নয়া দিল্লি, ৯ জুলাই ২০২০ (বাসস) : করোনাভাইরাসের কারনে ১১৬দিন স্থগিত হয়ে থাকার পর অবশেষে গতকাল সাউদাম্পটনে ইংল্যান্ড-ওয়েস্ট ইন্ডিজ টেস্ট ম্যাচ দিয়ে মাঠে ফিরেছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট। তবে নিয়মিত অধিনায়ক জো রুটের পরিবর্তে ঐতিহাসিক এ ম্যাচে ইংল্যান্ড দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন বেন স্টোকস। এই প্রথম কোন আন্তর্জাতিক ম্যাচে দলকে নেতৃত্ব দিলেও স্টোকসে আস্থা রয়েছে ভারতের মাস্টার ব্লাস্টার ব্যাটসম্যান শচীন টেন্ডুলকারের।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের কিংবদন্তি ও ক্রিকেটের বরপুত্র ব্রায়ান লারার সাথে অনলাইন আলাপকালে স্টোকসের প্রশংসা করেন টেন্ডুলকার। তার মতে, একজন ক্রিকেটারের যে গুন থাকা প্রয়োজন, তার সবটুকু রয়েছে স্টোকসের। অধিনায়ক হিসেবেও দারুন করবে স্টোকস।
স্টোকসের ব্যাপারে টেন্ডুলকারের কাছে জানতে চেয়েছিলেন লারা নিজেই। লারার প্রশ্ন ছিল বর্তমান ক্রিকেটে বিশ্বের একজন সেরা অলরাউন্ডারের হাতে অধিনায়কত্ব, কিভাবে দেখছেন টেন্ডুলকার?
টেন্ডুলকার জানান, ‘স্টোকস এমন এক জন ক্রিকেটার, যে সামনে থেকে দলকে নেতৃত্ব দিবে। তার মধ্যে সেই গুণ আমরা অনেক বার দেখেছি। ব্যাটসম্যান-বোলার হিসেবে নিজেকে বিশ্বের কাছে তুলে ধরেছে সে। স্টোকস আগ্রাসী ক্রিকেটার। ইতিবাচক দৃস্টি ভঙ্গি রয়েছে। যেটুকু রক্ষণাত্মক হতে হয়, তা দলের প্রয়োজনে তাকে হতে হয়। আমি সব সময় বিশ্বাস করি, নিয়ন্ত্রিত আগ্রাসনই সঠিক পন্থা।’
বিশ্ব ক্রিকেটে সেরা অলরাউন্ডাদের কাতারে রয়েছেন স্টোকস। ইংল্যান্ডের সেরা অলরাউন্ডারদের পাশে স্টোকসের নাম থাকবে বলে মনে করেন টেন্ডুলকার। তিনি বলেন, ‘ স্টোকস যেখানে ছিল, আর এখন যেখানে আছে, এই তফাৎটাই বলে দেয় সে কেমন অলরাউন্ডার। বিশ্বকাপের ফাইনালের কথায় ভাবুন। ব্যাট হাতে কিভাবে দলকে হার থেকে বাঁচালো সে। বল হাতে দলের আশা পূরণ করে সে। তাই এসবই প্রমাণ করে স্টোকস মানসিকভাবে কতটা শক্তিশালী। ভবিষ্যতে ইয়ান বোথাম, এন্ড্রু ফ্লিনটফের কাতারে থাকবে স্টোকস। এরাই ইংল্যান্ডের ক্রিকেট ইতিহাসে সব চেয়ে ভাল অলরাউন্ডার।’
সত্তর-আশি দশকে ইংল্যান্ডের সেরা অলরাউন্ডার ছিলেন বোথাম। দেশের হয়ে ১০২টি টেস্ট ও ১১৬টি ওয়ানডে খেলেছেন তিনি। ব্যাট হাতে টেস্টে ৫২০০ ও ওয়ানডেতে ২১১৩ রান করেন তিনি। বল হাতে টেস্টে ৩৮৩ ও ওয়ানডেতে ১৪৫টি উইকেট নেন বর্তমানে ৬৪ বছর বয়সী বোথাম।
বোথামের বিদায়ে পর দীর্ঘদিন জেনুইন অলরাউন্ডার পায়নি ইংল্যান্ড। পরবর্তীতে ১৯৯৮ সালে বোথামের মত অলরাউন্ডার পায় ইংল্যান্ড। ১৯৯৮ সালে টেস্ট দিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পথ চলা শুরু হয় ফ্লিনটফের। ২০০৯ সাল পর্যন্ত ইংল্যান্ডের হয়ে খেলেছেন তিনি। দেশের জার্সিতে ৭৯টি টেস্ট, ১৪১টি ওয়ানডে ও ৭টি টি-২০ খেলেছেন ফ্লিনটফ। ব্যাট হাতে টেস্টে ৭৪১০, ওয়ানডেতে ৩৩৯৪ ও টি-২০তে ৭৬ রান করেন তিনি। বল হাতে টেস্টে ২২৬, ওয়ানডেতে ১৬৯ ও টি-২০তে ৫ উইকেট নেন ৪২ বছর বয়সী ফ্লিনটফ।
স্টোকসের পাশাপাশি ওয়েস্ট ইন্ডিজের অধিনায়ক জেসন হোল্ডারের প্রশংসাও করেছেন টেন্ডুলকার। কারন টেস্টে অলরাউন্ডারদের তালিকার শীর্ষে হোল্ডার। আর দ্বিতীয়স্থানে রয়েছে স্টোকস। হোল্ডারের প্রশংসা করে টেন্ডুলকার বলেন, ‘হোল্ডার খুবই ভাল অলরাউন্ডার। কিন্তু সে প্রাপ্য স্বীকৃতিটা পায় না। তারপরও টেস্টে সেরা অলরাউন্ডার এখন সে। বোলার হিসেবে দারুন সে। ব্যাট হাতেও দলের প্রয়োজনে বড় ইনিংস খেলার সামর্থ্য রাখে হোল্ডার।’