আমির হোসেন আমু মন্তব্য করেন।
শিল্পমন্ত্রী আজ রাজধানীর বসুন্ধরা আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে তৈরি পোশাক এবং চামড়া শিল্প সংশ্লিষ্ট ‘প্রিন্ট টেক বাংলাদেশ’ গারটেক্স বাংলাদেশ এবং ‘বাংলাদেশ লেদার অ্যান্ড ফুটওয়্যার এক্সপো’-এই ত্রিমাত্রিক আন্তর্জাতিক প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ মন্তব্য করেন।
বাংলাদেশ ইনডেন্টিং এজেন্টস্ অ্যাসোসিয়েশন (বিআইএএ) এবং লিমরা ট্রেড ফেয়ারস্ অ্যান্ড এক্সিবিশনস্ (প্রা:) লিমিটেড যৌথভাবে এ মেলার আয়োজন করে।
বিআইএএ’র প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ আইয়ুবের সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বগুড়া পল্লি উন্নয়ন একাডেমির পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার মোঃ নজরুল ইসলাম খান, বিএফএলএলএফইএ’র প্রতিনিধি শাহজালাল মজুমদার, বিজিএপিএমইএ’র সভাপতি মোঃ আব্দুল কাদের খান, বিইএমইএ’র সভাপতি মোঃ শাহনেওয়াজ চৌধুরী, বাংলাদেশ কটন এসোসিয়েশনের সভাপতি মেহেদী আলী, বাংলাদেশ সাইন ম্যাটারিয়ালস অ্যান্ড মেশিনারিজ ইম্পোর্টারস্ এসোসিয়েশনের সভাপতি হোসেন মোহাম্মদ ইমরান এবং লেদার ইঞ্জিনিয়ারস এন্ড টেকনোলজিষ্ট সোসাইটি বাংলাদেশ’র সাধারণ সম্পাদক এ কে এন মুশফিকুর রহমান বক্তব্য রাখেন।
শিল্পমন্ত্রী বলেন, বহির্বিশ্বে স্বার্থান্বেষী মহলের নেতিবাচক প্রচারণা সত্ত্বেও বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পখাতে ইতিবাচক প্রবৃদ্ধির ধারা বজায় রয়েছে। বাংলাদেশ এখন তৈরি পোশাক রপ্তানিতে বিশ্বে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে আছে। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে তৈরি পোশাক খাত থেকে বাংলাদেশের রপ্তানি আয় হয়েছে ৩০ দশমিক ৬১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে এর পরিমাণ ছিল ২৮ দশমিক ১৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
মন্ত্রী বলেন,বহির্বিশ্বে একই ধরনের নেতিবাচক প্রচারণা সত্ত্বেও সরকার এবং উদ্যোক্তাদের দৃঢ়তায় বাংলাদেশি চামড়া শিল্পখাতও অব্যাহত প্রবৃদ্ধির পথে এগিয়ে যাচ্ছে। গত এক দশকে আমাদের জুতা রপ্তানির পরিমাণ ৭ গুণ বেড়েছে। সদ্য বিদায়ী অর্থবছরে বাংলাদেশ জুতা রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করেছে বলে তিনি জানান।
আমির হোসেন আমু বলেন, রপ্তানি আয়, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, মূল্য সংযোজন ও জনগণের জীবন মানোন্নয়নে তৈরি পোশাক ও চামড়া শিল্পের ব্যাপক অবদান রয়েছে। শিল্পখাত দু’টির ধারাবাহিক উন্নতির জন্য সরকার নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি বলেন,‘আমরা ইতোমধ্যে গার্মেন্টস্ শিল্পের কর্মপরিবেশ উন্নয়ন, শ্রমিকদের নিরাপত্তা জোরদার, ন্যূনতম মজুরী নির্ধারণ, শিল্প কারখানা মনিটরিং, ২০১৩ সালের শ্রম আইন সংশোধনসহ উল্লেখ্যযোগ্য কমপ্লায়েন্স বাস্তবায়ন করেছি। ফলে দেশীয় গার্মেন্ট কারখানাগুলো ক্রমেই পরিবেশবান্ধব শিল্পে উন্নীত হচ্ছে।’
শিল্পমমন্ত্রী বলেন, তৈরী পোশাক শিল্পের পাশাপাশি চামড়া শিল্পের উন্নয়নে সাভারে আধুনিক চামড়া শিল্প-নগরি গড়ে তোলা হয়েছে। এ শিল্প-নগরিতে ট্যানারির সলিড বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যে কাজ চলছে। এরফলে চামড়া শিল্পখাতে রপ্তানি বৃদ্ধি ও পণ্য বৈচিত্রকরণের সুযোগ জোরদার হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
উল্লেখ্য, তিন দিনব্যাপী এ আন্তর্জাতিক প্রদর্শনীতে বিশে^র ১৩টি দেশ থেকে তৈরি পোশাক ও চামড়া শিল্প সংশ্লিষ্ট ২শ’ ২৩টি শিল্প উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠান অংশ নিচ্ছে। সাড়ে ৪ শতাধিক স্টলে এসব প্রতিষ্ঠান নিজেদের উৎপাদিত পণ্য, প্রযুক্তি ও যন্ত্রপাতি প্রদর্শন করছে। এটি শিল্প কারখানায় পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তির স্থানান্তরে মাধ্যমে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক ও চামড়া শিল্পখাতের গুণগত পরিবর্তনে ইতিবাচক অবদান রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।
প্রদর্শনী প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সকলের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।