বাসস ক্রীড়া-১০ : টেস্ট সাউদাম্পটন টেস্টের পাঁচটি উল্লেখযোগ্য বিষয়

120

বাসস ক্রীড়া-১০
ক্রিকেট-সাউদাম্পটন টেস্ট
সাউদাম্পটন টেস্টের পাঁচটি উল্লেখযোগ্য বিষয়
সাউদাম্পটন, ১৪ জুলাই ২০২০ (বাসস) : প্রাণঘাতি করোনাভাইরাসের কারনে দীর্ঘদিন স্থগিত থাকার পর অবশেষে সাউদাম্পটনে ইংল্যান্ড-ওয়েস্ট ইন্ডিজ টেস্ট দিয়ে আবারো মাঠে গড়িয়েছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট। ঐতিহাসিক এ টেস্ট ইংল্যান্ডকে ৪ উইকেট হারিয়েছে ক্যারিবীয়রা।
মহামারী করোনাভাইরাসের মধ্যে যে ম্যাচটি হলো সেখান থেকে উল্লেখযোগ্য পাঁচটি বিষয় চোখে পড়েছে বার্তা সংস্থার এএফপি স্পোর্টসের।
হোল্ডারের বীরত্ব : সিরিজের প্রথম টেস্টে সামনে থেকে দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের অধিনায়ক জেসন হোল্ডার। প্রথম ইনিংসে ৪২ রানে ৬ উইকেট শিকার করেছেন। ইংল্যান্ডের মাটিতে টেস্টে যা ছিল সেরা বোলিং ফিগার। তার বোলিং নৈপুন্যে প্রথম ইনিংসে ২০৪ রানেই গুটিয়ে যায় স্বাগতিকরা। প্রতিপক্ষ অধিনায়ক বেন স্টোকস দুই ইনিংসেই শিকার জন টেস্টে আইসিসি র‌্যাংকিংএর সেরা অলরাউন্ডার হোল্ডারের।
অধিনায়ক হিসেবে হোল্ডারের নেতৃত্বগুন চোখে পড়েছে। কৌশলগত দক্ষতা দিয়ে নিজ দলের বোলারদের পরিচালনা করেছেন তিনি। নিজের পাতা পরিকল্পনায় স্টোকসকে আউট করেছেন হোল্ডার। স্টোকসের জন্য গালিতে দু’জন ফিল্ডার রেখে বোলিং করে সাফল্য পেয়েছেন হোল্ডার। গেল শনিবার টেস্টের চতুর্থ দিন ৩০ রানে ইংল্যান্ডের পাঁচটি উইকেট পতন ঘটিয়ে টেস্টের লাগাম দলের পক্ষে নিয়ে আসেন হোল্ডার।
বাটলারের অফ-ফর্ম : সাউদাম্পটনেও ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন ইংল্যান্ডের উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান জশ বাটলার। দুই ইনিংসে যথাক্রমে ৩৫ ও ৯ রান করেন বাটলার।
প্রধান নির্বাচক এড স্মিথের পরিকল্পনায় টেস্ট দলে পুনরায় জায়গা পান বাটলার। স্মিথের প্রত্যাশা ছিলো, ওয়ানডের ফর্ম টেস্টে প্রদর্শন করবেন বাটলার।
কিন্তু সিরিজের প্রথম টেস্টে ব্যর্থ হয়েছেন বাটলার। শেষ ১১ টেস্টে তার ব্যাটিং গড় ২১ দশমিক ৩৮ এবং উইকেটের পেছনেও নিজেকে মেলে ধরতে পারেননি। ম্যাচের চতুর্থ ইনিংসে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দিতে বড় ভূমিকা ছিলো মিডল-অর্ডার ব্যাটসম্যান জার্মেই ব্ল্যাকউডের। ৯৫ রান করেন তিনি। ব্যক্তিগত ২০ রানে একবার বাটলারের হাতে জীবন পান ব্ল্যাকউড।
বাটলারের সাথে উইকেটরক্ষক হিসেবে দলে ছিলেন সারের বেন ফোকস। বাটলারের চেয়ে উইকেটের পেছনে দায়িত্বটা ভালোই পালন করেন তিনি। ব্যাট হাতে ব্যাটিং গড় ৪১ দশমিক ৩০।
