১ হাজার ৪ শ’ ৫৫ মেগাওয়াট সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজ এগিয়ে চলছে

361

॥ সৈয়দ শুকুর আলী শুভ ॥
ঢাকা, ১৩ জুলাই, ২০২০ (বাসস) : চলতি বছরের মধ্যে নবায়নযোগ্য জ্বালানি (আরই) খাত থেকে ১০ শতাংশ বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা পূরণের লক্ষ্যে ১ হাজার ৪ শ’ ৫৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রকল্পের কাজ এগিয়ে চলছে।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ এমপি আজ বাসসকে বলেন, সকল প্রকল্প পর্যায়ক্রমে বান্তবায়ন করা হবে এবং বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয় প্রকল্পের যথাযথ বাস্তবায়ন তদারক করছে। তিনি বলেন, নবায়নযোগ্য জ¦ালানি খাতে ৬৩০ দশমিক ৯৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হচ্ছে যার মধ্যে ৩৯৭ দশমিক ০৩ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আসছে সৌর শক্তি থেকে।
তিনি বলেন, সরকার মোট বিদ্যুৎ উৎপাদনের ১০ শতাংশ নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাত থেকে আহরণের লক্ষ্যে সৌর শক্তি ভিত্তিক বিদ্যুতের উপর জোর দিচ্ছে।
মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি), নর্থ-ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি লিমিটেড (এনডব্লিউপিজিসিএল), ইলেকট্রিসিটি জেনারেশন কোম্পানি অফ বাংলাদেশ (ইজিসিবি), আশুগঞ্জ পাওয়ার স্টেশন কোম্পানি লিমিটেড (এপিএসসিএল), পল্লী বিদ্যুৎ কোম্পানী লিমিটেড (আরপিসিএল) এবং ইন্ডিপেন্ডেন্ট পাওয়ার প্রডিউসার (আইপিপি) ১ হাজার ৪ শ’ ৫৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য নবায়নযোগ্য শক্তি (আরই) ভিত্তিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে।
প্রকল্পগুলো হলো – ফেনীতে একটি ১০০ মেগাওয়াট সোলার ফোটোভোলটাইক (পিভি) ভিত্তিক গ্রিড সংযুক্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র, রাঙ্গুনিয়ায় ৬০ মেগাওয়াট ক্ষমতার সোলার পার্ক, গঙ্গাচড়ায় ৫৫ মেগাওয়াট সোলার পার্ক, কাপ্তাইয়ে ৭ দশমিক ৪ মেগাওয়াট সোলার পিভি গ্রিড সংযুক্ত পাওয়ার প্ল্যান্ট, ফরিদপুরে ১০০ মেগাওয়াট সোলার পার্ক, সিরাজগঞ্জে ৭ দশমিক ৬ মেগাওয়াট সোলার পার্ক, পাবনায় ৬০ মেগাওয়াট সোলার পার্ক, আশুগঞ্জে ৮০ মেগাওয়াট সোলার পার্ক, বাগেরহাটের মোল্লাহাটে ১০০ মেগাওয়াট সোলার পিভি পাওয়ার প্ল্যান্ট এবং সুবিধাজনক স্থানে আরো ২০০ মেগাওয়াট বায়ু ভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, সরকার জ্বালানি নিরাপত্তা বাড়াতে জ্বালানী বৈচিত্রের ভিত্তিতে বিদ্যুৎ উৎপাদন কৌশল প্রণয়ন করেছে।
তিনি বলেন, বিদ্যুৎ খাতে বেসরকারী খাত একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার এবং সরকার বেসরকারী খাতের সম্প্রসারণের জন্য উৎসাহ দিচ্ছে।
নসরুল হামিদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ খাতে অসাধারণ সাফল্য অর্জন করেছে। নবায়নযোগ্য জবালানি বিশেষত অফ গ্রিডের সৌর ব্যবস্থা থেকে বিদ্যুৎ লাভ করে এ খাত দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছে।
সম্প্রতি প্রকাশিত আরএন টোয়েন্টি ওয়ান এর রিনিউয়েবলস ২০২০ গ্লোবাল স্ট্যাটাস রিপোর্ট (জিএসআর) অনুসারে, অফ-গ্রিড সৌর ব্যবস্থা থেকে ১১ শতাংশ বিদ্যুৎ ব্যবহারের ক্ষেত্রে নেপাল শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে এবং অনুরূপ উৎস থেকে আট শতাংশ শক্তি নিয়ে বাংলাদেশ ও মঙ্গোলিয়া যৌথভাবে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে।
মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, টেকসই এবং নবায়নযোগ্য শক্তি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (এসআরইডিএ) সকল সরকারী ও বেসরকারী খাতে নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ উৎপাদন এবং জ¦ালানি সক্ষমতা কার্যক্রম বিকাশের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান।
মন্ত্রণালয় আরও জানায়, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ইউনিয়ন পর্যায়ে ই-সেন্টার, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান এবং রেলওয়ে স্টেশন বিদ্যুতায়নের আওতায় এসেছে।
এসআরইডিএ’র মতে, নবায়নযোগ্য জ্বালানী নীতি অনুযায়ী, ২০২০ সালের মধ্যে নবায়নযোগ্য জ¦ালানির ১০ শতাংশ পাওয়ার অর্র্থ হবে ২ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ যুক্ত করা।
এছাড়াও, সারা দেশে অফ-গ্রিড এলাকায় ৫ দশমিক ৮ মিলিয়ন সৌর হোম সিস্টেম (এসএইচএস) স্থাপন করা ফলে তা বিশ্বের বৃহত্তম অফ-গ্রিড নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ উৎপাদন কর্মসূচীতে পরিণত হয়েছে।
আন্তরিক প্রচেষ্টার ফলে দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ২৩ হাজার ৪ শ’ ৩৬ মেগাওয়াটে পৌঁছেছে এবং দেশের ৯৭ শতাংশ মানুষ এখন বিদ্যুৎ সুবিধা পাচ্ছে।