নকল মাস্ক সরবরাহের অভিযোগে অপরাজিতার মালিক গ্রেফতার

233

ঢাকা, ২৫ জুলাই, ২০২০ (বাসস) : নকল মাস্ক সরবরাহের অভিযোগে অপরাজিতা ইন্টারন্যাশনালের মালিক শারমিন জাহানকে গ্রেফতার করেছে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) একটি দল। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সহকারি রেজিস্ট্রারও। শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে রাজধানীর শাহবাগ এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গণমাধ্যম শাখার প্রধান উপ-কমিশনার (ডিসি) ওয়ালিদ হোসেন শারমিনের গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করে আজ বাসসকে বলেন, শুক্রবার রাতে শাহবাগ এলাকার একটি বাসা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ডিবির একটি দল তাকে গ্রেফতার করে। পরে শারমিনকে ডিবি কার্যালয়ে আনা হয়েছে। আজ তাকে আদালতে প্রেরণ করা হবে বলেও জানান তিনি।
এরআগে নকল মাস্ক সরবরাহের অভিযোগে অপরাজিতা ইন্টারন্যাশনালের স্বত্বাধিকারী শারমিন জাহানের বিরুদ্ধে রাজধানীর শাহবাগ থানায় একটি মামলা করে বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষ।
নকল ও ত্রুটিপূর্ণ মাস্ক সরবরাহ করার অভিযোগে গত বৃহস্পতিবার রাতে বিএসএমএমইউ’র প্রক্টর বাদী হয়ে এ মামলা করে। শুক্রবার রাতে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন শাহবাগ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবুল হাসান।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালের করোনা ইউনিটে নকল ‘এন-৯৫’ মাস্ক সরবরাহের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় তাকে গ্রেফতার করা হয়।
শারমিনের সরবরাহকৃত মাস্কের কারণে করোনা চিকিৎসায় জড়িত ডাক্তার ও নার্সসহ কোভিড-১৯ সম্মুখযোদ্ধাদের জীবন মারাত্মক ঝুঁকিতে পড়েছে বলে মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়।
শারমিন জাহান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগে স্নাতকোত্তর শেষে বিশ্ববিদ্যালয়েরই প্রশাসন-১ শাখায় সহকারী রেজিস্ট্রার হিসেবে যোগদান করেন। তার বাড়ি নেত্রকোনার পূর্বধলার শ্যামগঞ্জের গোহালকান্দায়। মামলায় বিএসএমএইউয়ের প্রক্টর মো. মোজাফফর আহমেদ জানিয়েছেন, গত ২৭ জুন শারমিন জাহানকে ১১ হাজার মাস্ক সরবরাহের কার্যাদেশ দেয় বিশ্ববিদ্যালয়। কার্যাদেশের বিপরীতে তিনি ৩০ জুন প্রথম দফায় ১ হাজার ৩০০টি, ২ জুলাই দ্বিতীয় ও তৃতীয় দফায় ৪৬০টি ও ১ হাজার এবং ১৩ জুলাই চতুর্থ দফায় ৭০০টি মাস্ক সরবরাহ করে। প্রথম ও দ্বিতীয় দফার মাস্কে কোনো সমস্যা ছিল না। তৃতীয় ও চতুর্থ দফায় লট বিতরণ ও ব্যবহারে ত্রুটি পাওয়া যায় এবং মাস্কের গুণগত মান স্পেসিফিকেশন অনুযায়ি পাওয়াা যায়নি। কোনো মাস্কের বন্ধনি ফিতা ছিঁড়ে গেছে, কোনো মাস্কের ছাপানো লেখায় ত্রুটিপূর্ণ ইংরেজি লেখা পাওয়া গেছে, কোনো-কোনো মাস্কের নিরাপত্তা কোড ও লট নম্বর প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটে গিয়ে নকল বলে জানা গেছে।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শারমিন জাহানকে ১৮ জুলাই কারণ দর্শানোর নোটিশও দিয়েছিল। তিনি ২০ জুলাই দেওয়া জবাবে এ ঘটনার জন্য ‘দুঃখ প্রকাশ’ করেন।
গ্রেফতারের আগে মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে শারমিন জাহান গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, তিনি নকল মাস্ক সরবরাহ করেননি। বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ এত দিন পর এসে বলছেন মাস্কে ত্রুটি ছিল। এটা ঠিক নয়। এখানে তিনি ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছেন বলেও দাবি করেন।