বাসস দেশ-১ : মোহাম্মদ নাসিম ১৪ দলকে প্রতিষ্ঠানে পরিনত করেছেন : স্মরণ সভায় বক্তারা

140

বাসস দেশ-১
নাসিম-স্মরণ সভা
মোহাম্মদ নাসিম ১৪ দলকে প্রতিষ্ঠানে পরিনত করেছেন : স্মরণ সভায় বক্তারা
ঢাকা, ১৬ জুলাই, ২০২০ (বাসস) : কেন্দ্রীয় ১৪ দল আয়োজিত মোহাম্মদ নাসিমের স্মরণ সভায় বক্তরা বলেছেন, দলের ও দেশের প্রয়োজনে লড়াই করা বর্ষীয়ান আওয়ামী লীগ নেতা মোহাম্মদ নাসিমের মৃত্যুতে যে শূন্যতা সৃষ্টি হয়েছে, তা কখনো পূরণ হওয়ার নয়। মোহাম্মদ নাসিমের মত নেতার কোন মৃত্যু নেই। তিনি আজীবন মানুষের হৃদয়ে বেঁচে থাকবেন।
বুধবার রাতে কেন্দ্রীয় ১৪ দলের উদ্যোগে ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে আয়োজিত কেন্দ্রীয় ১৪ দলের সাবেক মুখপাত্র ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য প্রয়াত মোহাম্মদ নাসিম এমপি’র স্মরণে অনুষ্ঠিত এক শোক সভায় বক্তরা এসব কথা বলেন।
নেতৃবৃন্দ বলেন, মোহাম্মদ নাসিম প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশ্বস্ত হিসাবে দেশ ও জাতির যেকোন প্রয়োজনে দায়িত্ব পালন করে কেন্দ্রীয় ১৪ দলকে সংগঠিত করেছেন। তিনি ১৪ দলকে একটি প্রতিষ্ঠানে পরিনত করেছেন। তার কারণেই ১৪ দল জাতীয় পর্যায়ে পরিচিতি পেয়েছে।
তারা আরও বলেন, নাসিম ছিলেন আওয়ামী লীগের একজন পরীক্ষিত নেতা। ছিলেন বিশ্বস্ত সহকর্মী। পিতা শহীদ এম মনসুর আলী যেমন বঙ্গবন্ধুর বিশ্বস্ত ছিলেন, তেমনি মোহাম্মদ নাসিমও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশ্বস্ত ছিলেন। রাজনীতিতে তার ভূমিকা অনুকরণীয় ও অনুসরণীয় হয়ে থাকবে।
বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ, আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য, কেন্দ্রীয় ১৪ দলের মুখপাত্র, সাবেক মন্ত্রী, সিরাজগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য মোহাম্মদ নাসিম ১৩ জুন রাজধানীর শ্যামলীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন।
আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য এবং কেন্দ্রীয় ১৪ দলের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র আমির হোসেন আমু বলেছেন, মোহাম্মদ নাসিম ১৪ দলকে জাতীয় পর্যায়ে একটা বিরাট পরিচিতি দিয়ে গেছেন। তিনি অসুস্থ শরীর নিয়েই সারাদেশে ১৪ দলের কর্মসূচি বাস্তবায়ন করেছেন, দলীয় কর্মসূচি বাস্তবায়ন করেছেন। তার সব সময় শেখ হাসিনার প্রতি একটা অসম্ভব অন্ধভক্তি, শ্রদ্ধা এবং সম্মান ছিল।
তিনি বলেন, মোহাম্মদ নাসিম সারাজীবন অসম্প্রদায়িকতার ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে এবং গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় কাজ করে গেছেন। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে তার পিতা যেমনিভাবে অবিচল ছিলেন, একনিষ্ঠ ছিলেন, মোহাম্মদ নাসিমও কিন্তু বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে একইভাবে অবিচল এবং একনিষ্ঠ ছিলেন।
করোনার সময়ে মোহাম্মদ নাসিমসহ ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ আব্দুল্লাহ, অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন, সিলেট সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র বদর উদ্দিন কামরান দলীয় নেতাকর্মী যারা মৃত্যুবরণ করেছেন, তাদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করা হয় দলীয় স্মরণ সভায়।
আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য তোফায়েল আহমেদ বলেন, নাসিমের অকাল মৃত্যু আমাদের কাঁদিয়েছে। তিনি আমাদের খুব প্রিয় একজন সহকর্মী ছিলেন। একটা বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের অধিকারী ছিলেন নাসিম। আমরা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এক সাথে আন্দোলন করেছি। মোহাম্মদ নাসিম ১৪ দলকে এতো বেশি পছন্দ করতেন যে প্রায় দিনই এই ১৪দল নিয়ে আলোচনা করতেন। নাসিম চলে গেছেন, আর কোনো দিন ফিরে আসবেন না। আমাদের প্রত্যেকটা নেতাকর্মী দলে নাসিমের অনুপস্থিতি অনুভব করেন।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী বলেন, সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তুলতে পারলেই মোহাম্মদ নাসিমের প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা জানানো হবে।
বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি মোহাম্মদ নাসিমের অকৃত্রিম আস্থা এবং বিশ্বাস ছিল। তার মৃত্যুতে আমরা আমাদের সংগ্রামের বিশ্বস্ত একজন সাথিকে হারালাম। তিনি কখনো অসম্প্রদায়িক সমতাভিত্তিক রাষ্ট্র গড়ে তোলার অঙ্গিকার থেকে বিচ্যুত হন নাই।
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেন, স্বৈরাচার বিরোধী সংগ্রাম, সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী সংগ্রাম, আগুণ সন্ত্রাস বিরোধী সংগ্রাম সবকিছুতে সাহসের সাথে রাজপথে নির্বিক সৈনিকের ভূমিকা পালন করেছেন মোহাম্মদ নাসিম।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেছেন, মোহাম্মদ নাসিম শেখ হাসিনার বিশ্বস্ত হিসেবে দেশ ও জাতির যেকোনো দুর্যোগময় মুহূর্তে দায়িত্ব পালন করে ১৪ দলকে সংগঠিত করেছেন। তিনি ১৪ দলকে একটি প্রতিষ্ঠানে পরিণত করেছেন। মোহাম্মদ নাসিমদের কোন মৃত্যু নেই। তারা আজীবন বেঁচে থাকবে।
আওয়ামী লীগ সভাপতিমন্ডলীর সদস্য আব্দুর রহমান বলেন, মোহাম্মদ নাসিমকে হারিয়ে যাওয়ার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ হারিয়ে ফেললো অসম্প্রদায়িক আপাদমস্তক বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক একজন নায়ককে। গণতান্ত্রিক সংগ্রাম আন্দোলনে ১৪ দলকে যেভাবে সংগঠিত করে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন। তার তুলনা নেই।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, তার অবর্তমানে ১৪ দল এবং আওয়ামী লীগের যে ক্ষতি হয়েছে এ ক্ষতি পূরণ হবার নয়।
কেন্দ্রেীয় ১৪ দলের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র এবং আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য আমির হোসেন আমুর সভাপতিত্বে এবং আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাসের পরিচালনায় আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য মোজাফফর হোসেন পল্টু, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়–য়া, বাংলাদেশ জাসদের সভাপতি শরিফ নূরুল আম্বিয়া, তরিকত ফেডারেশনের নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী, গণআজাদী লীগের এস কে শিকদার, জাতীয় পার্টি জেপির সাধারণ সম্পাদক শেখ সহিদুল ইসলাম, কমিউনিস্ট কেন্দ্রের নেতা ডা. ওয়াজেদুল ইসলাম খান, গণতন্ত্রি পার্টির নেতা ডা. শাহাদাৎ হোসেন, ন্যাপ নেতা ইসমাইল হোসেন, বাসদের আহবায়ক রেজাউর রশিদ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
বাসস/বিকেডি/১১৫০/অমি