বরিশালে “ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ” পৌঁছে দিতে ‘দুর্যোগে আলোর গেরিলা’ কর্মীরা পরিশ্রম করে যাচ্ছে

388

॥ শুভব্রত দত্ত ॥
বরিশাল, ২৫ জুলাই ২০২০ (বাসস) : আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে নিরবচ্ছিন্ন “ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ” পৌঁছে দিতে বরিশাল পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ‘দুর্যোগে আলোর গেরিলা’ কর্মীরা নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে আলাপকালে গৌরনদী উপজেলার মাহিলারা এ.এন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ইলিয়াস সিকদার বলেন, বর্তমান সরকার গ্রামীণ জনপথের প্রত্যন্ত এলাকায় ব্যাপক ভাবে বিদ্যুৎ পৌছে দেয়ায় লেখা-পড়ার মান অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। এক সময় কেরোসিন কিনে কুপি বা হ্যারিকেন জ্বালিয়ে শিক্ষার্থীদের পড়া-লেখা করতে হতো। বর্তমনে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ বৃদ্ধি পাওয়াতে লেখা পড়া অনেকটাই সহজ হয়েছে। ছেলে-মেয়েরা গভীর রাত পর্যন্ত লেখা-পড়া করার সুযোগ পাচ্ছে। এছাড়া ঘরে ঘরে বিদ্যুৎতের সুবাধে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে এর সুফল ভোগ করছে নতুন প্রজন্ম।
এবিষয়ে বরিশাল পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ব্যবস্থাপনা বিভাগ বাসস’কে জানায়, সবাই যখন করোনা ভাইরাস থেকে নিরাপদ থাকার জন্য ঘরবন্দী অবস্থায় রয়েছেন, তখন ঘরে ঘরে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ পৌঁছে দিতে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ‘দুর্যোগে আলোর গেরিলা’ কর্মীরা নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছে। চলমান করোনা ভাইরাসের মধ্যেই বিগত ২০ মে সাইক্লোন আম্পানের আঘাতে সকল গ্রাহক বিদ্যুৎ বিহীন হয়ে পড়েন। পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মীদের আন্তরিকতা, কঠোর পরিশ্রম এবং গ্রহকদের সহযোগিতায় দ্রুততম সময়ের মধ্যেই সকলকে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেয়া সম্ভব হয়েছে। প্রতিটি ইউনিয়ন ও গ্রামে শতভাগ বিদ্যুৎয়ানের ফলে প্রায় প্রতিটি পরিবার বিদ্যুতের শতভাগ সুবিধা ভোগ করছেন। ইতিমধ্যে জেলার ১০টি উপজেলায় প্রায় শতভাগ বিদ্যুতায়নের কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সুত্র আরো জানায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগ “ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ” প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির বিদ্যুৎকর্মীদের সমন্বয়ে বেশ কয়েকটি টিম গঠন করা হয়েছে। বিগত দু’সপ্তাহ যাবৎ গঠনকৃত টিমের সদস্যরা সচেতনতামূলক প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছে।
এবিষয়ে গৌরনদী উপজেলার মাহিলারা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান পিকলু গুহ জানান, উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের গ্রামীণ হাট-বাজার, মসজিদ, মাদ্রাসা, এতিমখানা, মন্দির ও স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠানগুলোর মাঝে বিদ্যুৎ পৌছে দেয়া হয়েছে। এছাড়া কিছু সোলার হতদরিদ্রদের মাঝেও দেওয়া হয়েছে যাদের ঘরে বিদ্যুৎ নেই। এ বিদ্যুৎ সুবিধার মাধ্যমে এখানকার গ্রামীণ জনগোষ্ঠী হয়ে উঠছে স্বনির্ভর ও স্বাবলম্বী। বর্তমানে ইউনিয়নের প্রত্যন্ত গ্রামীণ জনপদ বিদ্যুৎতের নিরবচ্ছিন্ন আলোয় আলোকিত হচ্ছে।
এব্যপারে বরিশাল পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি ১-এর জেনারেল ম্যানেজার প্রকৌশলী মো: শাহ্জাহান তালুকদার বলেন, গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নের পাশাপাশি গ্রামীণ অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতে বিদ্যুৎ সুবিধা বৃদ্ধি ও সরবরাহ অপরিহার্য এবং এর কোন বিকল্প নেই। এছাড়া বিদ্যুৎ যথাযথ ভাবে বিতরণে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের তদারকি রয়েছে।
এদিকে, বরিশাল পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি ২-এর জেনারেল ম্যানেজার প্রকৌশলী মোঃ একরামুল হক বলেন, গ্রামীণ জনগেষ্ঠিীকে আরো অধিক বিদ্যুৎ সুবিধা দিতে বিদ্যুৎ উৎপাদন ও সরবরাহ কর্তৃপক্ষ নিরলস কাজ করছেন। তিনি বিদ্যুতের উৎপাদন, বিদ্যুৎ লাইন সম্প্রসারণ ও সিস্টেম লস কমিয়ে আনা হবে বলে প্রতিশ্রুতি প্রদান করেন।