বাসস ক্রীড়া-২ : শৈশব থেকেই শ্বেতাঙ্গ ও কৃষ্ণাঙ্গদের পার্থক্য বুঝিয়ে দেওয়া হয় : হোল্ডিং

124

বাসস ক্রীড়া-২
ক্রিকেট-হোল্ডিং
শৈশব থেকেই শ্বেতাঙ্গ ও কৃষ্ণাঙ্গদের পার্থক্য বুঝিয়ে দেওয়া হয় : হোল্ডিং
সাউদাম্পটন, ১০ জুলাই ২০২০ (বাসস) : করোনাভাইরাসের কারনে ১১৬দিন বন্ধ থাকার পর অবশেষে সাউদাম্পটনে ইংল্যান্ড-ওয়েস্ট ইন্ডিজ টেস্ট ম্যাচ দিয়ে আবারো মাঠে ফিরেছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট। তবে খেলা শুরুর আগে একসাথে হাঁটু গেড়ে বসে আফ্রিকান-আমেরিকান সাবেক বাস্কেটবল খেলোয়াড় জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যুর প্রতিবাদ করেন সাউদাম্পটনের মাঠে উপস্থিতি সকল খেলোয়াড়, আম্পায়ার, অফিসিয়াল ও ক্রিকেট সংশ্লিষ্টরা।
গত মে মাসের শেষের দিকে, কৃষ্ণাঙ্গ হবার কারণে আফ্রিকান-আমেরিকান সাবেক বাস্কেটবল খেলোয়াড় জর্জ ফ্লয়েডকে হাঁটুতে পিষে হত্যা করে যুক্তরাষ্ট্রের মিনেসোটা অঙ্গরাজ্য পুলিশ। ঐ নির্মম হত্যার প্রতিবাদে ফেটে পড়ে যুক্তরাষ্ট্রসহ সারা বিশ্ব।
‘ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটারস’ তথা ‘কৃষ্ণাঙ্গদের জীবনও মূল্যবান’ হ্যাশট্যাগে প্রতিবাদও হয় সর্বত্র। এবার মাঠে ফিরে সেই প্রতিবাদে নিজেদের শামিল করলো ইংল্যান্ড-ওয়েস্ট ইন্ডিজের খেলোয়াড়রা। ইউরোপসহ বিভিন্ন লিগে ফুটবলারও হাঁটু গেড়ে বসে প্রতিবাদ করেছেন।
তবে কৃষ্ণাঙ্গদের বারবার কেন বর্ণবৈষম্যের শিকার হতে হয়, তার একাধিক কারণ তুলে ধরেছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাবেক পেসার মাইকেল হোল্ডিং।
সাউদাম্পটনে ইংল্যান্ড-ওয়েস্ট ইন্ডিজ টেস্টের প্রথম দিন স্কাই স্পোর্টসের ক্যামেরার সামনে বর্ণবাদ কথা বলেন হোল্ডিং। তিনি বলেন, ‘হাজার বছর আগ থেকে বর্ণবৈষম্য শুরু হয়। আর সবসময়ই শ্বেতাঙ্গ ও কৃষ্ণাঙ্গদের মধ্যে পার্থক্য বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে, কারা ভাল আর কারা খারাপ।’
শৈশবে নিজের স্কুল জীবনের উদাহরন হিসেবে টেনে এন হোল্ডিং বলেন, ‘আমাদের স্কুলে কখনও কৃষ্ণাঙ্গদের সাফল্যের গল্প শোনানো হত না। সবাই জানেন বাল্ব আবিষ্কার করেছেন টমাস আলভা এডিসন। কিন্তু তিনি যে বাল্ব আবিষ্কার করেছিলেন, তা বেশিক্ষণ জ্বলতো না। কেউ বলতে পারবেন, কে বাল্ববের কার্বন ফিলামেন্ট আবিষ্কার করেন? যার সাহায্যে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আলো পাওয়া যায়? অনেকেই জানেন না। তিনি লিউইস হওয়ার্ড ল্যাটিমার। একজন কৃষ্ণাঙ্গ। কোনও স্কুলেই এটা পড়ানো হয়নি। তা হলে কৃষ্ণাঙ্গদের প্রতি সম্মান জন্মাবে কী করে?’
তাই হোল্ডিং মনে করেন, শিক্ষা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। তিনি বলেন, ‘শিক্ষাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। শিক্ষাটা ঠিকমতো না হলে আমরা যে জীবনটা কাটাচ্ছি, সেটা কাটিয়ে যাব। এখানে ওখানে কিছু প্রতিবাদ হবে। লোকজন কিছু কথাবার্তা বলবে, প্রতিবাদ করবে, এ পর্যন্তই।’
হোল্ডিং আরও বলেন, ‘নিউইয়র্কের সেন্ট্রাল পার্কের সেই নারীর জিনে যদি বর্ণবাদ না-ও থাকে, বর্ণবাদ তাঁর চিন্তার মধ্যেই আছে। তাঁর চিন্তাভাবনা হচ্ছে কালো মানুষ মানেই খারাপ, অপরাধী। সে মনে করে কোনো কালো ব্যক্তিকে অভিযুক্ত করে সে যদি পুলিশে ফোন দেয়, তাহলে কালো ব্যক্তি প্রতি দশবারে নয়বারই অপরাধী প্রমাণিত হবে। কালো ব্যক্তিকে প্রমাণ করতে হবে সে অপরাধী নয়। আর এটা প্রমাণ করতে করতে সে ফ্লয়েডের মতো মারাও যেতে পারে।’
তাই এখনই সকলকে বর্নবাদের বিপক্ষে রুখে দাড়ানোর আহ্বান জানান হোল্ডিং। শিক্ষা জীবন থেকেই বর্ণবাদ নিয়ে খোলাসা করতে বললেন তিনি।
বাসস/এএমটি/১৬৫০/স্বব