বাসস দেশ-৪২ : সাধারণ মানুষের আর্থিক সক্ষমতা বিবেচনা করে ইকোনোমি সিনেপ্লেক্স নির্মাণ করুন : শিল্পমন্ত্রী

198

বাসস দেশ-৪২
শিল্পমন্ত্রী – বৈঠক
সাধারণ মানুষের আর্থিক সক্ষমতা বিবেচনা করে ইকোনোমি সিনেপ্লেক্স নির্মাণ করুন : শিল্পমন্ত্রী
ঢাকা, ২১ জুলাই, ২০২০ (বাসস) : শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন দেশের সকল জেলা ও মফস্বল শহরে সুনির্দিষ্ট প্যাটার্নের সিনেপ্লেক্স নির্মাণের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন।
তিনি বলেন, সাধারণ মানুষের আর্থিক সক্ষমতা বিবেচনা করে দেশের প্রতিটি জেলা শহরের পাশাপাশি মফস্বলে সুনির্দিষ্ট প্যাটার্নের সিনেপ্লেক্স নির্মাণ করতে হবে।
নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন আজ রাজধানীর মিন্টুরোডে তাঁর সরকারি বাসভবনে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রযোজক – পরিবেশক সমিতির নেতাদের সাথে এক বৈঠকে এ কথা বলেন।
তিনি এসময় উল্লেখ করেন,বাঙালি সংস্কৃতির গৌরবোজ্জ্বল ঐতিহ্য তুলে ধরার পাশাপাশি গ্রামীণ-জনপদের মানুষের নির্মল বিনোদনের ধারা অব্যাহত রাখতেই প্রয়োজন সিনেমা হলের।
এ ছাড়াও শিল্পমন্ত্রী মনে-প্রাণে বিশ^াস করেন,সুস্থ ধারার চলচ্চিত্র প্রদর্শনের মধ্যদিয়ে যুবসমাজকে মাদক, জুয়া, সন্ত্রাস, অনৈতিক-কর্মকান্ড ও জঙ্গিবাদের করাল গ্রাস থেকে মুক্ত রাখা সম্ভব।
তিনি দেশের সব-জেলা শহরে একই প্যাটার্নের এবং মফস্বলের জন্য একই-মডেলের লো-কস্ট স্টিল-স্ট্রাকচারের সিনেপ্লেক্স নির্মাণের প্রকল্প গ্রহণ করার জন্য চলচ্চিত্র প্রযোজক পরিবেশক সমিতির সমিতির নেতাদের পরামর্শ দেন। এ প্রকল্প বাস্তবায়নে সরকারের পক্ষ থেকে সাধ্যমত সহযোগিতা করা হবে বলেও মন্ত্রী জানান।
বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রযোজক-পরিবেশক সমিতির সভাপতি খোরশেদ আলম খসরু, সিনিয়র সহ-সভাপতি কামাল মোহাম্মদ কিবরিয়া লিপু, সহ-সাধারণ সম্পাদক আলিমুল্লাহ খোকন, কোষাধ্যক্ষ মেহেদী হাসান সিদ্দিকী (মনির), সাংস্কৃতিক সম্পাদক মোরশেদ খান হিমেল, আন্তর্জাতিক সম্পাদক ইলা জাহান নদী এবং সদস্য জাহিদ হোসেন ও রশিদুল আমিন (হলি) এ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে সমিতির নেতারা বলেন, চলচ্চিত্রকে শিল্প হিসেবে ঘোষণা করা হলেও এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো এসআরও জারি করা হয়নি। ফলে চলচ্চিত্র শিল্পখাত অন্যান্য শিল্পখাতের মতো সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তর ও ব্যাংক/আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে প্রয়োজনীয় সুবিধাদি পাচ্ছেনা। তারা এ বিষয়ে দ্রুত এসআরও জারি করতে শিল্পমন্ত্রীর দৃষ্ট আকর্ষণ করেন।
বৈঠকে, সমিতির নেতারা চলচ্চিত্র শিল্পের সার্বিক উন্নয়নের স্বার্থে এ শিল্প-সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মন্ত্রণালয় এবং সংস্থার প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠনের ওপর জোর গুরুত্ব দেন এবং চলচ্চিত্র শিল্পের উন্নয়নে শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতায় বাস্তবায়ন করার জন্য কতিপয় প্রস্তাব তুলে ধরেন।
এসব প্রস্তাবের মধ্যে রয়েছে,চলচ্চিত্র শিল্পকে বিশেষ অগ্রাধিকার খাত হিসেবে ঘোষণা, বেসরকারি উদ্যোগে ইকোনমি সিনেপ্লেক্স নির্মাণে সূদমুক্ত ব্যাংক ঋণ প্রদান, এসএমই শিল্পের তালিকায় চলচ্চিত্র শিল্পখাতকে অন্তর্ভুক্তকরণ,চলচ্চিত্র রপ্তানিতে তৈরি পোশাক ও চামড়া শিল্পের ন্যয় প্রণোদনা প্রদান, চলচ্চিত্র রপ্তানিজনিত আয়কে রেমিটেন্স হিসেবে বিবেচনা এবং এখাতে রেমিটেন্সের অনুরূপ সুবিধাদি প্রদান, অন্য শিল্পখাতে ব্যবহৃত বিদ্যুতের মতো চলচ্চিত্র শিল্পে ব্যবহৃত বিদ্যুতর দাম নির্ধারণ, চলচ্চিত্র আমদানির ওপর স্বল্প ট্যাক্স, চলচ্চিত্র নির্মাণ ও সিনেমাহলের জন্য ওয়ানস্টপ সার্ভিস সেবা চালু, যৌথ প্রযোজনার ছবির ক্ষেত্রে বিদেশি শিল্পী ও কলাকুশলীদের জন্য ওয়ার্ক পারমিট ইস্যু ও তাদের সম্মানির ওপর আরোপিত ১৫ শতাংশ ভ্যাট রহিত করে আয়কর সহজীকরণ।
শিল্পমন্ত্রী বলেন, চলচ্চিত্র হচ্ছে নির্মল আনন্দ ও সুস্থ বিনোদনের কার্যকর গণমাধ্যম। এক সময় গ্রাম-বাংলার জনগণের সুস্থ বিনোদনের মাধ্যম হিসেবে চলচ্চিত্র গুরুপূর্ণ স্থান দখল করলেও কালের আবর্তে এটি এখন হারিয়ে যেতে বসেছে।
তিনি সুস্থ ও পরিশীলিত সমাজ বিনির্মাণে এই শিল্পের হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টদের ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানান।
বাসস/সবি/জেডআরএম/২১১৪/এবিএইচ