ওয়েস্ট হ্যামের কাছে পরাজিত চেলসি, নরউউচকে বিধ্বস্ত করলো আর্সেনাল

197

লন্ডন, ২ জুলাই ২০২০ (বাসস) : বুধবার প্রিমিয়ার লিগে ওয়েস্ট হ্যামের কাছে নাটকীয় ম্যাচে ৩-২ গোলে পরাজিত হয়ে শীর্ষ চারে থাকার মিশনে বড় ধাক্কা খেয়েছে চেলসি। অপর ম্যাচে পিয়েরে এমেরিক-অবামেয়াংয়ের দুই গোলে নরউইচ সিটিকে ৪-০ গোলে বিধ্বস্ত করে ইউরোপীয়ান প্রতিযোগিতায় আবারো নিজেদের ফিরিয়ে আনার সুযোগ সৃষ্টি করেছে আর্সেনাল।
দিনের শুরুতে এভারটনের কাছে লিস্টার সিটি ২-১ গোলে হেরে যাওয়ায় চেলসির সামনে সুযোগ ছিল টেবিলের তৃতীয় স্থানে উঠে আসার। কিন্তু তার পরিবর্তে করোনা পরবর্তীয় লিগ শুরু হবার পর প্রথম পরাজয়ের তিক্ত স্বাদ পায় ব্লুজরা। লন্ডন স্টেডিয়ামে ওয়েস্ট হ্যামের হয়ে মিখাইল এ্যান্টোনিওর করা প্রথম গোলটি ভিএআর’র সহায়তায় অফসাইডের কারনে বাতিল হয়ে যায়।
বিরতির আগে উইলিয়ানের পেনাল্টিতে এগিয়ে গিয়েছিল সফরকারী চেলসি। ক্রিস্টিয়ান পুলিসিচকে ডি বক্সের ভিতর ফাউলের অপরাধে ইসা ডিওপের বিপক্ষে পেনাল্টি আদায় করে নেয় ব্লুজরা। প্রথমার্ধের ইনজুরি টাইমে টমাস সুচেক ওয়েস্ট হ্যামের পক্ষে সমতা ফেরান। ৫১ মিনিটে জ্যারড বোয়েন্সের ক্রস থেকে এ্যান্টোনিও ওয়েস্ট হ্যামকে এগিয়ে দেন। ৭০ মিনিটে দুর্দান্ত ফ্রি-কিক থেকে উইলিয়ান দ্বিতীয় গোল করে চেলসিকে সমতায় ফেরান। কিন্তু ম্যাচের নাটকীয়তা তখনো বাকি ছিল। ৮৯ মিনিটে বদলী খেলোয়াড় আন্দ্রি ইয়ামোলেনকো কাউন্টার এ্যাটাক থেকে দুর্দান্ত ফিনিশিংয়ে হ্যামার্সদের জয় নিশ্চিত করেন।
এই পরাজয়ে লিস্টারের থেকে এক পয়েন্ট পিছিয়ে ও ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ও উল্ফসের থেকে দুই পয়েন্ট এগিয়ে চতুর্থ স্থানেই থাকলো চেলসি। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শীর্ষ চার স্থানের জন্য জমাট লড়াইয়ে কোন দল শেষ পর্যন্ত উত্তীর্ণ হবে তা চূড়ান্তে চেলসির হাতে আর মাত্র ৬ ম্যাচ বাকি আছে।
ম্যাচ শেষে চেলসি বস ফ্রাংক ল্যাম্পার্ড বলেছেন, ‘এটাই এই মৌসুমে আমাদের গল্প। মৌসুমটা সত্যিকার অর্থেই ভাল কেটেছে। কিন্তু এখনো অনেক মুহূর্ত বাকি। আজকের ম্যাচে কোন গোল নিয়েই আমি খুশী না। ম্যাচের বেশ কিছু বিষয় ছিল যা আমরা আগে থেকেই জানতাম। কিন্তু তারপরেও আমরা পরাজিত হয়েছি, কারন সঠিক সময়ে আমরা সঠিক কাজটা করতে পারিনি। এ কারনেই আমরা শীর্ষ চারের জন্য লড়াই করে চলেছি, প্রথম কিংবা দ্বিতীয় স্থানের জন্য না।’
করোনার পর পুনরায় শুরু হওয়া প্রিমিয়ার লিগে এটাই ছির ওয়েস্ট হ্যামের প্রথম জয়। এই জয়ে রেলিগেশন জোন থেকে তিন পয়েন্ট উপরে থাকলো হ্যামার্সরা।
এদিকে এমিরেটস স্টেডিয়ামে পুরো ম্যাচেই দুর্দান্ত খেলেছেন অবামেয়াং। এই দুই গোলে জেমি ভার্ডির সাথে সমান ১৯ গোল নিয়ে প্রিমিয়ার লিগের সর্বোচ্চ গোলদাতা হিসেবে গোল্ডেন বুটের জন্যও নিজেকে ফেবারিট করে তুলেছেন এই গ্যাবনিজ এ্যাটাকার।
টানা তৃতীয় জয়ে আর্সেনাল সপ্তম স্থানে উঠে এসেছে। ম্যাচের ৩৩ মিনিটে অবামেয়াং প্রথম গোল করে আর্সেনালকে এগিয়ে দেন। ক্যানারিস গোলরক্ষক টিম ক্রুলের এই গোল আটকানোর সামর্থ্য ছিল না। এই গোলের মাধ্যমে প্রিমিয়ার লিগে ৭৯ ম্যাচে ৫০ গোলের মাইলফলক স্পর্শ করলেন অবামেয়াং। একইসাথে আর্সেনালের কোন খেলোয়াড় হিসেবে দ্রুতমত সময়ে এই মাইলফলক স্পর্শের রেকর্ডও গড়েছেন।
ম্যাচ শেষে আর্সেনাল বস মিকেল আর্তেতা বলেছেন, ‘একজন গোলদাতা হিসেবে অবামেয়াং সব সময়ই প্রমান করেছে কেন তাকে দলে এত প্রয়োজন।’
৩৭ মিনিটে অবামেয়াংয়ের সহায়তায় ব্যবধান দ্বিগুন করেন গ্রানিত জাকা। ৬৭ মিনিটে নরউইচ স্ট্রাইকার জোসিপ ডারমিচের ভুলে নিজের দ্বিতীয় গোল করেন অবামেয়াং। জানুয়ারিতে সাউদাম্পটন থেকে আর্সেনালে যোগ দেয়া সেডরিক সোরেস ৮১ মিনিটে দুরপাল্লার শটে চতুর্থ গোলটি করে গানার্সাদরে জার্সি গায়ে অভিষেকটা স্মরণীয় করে রাখলেন।
করোনা মহামারী কাটিয়ে লিগ পুরনায় শুরু হবার পর এই নিয়ে চার ম্যাচে জয়বিহীন থাকলো লিস্টার সিটি। গুডিসন পার্কে রিচারলিসনের ১০ মিনিটের গোল ও গিলফি সিগার্ডসনের পেনাল্টিতে ১৬ মিনিটেই দারুন একটি সূচনা পেয়েছিল এভারটন। ৫১ মিনিটে কেলেচি ইহেনাচোর গোলে লিস্টার এক গোল পরিশোধ করলে তা হার এড়ানোর জন্য যথেষ্ট ছিল না।