বাসস দেশ-২২ : বন্যার পানি কমছে সিলেট ও সুনামগঞ্জে

217

বাসস দেশ-২২
বন্যা-পরিস্থিতি
বন্যার পানি কমছে সিলেট ও সুনামগঞ্জে
সিলেট, ২৪ জুলাই, ২০২০ (বাসস) : সিলেট ও সুনামগঞ্জের বন্যার পানি কমতে শুরু করেছে। গত ২৪ ঘন্টায় সিলেট জেলার দু’একটি পয়েন্ট ছাড়া বাকি সবগুলো পয়েন্টে বন্যার পানি নেমে যাচ্ছে।
এই দুই এলাকায় সরেজমিন গিয়ে এবং সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে এই চিত্র দেখা গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, গত তিনদিন বৃষ্টিপাত তুলনামূলকভাবে কম হওয়ায় ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলও কম থাকায় নদী এবং হাওরগুলোতে পানির উচ্চতা কমছে। হাওর বেষ্টিত সুনামগঞ্জের সবকটি নদীর পানি গত দু’দিন ধরে কমতে থাকায় বন্যায় পানিবন্দি মানুষের মধ্যে কিছুটা স্বস্তি এসেছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সিলেট ও সুনামগঞ্জ অফিস জানিয়েছে, আজ শুক্রবার বিকেল ৩টা পর্যন্ত সুরমা নদীর পানি সিলেটের কানাইঘাট পয়েন্টে পানির উচ্চতা ছিলো ১২.৯৫ মিটার, যা বিপদসীমার ২০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গত ২৪ ঘন্টায় এই পয়েন্টে ২১ সেন্টিমিটার পানি কমেছে।
একই সময়ে সিলেট পয়েন্টে সুরমার পানির প্রবাহ ছিল ১০.৪৭ মিটার, এখানে পানি বিপদসীমার ৩৩ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গত ২৪ ঘন্টায় এ পয়েন্টে পানি কমেছে ১৯ সেন্টিমিটার।
আজ শুক্রবার বিকেল ৩ টা পর্যন্ত কুশিয়ারা নদীর পানির উচ্চতা ছিলো সিলেটের জকিগঞ্জ আমলশিদ পয়েন্টে ১৫.২৩ মিটার, যা গতকালের চেয়ে আজ এই পয়েন্টে পানি বেড়েছে ৬ সেন্টিমিটার। এখানে পানি বিপদসীমার ২৩ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
একই সময়ে সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে কুশিয়ারা নদীতে পানি প্রবাহিত হচ্ছে ৯.৯৪ মিটার উচ্চতা দিয়ে, গত একদিনে এখানে পানি কমেছে ৩ সেন্টিমিটার। এ পয়েন্টে বিপদসীমা ৯.৪৫ মিটার। অর্থাৎ এ পয়েন্টে পানি বিপদসীমার ৪৯ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে এখনো প্রবাহিত হচ্ছে।
বিয়ানীবাজার শেওলা পয়েন্টে কুশিয়ারার পানির উচ্চতা শুক্রবার বিকেল ৩টায় ছিল ১২.৬১ মিটার, যা বিপদসীমার ৪৪ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। শেরপুর পয়েন্টে কুশিয়ারার পানি আজ শুক্রবার বিকেল ৩টায় প্রবাহিত হচ্ছে ৮.৩৫ মিটার উচ্চতা দিয়ে, যা বিপদসীমার ২০ সেন্টিমিটার নীচে। এই পয়েন্টে বিপদসীমা হচ্ছে ৮.৫৫ মিটার। এখানে একদিনে পানি কমেছে ৪ সেন্টিমিটার।
এদিকে পানি অনেকটা কমেছে সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার সারি নদীতে। শুক্রবার বিকেল ৩টা পর্যন্ত সারি নদীর পানি সারিঘাট পয়েন্টে ১০.৯২ উচ্চতা দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিলো, গত ২৪ ঘন্টায় এখানে পানি কমেছে ২৩ সেন্টিমিটার, যা বিপদসীমার ১.৪৩ মিটার নীচে। ওই পয়েন্টে পানির বিপদসীমা হচ্ছে ১২.৩৫ মিটার।
অন্যদিকে, কানাইঘাটের লোভা নদীর পানি আজ বিকেল পর্যন্ত ১৩.৯৫ মিটার উচ্চতা দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গত ২৪ ঘন্টায় ২৩ সেন্টিমিটার পানি কমেছে এই পয়েন্টে।
এদিকে সুনামগঞ্জ জেলায় বিভিন্ন নদ-নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। গত ২৪ ঘন্টায় জেলার সবগুলো পয়েন্টে নদ-নদীর পানি কমেছে। সুরমা নদীর পানি জেলা সদরের ষোলঘর পয়েন্টে শুক্রবার বিকেল ৩টা পর্যন্ত ৭.৭৬ মিটার উচ্চতা দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিলো। গত একদিনে এখানে পানি কমেছে ২০ সেন্টিমিটার। যা বিপদসীমার ৪ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। একই দিন ও সময়ে জেলার ছাতক পয়েন্টে ১০.২৭ মিটার উচ্চতা দিয়ে পানি যাচ্ছে। গত একদিনে এখানে পানি কমেছে ২৮ সেন্টিমিটার। যা বিপদসীমার ১.১৩মিটার উপর দিয়ে এখনো প্রবহিত হচ্ছে।
জেলার অন্যান্য উপজেলার চেয়ে ছাতক উপজেলায় পানির উচ্চতা এখনো বেশি। দিরাই উপজেলার কালনি নদীতে আজ বিকেল পর্যন্ত পানির উচ্চতা হচ্ছে ৬.৮৯ মিটার, গত একদিনে এখানে পানি কমেছে ৬ সেন্টিমিটার। যা বিপদসীমার ৩৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।
একই সময়ে তাহিরপুর উপজেলার জাদুকাটা নদীতে ৭.০৬ মিটার উচ্চতা দিয়ে পানি যাচ্ছে। গত একদিনে ১৭ সেন্টিমিটার পানি কমেছ ওই পয়েন্টে। এই স্থানে পানির বিপদসীমা হচ্ছে ৮.০৫ মিটার। বর্তমান পানির উচ্চতা বিপদসীমার ৯৯ সেন্টিমিটার নীচে।
তবে বৃষ্টিপাত কম হলেও উজান থেকে আসা পাহাড়ি ঢল যদি চাপ সৃষ্টি না করে তাহলে এসব এলাকায় বন্যার পানি দ্রুত নেমে যাবে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা।
বাসস/সংবাদদাতা/এমএন/২০০৩/এএএ