একনেক ৩,৪১৭ কোটি টাকা ব্যয়ে ১০টি প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে

744

ঢাকা, ৩ এপ্রিল, ২০১৮ (বাসস) : জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) রাজধানীর জলাবদ্ধতা নিরসনে খাল খনন ও পুনর্খননের একটি প্রকল্পসহ ১০টি প্রকল্প অনুমোদন করেছে। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৩,৪১৬ কোটি টাকা।
একনেকের চেয়ারপার্সন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে শেরেবাংলানগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে চলতি অর্থবছরের ২১তম একনেক বৈঠকে এই প্রকল্পগুলো অনুমোদন দেয়া হয়।
বৈঠকের পরে পরিকল্পনা মন্ত্রী এ এইচ এম মুস্তফা কামাল সাংবাদিকদের বলেন, আজ ১০টি প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে, এতে অনুমতি ব্যয় ধরা হয়েছে ৩,৪১৬ দশমিক ৮৬ কোটি টাকা। ‘প্রকল্পসমূহের মোট ব্যয়ের ৩,৪০০ দশমিক ৯৩ কোটি টাকা আসবে জিওবি থেকে এবং বাকি ১৪ দশমিক ৯৩ কোটি টাকা আসবে সংস্থাগুলোর নিজস্ব তহবিল থেকে।’
১০টি প্রকল্পের ৯টি নতুন এবং একটি সংশোধিত প্রকল্প।
পরিকল্পনা মন্ত্রী বলেন, স্থানীয় সরকার বিভাগের অধীনে ঢাকা ওয়াসা অনুমিত ৬০৭ দশমিক ১৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘হাজারীবাগ বাইশটেকি, কুর্মিটোলা, মান্ডা এবং বেগুনবাড়ি খালের খনন ও পুনর্খনন, জমি অধিগ্রহণ’ প্রকল্প বাস্তবায়িত হবে।
প্রকল্পটিতে ২০১৯ সাল নাগাদ নগরীর ৫টি খাল খনন কাজ সম্পন্ন করবে। প্রকল্পের ব্যয়ের পুরো অর্থ আসবে রাষ্ট্রীয় তহবিল থেকে।
এ এইচ এম মুস্তফা কামাল বলেন, বর্ষা মৌসুমে খালগুলোর পানি প্রবাহ স্বাভাবিক রাখার মাধ্যমে নগরীর যানজট ও জলাবদ্ধতা নিরসন এবং নগরবাসীদের জন্য নগরীকে স্বাস্থ্যসম্মত ও জীবনযাপনের পরিবেশবান্ধব করে তোলাই এই প্রকল্পের প্রধান লক্ষ্য।
ঢাকা ওয়াসা জানায়, রাজধানীর ড্রেনেজ সিস্টেমে ১৫১ কিলোমিটর দীর্ঘ ৫১টি খাল, ১০ কিলোমিটার বক্স কালভার্ট এবং বিভিন্ন সংস্থার কয়েক হাজার কিলোমিটার দীর্ঘ পাইপলাইন রয়েছে।
প্রকল্পের প্রধান কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে প্রায় ৩০ দশমিক ৫৬২ একর ভূমি অধিগ্রহণ। এর মধ্যে রয়েছে হাজারীবাগ খালের জন্য ৪ দশমিক ৩৫৫ একর, কুর্মিটোলা খালের জন্য ৪ দশমিক ৬১৩ একর, বেগুনবাড়ি খালের জন্য ১ দশমিক ৯০৫ একর এবং মুগদা খালের জন্য ১৩ দশমিক ৩০৪ একর জমি অধিগ্রহণ করা হবে।
প্রকল্পে অবকাঠামোর জন্য ক্ষতিপূরণ প্রদান, শূন্য দশমিক ১৫ কিলোমিটার রোড ক্রসিং কালভার্ট নির্মাণ, ১৩ দশমিক ৫০ কিলোমিটার খাল খনন।
প্রকল্প অনুমোদনের আগে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী কুর্মিটোলা এলাকা, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং সংলগ্ন এলাকার জলাবদ্ধতা নিরসনে ওয়াশাকে অনুরোধ জানায়।
বর্তমান প্রকল্পের অধীনে হাজারীবাগ খাল, বাইশটেকি খাল, কুর্মিটোলা, মান্ডা এবং বেগুনবাড়ি খাল খনন ও পুনর্খনন করা হবে।
আজকের একনেক বৈঠকে ৪৮৯ দশমিক ৮২ কোটি টাকা ব্যয়ে এলেঙ্গা-জামালপুর ন্যাশনাল হাইওয়ে প্রশস্তকরণ করা হবে। সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগ ২০২০ সাল নাগাদ প্রায় ৭৭ দশমিক ৬০ কিলোমিটার মহাসড়ক ৪ লেনে পরিণত করবে। এই ৪ লেন মহাসড়ক এলেঙ্গা, কালিহাতি, ঘাটাইল, মধুপুর, গোপালপুর, ধনবাড়ি, জামালপুর সড়ক এবং সরিষাবাড়ি হয়ে যাবে।
অনুমোদিত অন্যান্য প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে গোপালগঞ্জে শেখ সায়েরা খাতুন মেডিকেল কলেজ, মেডিকেল কলেজ হসপিটাল ও নার্সিং কলেজ। এতে দ্বিতীয় সংশোধিত ব্যয় ধরা হয়েছে ৭০৫ দশমিক ০৪ কোটি টাা, ১৫৪ দশমিক ২৫ কোটি টাকায় জয়িতা টাওয়ার প্রকল্প, ৫৫১ দশমিক ৫৬ কোটি টাকায় কিশোরগঞ্জ-কিশোরী ক্লাব, ৫৯ দশমিক ৬৩ কোটি টাকায় গ্রামীণ লোকদের উন্নয়নের জন্য প্রচার কার্যক্রম জোরদার, ৩৫৬ দশমিক ৯৯ কোটি টাকা ব্যয়ে আশুগঞ্জ ১৩২ কেভি এআইএস সাব-স্টেশন ১৩২ কেভি নতুন জিআইএস সাব- স্টেশন প্রতিস্থাপন, ১৪৭ দশমিক ৮৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ঢাকায় বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ম্যানেজমেন্ট (বিআইএম) জোরদারকরণ, ৬১ দশমিক ৩৩ কোটি টাকায় বরগুনা জেলার সমুদ্র থেকে উদ্ধার করা জমিতে সেচের জন্য খাল পুনর্খনন কাজ এবং ২৮২ দশমিক ২২ কোটি টাকায় মাওনা-ফুলবাড়িয়া- কালিয়াকৈর- ধামরাই-নবীনগর মহাড়ক জোরদার ও প্রশস্তকরণ।