বাসস বিদেশ-৯ : ভ্যাকসিন তৈরিতে কাজ করছে বিশ্বের বহু দেশ

104

বাসস বিদেশ-৯
কোভিড- ভ্যাকসিন
ভ্যাকসিন তৈরিতে কাজ করছে বিশ্বের বহু দেশ
বেইজিং, ২২ জুলাই, ২০২০(বাসস ডেস্ক) : ভ্যাকসিনের অপেক্ষায় পুরো বিশ্ববাসী। আর এই ভ্যাকসিন তৈরিতে কাজ করছে পৃথিবীর অনেকগুলো দেশ। তবে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা এই দেশগুলোর প্রতি ভ্যাকসিন তৈরিতে বস্তুনিষ্ঠ, যৌক্তিক ও বৈজ্ঞানিক মনোভাব সম্পন্ন হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
বিশ্বে অন্তত ২৪টি দেশ তাদের ভ্যাকসিনের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল চালাচ্ছে। আরো ১৪২ টি দেশ প্রিক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে রয়েছে।
সোমবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রকাশিত উপাত্ত থেকে এ কথা জানা গেছে।
এদিকে করোনা ভ্যাকসিনের দ’ুটি গবেষণা সম্প্রতি বিখ্যাত দ্য লানসেট মেডিক্যাল জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। এর একটি আস্ট্রাজেনকার সাথে যৌথভাবে অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি যে ভ্যাকসিনটি নিয়ে গবেষণা করছে সেটি এবং অপরটি চীনের ক্যাসনিনো বায়োলজিকস এর।
লানসেটের সর্বশেষ সংস্করণে বলা হয়েছে, এ দ’ুটি ভ্যাকসিন নিয়ে করা গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষার ফলাফল আশ্বস্ত হওয়ার মতো। ভ্যাকসিন দ’ুটি মানব দেহের জন্যে নিরাপদ ও অ্যান্টিবডি তৈরিতে সক্ষম।
লানসেটে প্রকাশিত এই গবেষণা তথ্য কোভিড- ১৯ এর ভ্যাকসিনের ক্ষেত্রে বড়ো ধরণের অগ্রগতি হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।
এছাড়া রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, গামালেয়া সায়েন্টিফিক রিসার্চ ইন্সস্টিটিউট অব এপিডেমায়োলজি এন্ড মাইক্রোবায়োলজির সঙ্গে যৌথভাবে তারা ভ্যাকসিনের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শেষ করেছে।
যেসব স্বেচ্ছাসেবক এ ট্রায়ালে অংশ নিয়েছে কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া তাদের সকলের অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে এবং তারা ভালো আছে।
জার্মান বায়োটেক কোম্পানী বায়োএনটেক ও মার্কিন ঔষধ কর্পোরেশন ফাইজার ঘোষণা করেছে, তাদের পরীক্ষাধীন কোভিড- ১৯ এর ফলাফলে দেখা গেছে তা নিরাপদ ও কার্যকর।
চলতি মাসের প্রথমদিকে অন্যান্য দেশের গবেষণা প্রতিষ্ঠানও তাদের ভ্যাকসিন পরীক্ষার অগ্রগতির খবর জানিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইন্সস্টিটিউট অব এলার্জি এন্ড ইনফেকশাস ডিজিজ এবং বায়োটেক ফার্ম মর্ডানার তৈরি
ভ্যাকসিনটির দ্বিতীয় ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের পর একে কার্যকর ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াশূন্য হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
এছাড়া অন্যান্যের মধ্যে অষ্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ড, থাইল্যান্ডের চুলালংকর্ণ ইউনিভার্সিটি তাদের ভ্যাকসিন পরীক্ষার ইতিবাচক ফলাফল জানিয়েছে।
তবে এসব ভালো খবর সত্ত্বেও বিশেষজ্ঞরা ভ্যাকসিন তৈরি ও ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের অনিশ্চয়তা এবং ভাইরাসের পরিবর্তনসহ নানা ধরণের ঝুঁকির বিষয়ে সতর্ক করেন।
একইসঙ্গে তারা ভ্যাকসিন গবেষণায় বস্তনিষ্ঠ, যৌক্তিক ও বৈজ্ঞানিক মনোভাবাপন্ন হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
গত ৩ জুলাই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্বাহী পরিচালক ড. মাইকেল রায়ান বলেছেন, কোভিড- ১৯ ভ্যাকসিন সরবরাহের নির্দিষ্ট কোন সময়সূচি নেই।
তিনি আরো বলেন, কিছু ভ্যাকসিনের প্রাথমিক খবর খুবই আশাপ্রদ, কিন্তু এর মধ্যে কোনটি ক্লিনিক্যালি সম্পূর্ণ কার্যকর হবে তা এখনও বলা যাচ্ছে না।
এদিকে অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি আস্ট্রাজেনকার সাথে যে ভ্যাকসিনটি তৈরি করছে তা চলতি বছরের শেষ নাগাদ ‘উৎপাদন খরচে’ বিশ্বজুড়ে পাওয়া যাবে বলে ঘোষণা দিয়েছে।
মঙ্গলবার স্বল্পমূল্যে ভ্যাকসিনটি পাওয়ার এ ঘোষণা দেন আস্ট্রাজেনকার ডিরেক্টর জেনারেল প্যাসকাল সরিয়ট।
ভ্যাকসিন পুরোপুরি হাতে না পাওয়া পর্যন্ত সকল দেশকে ভাইরাস প্রতিরোধে বিধিনিষেধ ও স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা আহ্বান জানিয়েছে।
বাসস/জুনা/১৭৫৫/জেহক