বাসস দেশ-২৮ : বিচারপতি ভবানী প্রসাদ সিংহকে বিদায়ী সংবর্ধনা

175

বাসস দেশ-২৮
বিচারপতি-সংবর্ধনা
বিচারপতি ভবানী প্রসাদ সিংহকে বিদায়ী সংবর্ধনা
ঢাকা, ২৩ জুলাই, ২০২০ (বাসস) : আজ শেষ কর্মদিবসে হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি ভবানী প্রসাদ সিংহকে বিদায়ী সংবর্ধনা দিয়েছে এটর্নি জেনারেল কার্যালয় ও সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতি (সুপ্রিমকোর্ট বার)।
আজ দুপুরে ভার্চ্যুয়ালি তাকে এ সংবর্ধনা দেয়া হয়। এটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও সুপ্রিমকোর্ট বারের পক্ষে সভাপতি এ এম আমিন উদ্দিন তার কর্মময় জীবন নিয়ে বক্তব্য তুলে ধরেন।
তার জবাবে বক্তৃতা করেন বিচারপতি ভবানী প্রসাদ সিংহ। তিনি বলেন, বার ও বেঞ্চ একে অপরের পরিপূরক। বার ছাড়া যেমন বেঞ্চের অস্তিত্ব থাকে না। তেমন বেঞ্চ ছাড়া বারের অস্তিত্ব থাকে না। তাই আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য, বিচারপ্রার্থী জনগণকে সুষ্ঠু ও ন্যায় বিচার প্রদানের জন্য বার এবং বেঞ্চের মধ্যে সুন্দর ও সৌহার্দপূর্ণ সম্পর্ক থাকা অত্যন্ত আবশ্যক।
তিনি বলেন, ‘চাকরির চিরন্তন নিয়ম অনুযায়ী আজ চাকরি থেকে বিদায় নিতে যাচ্ছি। আমি চাকরি থেকে বিদায় নিচ্ছি এতে আমার কোনো কষ্ট নেই, মানসিক কোনো দু:খ নেই বরং আমি ভারমুক্ত। তবে আমার কষ্ট হচ্ছে যাদের সঙ্গে আমি এতদিন ছিলাম, তাদের ফেলে যেতে আমার কষ্ট হচ্ছে। আমি আমার চাকরি জীবনে সম্পূর্ণ সৎ থেকে ন্যায়-নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করার চেষ্টা করেছি।’
বিদায়ী এ বিচারপতি জ্যেষ্ঠ আইনজীবীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনাদের সঙ্গে যারা জুনিয়র আইনজীবী আছেন, তারা যেন বর্তমান কঠিন সামাজিক প্রেক্ষাপটে তাদের পরিবাবর পরিজন নিয়ে সুষ্ঠুভাবে এবং সম্মান জনকভাবে বাঁচতে পারে সেদিকে খেয়াল রাখবেন। কেননা আমিও একদিন জুনিয়র আইনজীবী ছিলাম। তাই জুনিয়রদের দু:খ বুঝি।
এ সময় অতিরিক্ত এটর্নি জেনারেল মুরাদ রেজা, সুপ্রিমকোর্ট বার-এর সম্পাদক ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, ডেপুটি এটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবনাথ, ড. মো. বশির উল্লাহ, প্রতিকার চাকমা, এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক, অমিত দাসগুপ্তসহ আইনজীবীরা ভিডিও কনফারেন্সে বিদায়ী সম্বর্ধনায় যুক্ত ছিলেন।
বিচারপতি ভবানী প্রসাদ সিংহ নারায়ণগঞ্জের চাঞ্চল্যকর সাত খুন মামলা, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) ইংরেজি বিভাগের ছাত্র জুবায়ের আহমেদ হত্যা, জাসদ ছাত্রলীগের ঢাকা মহানগর শাখার সহ-সাধারণ সম্পাদক মোমিন, লক্ষ্মীপুরে স্কুলছাত্রী স্মৃতি নাথ সীমাকে ধর্ষণের পর হত্যা এবং নরসিংদীর সিক্স মার্ডারের মতো আলোচিত মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের ওপর রায় দিয়েছিলেন।
বিচারপতি ভবানী প্রসাদ সিংহ ১৯৫৩ সালের ৮ আগস্ট জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ইংরেজিতে এম এ এবং এল এল বি ডিগ্রি অর্জনের পর সনদ পেয়ে ১৯৭৯ সালের ১ মার্চ জেলা বারে আইনজীবী হিসেবে তালিকভুক্ত হন। পরবর্তীতে তিনি ১৯৮৩ সলের ২০ এপ্রিল মুন্সিফ হিসেবে (সহকারী জজ) বিচার বিভাগে যোগদান করেন। ২০০০ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি তিনি জেলা ও দায়রা জজ হিসেবে পদোন্নতি পান।
২০১০ সালের ১২ ডিসেম্বর তাকে দুই বছরের জন্য হাইকোর্টের অতিরিক্ত বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। ২০১২ সালের ১০ ডিসেম্বর হাইকোর্টের স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান তিনি।
সংবিধান অনুসারে ৬৭ বছর বয়স পূর্ণ হলে অবসরে যান সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিরা। সেই অনুসারে ৭ আগস্ট তার ৬৭ বছর পূর্ণ হবে। এরমধ্যে কাল শুক্রবার ২৪ জুলাই থেকে সুপ্রিমকোর্টের অবকাশকালীন ছুটি শুর হচ্ছে। এটি শেষ হবে ৮ আগস্ট শনিবার। এ কারণে আজ বৃহস্পতিবার তার শেষ কর্মদিবস হিসেবে তাকে সংবর্ধনা দেয়া হয়।
বাসস/এএসজি/ডিএ/১৯৩৫/-শআ