সিলেট ও সুনামগঞ্জে বন্যার পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে

222

সিলেট, ১২ জুলাই ২০২০ (বাসস) : সিলেট ও সুনামগঞ্জের বেশিরভাগ নদীর পানি বিপদসীমা অতিক্রম করায় বন্যার পানি বাড়ছে।
শুক্র ও শনিবার সিলেট ও সুনামগঞ্জে বেশিরভাগ সময়ে থেমে থেমে বৃষ্টিপাত হওয়ায় এবং উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে এ বন্যার কারন বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।
এদিকে বন্যার কারনে সিলেটে ও সুনামগঞ্জ জেলা সদরের সঙ্গে কয়েকটি উপজেলার সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
পাউবো সূত্র জানায়,গত দুদিনের চেয়ে আজ রোববার সিলেট ও সুনামগঞ্জের সবকটি নদীর পানি অনেক স্থানে বিপদসীমা অতিক্রম করে উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে,আবার কয়েকটি স্থানে বিপদসীমার কাছাকাছি দিয়ে পানি চলছে,পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে যে কোন সময় বন্যার পানি সেটা অতিক্রম করতে পারে। সিলেটের সুরমা নদী জেলার দুটি পয়েন্টে ও কুশিয়ারা নদীর পানি দুটি পয়েন্টে বিপদসীমা অতিক্রম করেছে। ফলে সিলেট নগরী ও জেলার নিম্নাঞ্চল গুলো বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে।
আজ রোববার বেলা ১২টা পর্যন্ত সুরমা নদীর পানি কানাইঘাট পয়েন্টে বিপদসীমার ৮০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল দুপুর পর্যন্ত এখানে পানির উচ্চতা ছিলো ১৩.৫৫ মিটার,ওই পয়েন্টে বিপদসীমার উচ্চতা হচ্ছে ১২.৭৫ মিটার। আর সুরমা নদীর পানি সকাল থেকে বাড়তে শুরু করেছে।বেলা ১২টায় সিলেট পয়েন্টে সুরমার পানি প্রবাহ ছিল ১০.৮৯ মিটার, যা বিপদসীমার ৯ সেন্টিমিটার উপরে,ওই পয়েন্টে বিপদসীমার উচ্চতা হচ্ছে ১০.৮০ মিটার।
এছাড়াও সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে কুশিয়ারার পানি বেলা ১২টায় প্রবাহিত হচ্ছে ৯.৭৫ মিটার। এ পয়েন্টে বিপদসীমা ৯.৪৫ মিটার।
পানি কিছুটা কমলেও এখনো বিপদসীমার উপরে রয়েছে সারি নদীর পানি। শনিবার সন্ধ্যা ৬টায় সারি নদীর পানি জৈন্তাপুর উপজেলার সারিঘাট পয়েন্টে ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল ১২.৪৭ মিটারে। আজ বেলা ১২টায় পানি কিছুটা নিচে নেমে এসেছে। প্রবাহিত হচ্ছে ১২.৪৬ মিটার দিয়ে। যা বিপদসীমার ১ সেন্টিমিটার উপরে।
কুশিয়ারা নদীর পানির উচ্চতা জকিগঞ্জ আমলশিদ পয়েন্টে বেলা ১২টায় টায় উচ্চতা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫.১৫ মিটারে,এ পয়েন্টে পানির বিপদসীমার উচ্চতা হচ্ছে ১৫.৪০ মিটার। শেওলা পয়েন্টে বেলা ১২টা পর্যন্ত পানি বেড়ে হয়েছে ১২.৩৭ মিটার। শেরপুর পয়েন্টে কুশিয়ারার পানির উচ্চতা বেলা ১২টায় বেড়ে হয়েছে ৮.১৪ মিটার,এ পয়েন্টে পানির বিপদসীমার উচ্চতা হচ্ছে ৮.৫৫ মিটার। কানাইঘাটের লোভা নদীর পানি আজ দুপুরে দাঁড়িয়েছে ১৪.৮৫ মিটারে।
এদিকে সুনামগঞ্জ জেলা শহরের ষোলঘর পয়েন্টে সুরমা নদীর পানি বিপদসীমার ৪১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে, সুরমা নদীর পানি ছাতক পয়েন্টে বিপদসীমার ১.৭২ মিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তাহির পুর উপজেলার জাদুকাটা লাউয়ের গড় পয়েন্টে পানি বিপদসীমার ০৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। জেলার দিরাই উপজেলার কালনি নদীর পানি বিপদসীমার ১৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
সিলেট বিভাগের অন্য দুই জেলা মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জে বন্যার আশঙ্কা থাকলেও দুই জেলা দিয়ে প্রবাহিত মনু,খোয়াই ও ধলাই নদীর পানি কিছুটা বৃদ্ধি পাচ্ছে, তবে এখন পর্যন্ত এসব নদীর সবকয়টি পয়েন্টের পানি বিপদ সীমার অনেক নীচে রয়েছে।
এদিকে,বন্যার সার্বিক পরিস্থিতি মোকাবিলায় ত্রাণ তৎপরতা পরিচালনা সহ সব ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত রেখেছে স্থানীয় প্রশাসন।