বাসস দেশ-৪ : বুড়িগঙ্গায় ডুবে যাওয়া লঞ্চটি টেনে তীরে আনা হয়েছে

139

বাসস দেশ-৪
লঞ্চডুবি-অভিযান অব্যাহত
বুড়িগঙ্গায় ডুবে যাওয়া লঞ্চটি টেনে তীরে আনা হয়েছে
ঢাকা, ৩০ জুন, ২০২০ (বাসস): ডুবে যাওয়া লঞ্চ উদ্ধারে ফায়ার সার্ভিস ও বিআইডব্লিউটিএসহ আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা শেষ পর্যায়ের অভিযান চালিয়ে যাচ্ছেন। লঞ্চটি টেনে তীরে আনা হয়েছে।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স বাহিনীর সহকারী পরিচালক মো. সালেহ উদ্দিন ঘটনাস্থল থেকে বাসসকে জানান রাজধানীর শ্যামবাজার এলাকা সংলগ্ন বুড়িগঙ্গা নদীতে ডুবে যাওয়া লঞ্চটি উদ্ধারে সারারাত কাজ করছে ফায়ার সার্ভিস ও বিআইডব্লিউটিএসহ আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা । অভিযান এখন শেষ পর্যায়ে। তবে নতুন করে কাউকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
তিনি জানান, লঞ্চটি তীরের দিকে নিয়ে যাওয়ার কাজ চলছে। দুপুরের মধ্যে এটি উদ্ধার করা সম্ভব হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
তিনি আরও জানান, লঞ্চটি উদ্ধার করতে নারায়ণগঞ্জ থেকে প্রত্যয় নামের একটি জাহাজ পোস্তগোলা ব্রিজের নীচে এসে আটকে গেছে। উদ্ধার যন্ত্রের কারনে বীজের নীচ দিয়ে জাহজিটি আসতে পারছে না বলে জানান তিনি। প্রত্যয় জাহাজের ধাক্কায় ব্রিজের সামান্য ক্ষতি হয়েছে বলেও জানান তিনি। উদ্ধার জাহাজ প্রত্যয়ের বিকল্প হিসেবে এরচেয়ে ছোট দূরন্ত নামের আরেকটি জাহাজ উদ্ধার কাজে অংশ গ্রহণ করেছে। দূরন্তের সাহায্যে লঞ্চটিকে তীরের কাছাকাছি নিয়ে আসা হয়েছে বলেও জানান ফায়ার সার্ভিসের এ কর্মকর্তা।
সালেহ উদ্দিন জানান, “এখন পর্যন্ত ৩২টি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এরমধ্যে তিন জন শিশু,আট জন নারী ও একুশ জন পুরুষ রয়েছেন। দু’জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। সোমবার দিবাগত রাত সাড়ে ১০ টার দিকে সুমন বেপারী নামের এক ফল ব্যসায়ীকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়।
ফায়ার সার্ভিসের এ কর্মকর্তা জানান, রাতেই লাশ পুলিশের কাছে হস্থান্তর করা হয়েছে। পুলিশ লাশগুলো স্বজনদের কাছে হস্থান্তর করছেন।
এদের মধ্যে ৩০ জনের নাম পরিচয় পাওয়া গেছে। তারা হলেন, সত্যরঞ্জন বনিক (৬৫), মিজানুর রহমান (৩২), শহিদুল (৬১), সুফিয়া বেগম (৫০), মনিরুজ্জামান (৪২), সুবর্ণা আক্তার (২৮), মুক্তা (১২), গোলাম হোসেন ভুইয়া (৫০), আফজাল শেখ (৪৮), বিউটি (৩৮), ছানা (৩৫), আমির হোসেন (৫৫), মো. মহিম (১৭), শাহাদাৎ (৪৪), শামীম ব্যাপারী (৪৭), মিল্লাত (৩৫), আবু তাহের (৫৮), দিদার হোসেন (৪৫), হাফেজা খাতুন (৩৮), সুমন তালুকদার (৩৫), আয়শা বেগম (৩৫), হাসিনা রহমান (৪০), আলম বেপারী (৩৮), মোসা. মারুফা (২৮), শহিদুল হোসেন (৪০), তালহা (২), ইসমাইল শরীফ (৩৫), সাইফুল ইলাম (৪২), তামিম ও সুমনা আক্তার। বাকি দুজনের পরিচয় এখনও জানা যায়নি।
দক্ষিন কেরানিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শাহ জামান বাসসকে জানান, লঞ্চডুবির ঘটনায় অবহেলাজনিত হত্যার অভিযোগে ময়ূর-২ লঞ্চের মালিক, মাস্টার, সুকানিসহ সাতজনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করা হয়েছে। গতকাল সোমবার রাতে নৌপুলিশ সদরঘাট থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ শামসুল বাদি হয়ে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় এই মামলা করেন।
এদিকে লঞ্চ ডুবির ঘটনা তদন্তের জন্য গঠিত সাত সদস্যের তদন্ত কমিটি তাদের তদন্ত কাজ শুরু করেছে বলে জানা যায়।
সদরঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল করিম ভূঁইয়া বলেন, সকাল সাড়ে ৯ টার দিকে “মুন্সীগঞ্জের কাঠপট্টি এলাকা থেকে ৬০-৭০ জন যাত্রী নিয়ে মর্নিং বার্ড নামের লঞ্চটি ঢাকায় ফিরছিল। লঞ্জটি ফরাশগঞ্জ ঘাটে এসে পৌছালে পিছন দিক থেকে ঢাকা-চাঁদপুর রুটের ময়ূর-২ নামে অপর একটি লঞ্চ ধাক্কা দিলে মর্নিং বার্ড লঞ্চটি ডুবে যায়।
বাসস/সংবাদদাতা/এফএইচ/১২৪৫/-অমি