বাজিস-৭ : ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে কাল সাগরে যাচ্ছেন উপকূলের জেলেরা

168

বাজিস-৭
বরগুনা- সাগরে যাচ্ছেন জেলেরা
৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে কাল সাগরে যাচ্ছেন উপকূলের জেলেরা
বরগুনা, ২২ জুলাই, ২০২০ (বাসস): বঙ্গোপসাগরে ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত ৬৫ দিন মাছ ধরা নিষিদ্ধ ছিলো। মঙ্গলবার মধ্যরাত থেকে বঙ্গোপসাগরে শেষ হচ্ছে সরকার নির্ধারিত ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা। এ দীর্ঘ সময় অলস কাটিয়ে মঙ্গলবার রাত থেকেই আবার সাগরে যাবেন জেলেরা। অনেক জেলে আবার মঙ্গলবার দুপুরেই সাগরের উদ্দেশ্যে ট্রলার ভাসাবেন। গত বছরের মতো এ বছরও উপকূলের জেলেরা স্বতস্ফুর্তভাবে ৬৫ দিনের আইন মান্য করেছেন।
বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের গবেষণালব্ধ তত্ত্বমতে, মে মাসের শেষের দিক থেকে জুলাই পর্যন্ত বঙ্গোপসাগরে বিচরণরত মাছসহ বিভিন্ন সামুদ্রিক প্রাণির প্রজননকাল। এ কারণেই সাগরের মাছসহ বিভিন্ন মূল্যবান প্রাণিজস¤পদ রক্ষার পাশাপাশি ভান্ডার বাড়াতে দীর্ঘসময় মাছ আহরণের ওপর নিষেধাজ্ঞারোপের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।
বরগুনার পাথরঘাটা, তালতলী, আমতলীর প্রান্তিক জনপদের জেলে পল্লীগুলোর জেলেরা জানিয়েছেন, ইতোমধ্যেই সাগরে যাওয়ার সব প্রস্তুতি স¤পন্ন করেছেন তারা। দীর্ঘদিন কর্মহীন অবস্থায় থাকার পর জেলেপাড়ায় আবারও প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে। দীর্ঘদিন বঙ্গোপসাগর থেকে মাছ আহরণ বন্ধ থাকায় বেশি মাছ পাবেন বলে আশাবাদী জেলেরা। পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলায় উপকূলীয় জেলে পল্লীগুলোতেও কর্মব্যস্ততা বেড়েছে। মৎস্য বন্দর আলীপুর-মহিপুর-কুয়াকাটার জেলে পল্লীগুলোতে এমন কর্মব্যস্ততা সবচেয়ে বেশি।
কুয়াকাটা-আলীপুর মৎস্য আড়ৎদার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ও লতাচাপলী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. আনছার উদ্দিন জানান, মৌসুমের শুরুতে অবরোধের ফলে দক্ষিণের বড় মৎস্যবন্দর আলীপুর-মহিপুর-কুয়াকাটা মাছের আড়তগুলো এতোদিন নিষ্প্রাণ ছিল। সরকারের দেয়া অবরোধ মেনে সমুদ্রে মাছ শিকার করতে যান নি। বেকার, অলস, মানবেতর সময় পার করেছেন মৎস্য শ্রমিকরা। অপেক্ষায় ছিলেন ভরা মৌসুমে ইলিশ শিকারের মাধ্যমে পরিবারের মুখে হাসি ফোটাতে। এখন কর্মচঞ্চল হয়ে উঠবে মৎস্য বন্দর।
বরগুনার তালতলীর মৎস্যজীবি সমিতির সভাপতি দুলাল ফরাজি জানিয়েছেন, ট্রলার, জাল, মেরামত করে জেলেরা এখন রসদ সংগ্রহ করছেন। জেলেদের অনেকেই গভীর সাগরের উদ্দেশ্যে মঙ্গলবারই রওয়ানা দেবেন।
বরগুনা জেলা মৎস্য বিভাগের কর্মকর্তা মাহবুব হোসেন জানিয়েছেন, সাগরে মাছসহ মূল্যবান প্রাণিজ স¤পদের ভান্ডারের সুরক্ষায় ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত ৬৫ দিন বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরা নিষেধাজ্ঞারোপ করে সরকার। ইলিশের জাটকা নিধনে নিষেধাজ্ঞারোপের সফলতাকে অনুসরণ করে বঙ্গোপসাগরে মাছসহ মূল্যবান প্রাণিস¤পদের সুরক্ষায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বাংলাদেশ মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী জানিয়েছেন, ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞার কারণে আমরা সাময়িক ক্ষতির মুখে পড়লেও জেলে শ্রমিকসহ আড়তদার, পাইকার ও ট্রলার মালিকদের মুখে এখন হাসি। বরাবরের মতো নিষেধাজ্ঞা শেষে বেশি ইলিশ মাছ পাবেন বলে তারা আশাবাদী।
বাসস/সংবাদদাতা/১২৪৫/নূসী