বাসস দেশ-২ : বরগুনায় ডিজিটাল প্লাটফর্মে বেড়েছে গতি, অবারিত হচ্ছে কাজের সুযোগ

219

বাসস দেশ-২
ডিজিটাল-বরগুনা
বরগুনায় ডিজিটাল প্লাটফর্মে বেড়েছে গতি, অবারিত হচ্ছে কাজের সুযোগ
বরগুনা, ১ জুলাই, ২০২০ (বাসস) : জেলায় গৃহীত বিভিন্ন ডিজিটাল প্রজেক্ট, ডিজিটাল স্টার্টআপ এবং ডিজিটাল ইনিশিয়েটিভসমূহ প্রশাসনিকসহ সাধারণ মানুষের কাজে গতির সঞ্চার করেছে। কাজকে করেছে সহজ আর স্থিতিশীল। অনলাইন ভিত্তিক কার্যক্রমে কমেছে জটিলতা, বন্ধ হয়েছে দালাল ও মধ্যস্বত্ত্বভোগীদের আনাগোনা। কমেছে মানুষের হয়রানিও। অবারিত হচ্ছে মানুষের সুযোগ ও সুবিধা।
ডিজিটালাইজেশন প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে বরগুনার জেলা প্রশাসন ইতোমধ্যে ভূমি বিষয়ক ই-মিউটেশন ও ই-পর্চা কার্যক্রমের সফলতার জন্য পুরস্কারও পেয়েছে।
বরগুনার জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ জানিয়েছেন, রাজধানী ঢাকা থেকে ৩২৮ কিলোমিটার দূরের জনপদ বরগুনা। কৃষি ও মৎস্য সম্পদ এবং অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরা এই জেলায় মানুষ মনন, মেধায় অগ্রগামি। নতুনকে বরণ ও গ্রহণ করেন খুব দ্রুত। তাই সরকারের ডিজিটাইজেশন প্রক্রিয়া বাস্তবায়নে বরগুনার মানুষের বিভিন্ন পেশা সংক্রান্ত সরকারি বিভাগগুলো ডাটা বেইজের আওতায় দ্রুত চলে আসছে। বরগুনার বহুল উৎপাদিত তরমুজ ও মুগডাল এ বছর অনলাইনের মাধ্যমে বিকিকিনি করা হয়েছে। জেলার ৬০ হাজার জেলেকে ডিজিটাল প্লাটফর্মে আনা হয়েছে। তাদের ফিসিং-বোটগুলোতে ডিজিটাল ফ্যাসিলিটিজ স্থাপন করা চলছে, যাতে আবহাওয়ার পূর্বাভাসসহ যাবতীয় তথ্য পেয়ে মাছ শিকারে অগ্রগতি আসে, দুর্যোগে জান-মালের ক্ষয়ক্ষতি এড়ানো যায়। কৃষি, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ বিভাগ অনলাইনে তাদের সেবা দেয়া শুরু করেছে। জেলার ইকোট্যুরিজমকে এগ্রিয়ে নিতে অনলাইন ইকো ট্যুরিজম প্লাটফর্ম করা হচ্ছে। স্থানীয় নারী-পুরুষ, শিক্ষর্থীরা নান সমস্যা, সম্ভাবনা অনলাইন প্লাটফর্মে শেয়ার করছে এবং এক্সপার্ট টিম সেগুলো বিশ্লেষন করে নানা সাজেশনস দিচ্ছেন।
জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ জানান, অতি সম্প্রতি জেলার নান্দনিক, নৈসর্গিক সৌন্দর্য তুলে ধরার প্রয়াসে অনলাইন ভিত্তিক ফটো গ্যালারি ও ফটো অ্যালবাম কম্পিটিশন করা হয়। এ প্রতিযোগিতার বিচার কার্য ও পুরস্কার বিতরণও অনলাইন ভিত্তিক অনুষ্ঠিত হয়েছে। যা অভিজ্ঞ ও তরুণ উভয় শ্রেণির ফটোগ্রাফারদের মধ্যে সাড়া ফেলেছে বলে জানিয়েছেন, বরগুনার পরিবেশ কর্মী, সাংবাদিক ও আলোকচিত্রিরা।
সারাদেশের মধ্যে আলোড়ন তোলা বরগুনার দু’টি জনপ্রিয় উৎসব ‘জোছনা উৎসব’ ও ‘ইলিশ উৎসব’ ইন্টারনেটের মাধ্যমে সরাসরি প্রচার করা হয়েছে। উৎসব আয়োজনের যাবতীয় কাজও অনলাইনে করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন অন্যতম উদ্যোক্তা সোহেল হাফিজ।
অনলাইন মাধ্যমে জেলা প্রশাসক জানিয়েছেন, বরগুনা জেলা প্রশাসকের কার্যালয় এবং ক্যাম্পাস ফ্রি ওয়াইফাই জোনের আওতায় এসেছে। গত বছর তথ্য প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ পলক বরগুনা সফরে এসে বঙ্গবন্ধু ডিজিটাল হাবের উদ্বোধন করেন। সেখান থেকে ২৫০ তরুণ ফ্রি-ল্যান্সার হিসেব প্রশিক্ষণ নিয়ে এখন প্রশিক্ষক হিসেবে বিভিন্ন জায়গায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন এবং উদ্যোক্তা প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। এদের মধ্যে ৫০ জন আয়বর্ধক কাজে উল্লেখযোগ্যভাবে সফলতা পেয়েছেন।
বর্তমান কোভিড সংকটে বরগুনা জেলার ২ লাখ ২৬ হাজার পরিবার ডাটা বেজের আওতায় এসে খাদ্যসহ নানা সহায়তা লাভ করেছে। স্বাস্থ্যবিভাগ কাজ করছে টেলি-মেডিসিন নিয়ে। ৩৩৩ নম্বরে ফোন করে তাৎক্ষণিক স্বাস্থ্য ও খাদ্য সহায়তা নিয়েছেন আড়াই হাজারের বেশি মানুষ।
আইসিটি বিভিাগের সহায়তায় জেলা ওয়েব পোর্টালকে প্রতিদিন তথ্য দিয়ে সম্মৃদ্ধ করা চলছে। অতি সম্প্রতি অডিও-ভিজ্যুয়াল জেলা থিম সং রেকর্ডি করে তার উদ্বোধন ও আপলোড সম্পন্ন করা হয়েছে।
বরগুনার সহকারী কমিশনার ও নির্বাহি ম্যাজিস্ট্রেট আরিফ উল্লাহ নিজামী জানান, বরগুনা জেলার ডিজিটালাইজেশন সম্পর্কিত তথ্যবলী অনলাইন প্লাটফর্মে ডিজিটাল মেলা-২০২০ এর উদ্বোধন কালে তথ্য প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ পলককে জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ অনলাইনে টেলিকনফারেন্সের মাধ্যমে অবহিত করেছেন।
বরগুনার জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও সাবেক সংসদ সদস্য মো. দেলোয়ার হোসেন জানান, অবাধ তথ্য প্রবাহের যুগে তথ্যই শক্তি। তথ্য স¤ৃ§দ্ধিসহ দ্রুত তথ্য আদান প্রদানের সুবিধা বরগুনার মানুষ ভোগ করছেন। বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশ বিশ্বে মাথা উঁচু করে দাঁড়াচ্ছে।
বাসস/সংবাদদাতা/১২১৫/কেজিএ