ক্যারিয়ারে পাঁচ টেস্টে ১টি করে সেঞ্চুরি ও হাফ-সেঞ্চুরি করেছেন ফোকস। ৪২ টেস্টে ১টি সেঞ্চুরি ও ১৫টি হাফ-সেঞ্চুরি করা অফ-ফর্মে থাকা বাটলারের সাথে তুলনা আসছে ফোকসের।
ডেনলিকে নিয়ে সমালোচনা : নিয়মিত অধিনায়ক ও ব্যাটসম্যান জো রুট না থাকায়, ইংল্যান্ডের ব্যাটিং লাইন-আপে তিন নম্বরে নামেন জো ডেনলি। যেখানে ব্যাট করে থাকেন রুট। কিন্তু এ টেস্টে বড় ইনিংস খেলতে পারেননি ডেনলি। দুই ইনিংসে যথাক্রমে ১৮ ও ২৯ রান করেন তিনি। সর্বশেষ আট ইনিংসে ৪০ রানের কোটা স্পর্শ করতে পারেননি ডেনলি।
দ্বিতীয় টেস্টে রুট ফিরলে, ডেনলি বা জ্যাক ক্রাউলির মধ্যে কাউকে একাদশের বাইরে চলে যেতে হবে। তবে চার নম্বরে নামা ক্রাউলি সাউদাম্পটন টেস্টের প্রথম ইনিংসে ১০ ও দ্বিতীয় ইনিংসে ৭৬ রান করে নিজের জায়গা ধরে রাখার আভাস দিয়েছেন।
শুধুমাত্র বড় ইনিংস খেলতে না পারা নয়, ডেনলির আউটের ধরনে সমালোচনা আরো জোরদার হয়েছে। দ্বিতীয় ইনিংসে বাজে শট খেলে ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্পিনার রোস্টন চেজের বলে মিড-উইকেটে ক্যাচ দেন ডেনলি। গুরুত্বপূর্ণ সময়ে উইকেট ছুড়ে দেয়ার আরও একটি উদাহরন সৃস্টি করেন তিনি।
রুদ্ধদার স্টেডিয়ামে ক্রিকেটের প্রতি আবেগ : করোনার কারনে স্বাস্থ্য বিধি অনুসরণ করে রুদ্ধদার স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে তিন ম্যাচের টেস্ট সিরিজ।
প্রথম টেস্টে আশঙ্কা করা হয়েছিলো, রুদ্ধদার স্টেডিয়ামে খেলার কারনে খেলোয়াড়রা তাদের সেরাটা দিতে ব্যর্থ হবে। কিন্তু দীর্ঘদিন পর ক্রিকেট ফেরার ম্যাচে চেষ্টা ও দক্ষতার কোন কমতি লক্ষ্য করা যায়নি। যদিও, রুদ্ধদারে স্টেডিয়ামে খেলার অভিজ্ঞতা থেকে ইংল্যান্ডের অধিনায়ক বেন স্টোকস বলেন- অদ্ভুত পরিবেশ।
আম্পায়ারদের পারফরমেন্স নিয়ে প্রশ্ন : করোনাভাইরাসের কারনে স্বাগতিক আম্পায়ারদের দিয়েই সিরিজ পরিচালনার নিয়ম করে আইসিসি। তাই প্রথম টেস্টে ইংল্যান্ডের রিচার্ড ইলিংওর্থ ও রিচার্ড কেটেলব্রো অন-ফিল্ড আম্পায়ারের দায়িত্বে ছিলেন। কিন্তু সাউদাম্পটন টেস্টে অনেক প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে দু’জনকে।
দু’জনের পাঁচটি সিদ্বান্ত ভুল প্রমানিত হয়ে রিভিউ পরীক্ষায়। রিভিউতে সবগুলোই ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে গিয়েছে।
নিরপেক্ষ আম্পায়ার না থাকায়, একটি বেশি রিভিউ’র নিয়ম চালু করে আইসিসি। কিন্তু এই টেস্টটি মনে করিয়ে দেয়, খেলোয়াড়দের মত আম্পায়ারদেরও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রবেশের আগে সময়ের প্রয়োজন পড়ে।
বাসস/এএমটি/১৯০০/স্বব