বাসস দেশ-২২ : সিলেট ও সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত প্রশাসন

229

বাসস দেশ-২২
সিলেট- বন্যা
সিলেট ও সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত প্রশাসন
সিলেট, ১১ জুলাই ২০২০ (বাসস) : সিলেট ও সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত গ্রহণ করেছে প্রশাসন। প্রবল বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে বন্যার পানি দ্রুতগতিতে বেড়ে যাওয়ার কারণে সিলেট ও সুনামগঞ্জের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি অবনতির দিকে যাচ্ছে।
আজ বিকেল ৬টা পর্যন্ত সুনামগঞ্জ জেলার সুরমা নদীর পানি সুনামগঞ্জ শহরের ষোলঘর পয়েন্ট দিয়ে বিপদসীমার ৫০সেন্টিমিটার,ছাতক পয়েন্টে বিপদসীমার ৩৪ সেন্টিমিটার জাদুকাটা নদী লাউয়ের গড় পয়েন্টে বিপদসীমার ২২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গত ২৪ ঘন্টায় সুনামগঞ্জে ১৩৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
এছাড়া সিলেট জেলার সুরমা নদী কানাইঘাট পয়েন্টে ১১ জুলাই বিকেল ৬টা পর্যন্ত বিপদসীমার ৬৮ সেন্টিমিটার, কুশিয়ারা নদী ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে বিপদসীমার ১৪ সেন্টিমিটার,জৈন্তাপুর এলাকার সারি নদীর সারি ঘাট পয়েন্টে বিপদসীমার ১২ সেন্টিমিটার, উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। জেলার অন্যান্য পয়েন্টেও পানি যেকোন সময়ে বিপদসীমা অতিক্রম করতে পারে বলে জানিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ড।
পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় সিলেট ও সুনামগঞ্জ শহরসহ নিম্নাঞ্চলের মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে যাওয়া, অনেক বাড়ি ঘরে পানি ঢুকে গৃহবন্দী হয়ে পড়েছেন। অনেকেই পরিবার নিয়ে আশ্রয় কেন্দ্রে স্হান নিয়েছেন। অনেক স্হানে ধান ও সবজি ক্ষেতের ফসলি জমি তলিয়ে গেছে। সংকট দেখা দিয়েছে গো খাদ্যের। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে আবারও সিলেট এবং সুনামগঞ্জ শহরে বন্যায় বিশেষ করে নীম্নঞ্চলের মানুষ অনেকটা অসহায় ও চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়েছেন। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জরুরী ত্রাণ তৎপরতা অব্যাহত আছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের প্রস্তুতি
নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ।
সিলেট ও সুনামগঞ্জে টানা বৃষ্টিপাত ও ভারতীয় পাহাড়ি ঢলে দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে সকল নদ-নদীর পানি। এদিকে সুনামগঞ্জ জেলার দোয়ারাবাজার উপজেলা সহ বিভিন্ন উপজেলা ও ইউনিয়নের যোগাযোগ প্রায় বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছে। জেলার বিশ্বম্ভপুর, তাহিপুর ও জামালগঞ্জ উপজেলা সহ বিভিন্ন অঞ্চল বন্যার
পানিতে তলিয়ে গেছে।
বন্যার পূর্বাভাস জানিয়ে ইতোমধ্যে সুনামগঞ্জের প্রত্যন্ত অঞ্চলের জনসাধারণকে সতর্ক করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসন।
পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, ভারতের আসাম ও মেঘালয় রাজ্যে মৌসুমী বায়ূর ফলে প্রবল বৃষ্টিপাতের কারণে সুরমা সহ অন্যান্য নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় সুনামগঞ্জে ১৩৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। পরিস্থিতির আরও অবনতি হবে বলে জানানো হয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সহববুর রহমান জানান, বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে। সুরমা ও অন্যান্য নদ- নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
সিলেটের জেলা প্রশাসক এম কাজি এমদাদুল ইসলাম জানান সিলেট জেলার ১৩টি উপজেলার মধ্যে ৫ টি উপজেলায় এ মুহুর্তে বন্যায় বেশি প্লাবিত হয়েছে, তার মধ্যে সিলেট সদর,কোম্পানিগঞ্জ, জৈন্তাপুর ও কানাইঘাট।এসব উপজেলায় ১২০ মেট্রিক টন চাল,৯০০ পেকেট শুকনা খাবার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
তিনি জানান, ঝুঁকিপূর্ণ প্রতিটি উপজেলায় প্রয়োজনীয় আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে, ইতিমধ্যে জেলার বিভিন্ন উপজেলায় এ পর্যন্ত প্রায় ৩০০ লোক আশ্রয় কেন্দ্রে স্হান নিয়েছেন,এর মধ্যে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় বেশি। তিনি বলেন, বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকারের পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসন সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে, পর্যাপ্ত ত্রাণ সামগ্রী মওজুদ আছে, উদ্ধার তৎপরতা পরিচালনায় প্রয়োজনীয় সংখ্যক নৌকা প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
বাসস/সবি/এমএআর/২০১০/কেকে