বরিশালে প্রায় ১২৩ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হচ্ছে স্বপ্নের মেরিন একাডেমি ভবন

344

বরিশাল, ২৮ জুন ২০২০ (বাসস) : বরিশালে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের স্বপ্নের মেরিন একাডেমি ভবন নির্মাণ কাজের প্রায় ৯২ ভাগ কাজ ইতিমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে। ১২২ কোটি ৭৬ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীণ মেরিন একাডেমির স্থাপনের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে।
বরিশাল গণপূর্ত ও গৃহায়ণ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী জেরাল্ড অলিভার গুডা বাসস’র সাথে আলাপকালে বলেন, একাডেমিক ভবন, ডরমেটরি ভবন, কমান্ডেন্টের বাসভবন, ডেপুটি কমান্ডেন্টের ভবন, কোয়ার্টার, শিক্ষার্থীদের সুইমিং পুল, প্যারেড স্কোয়ার্ড ও বৈদ্যুতিক সাব স্টেশন থাকছে। যা হবে একটি পূর্ণাঙ্গ মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং একাডেমি। শিক্ষার্থীরা উচ্চ-মাধ্যমিক পাস করে মেরিন ইঞ্জিনিয়ার হতে এখানে পড়াশোনা করতে পারবে। আধুনিক এই মেরিন একাডেমিতে সব ধরণের সুযোগ সুবিধা রাখতেই প্রকল্পটি বড় আকারেই গ্রহণ করা হয়েছে। খুব শিগগিরই এই কাজটি শেষ করার জন্য ব্যাপক উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
বরিশাল গণপূর্ত বিভাগের সংশ্লিষ্ট সূত্র বাসস’কে জানায়, অল্প কিছুদিনের মধ্যে নদী ও সমুদ্রে দক্ষ নাবিক হয়ে জাহাজে ভেসে বেড়ানোর স্বপ্ন বাস্বব হতে চলছে দক্ষিণাঞ্চলের মেধাবী শিক্ষার্থীদের। মেরিন ক্যাডেট প্রশিক্ষণের জন্য বরিশাল ১টি মেরিন একাডেমি নির্মাণ চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। প্রকল্পের কাজ চলতি বছরের ডিসেম্বরে শেষ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
গণপূর্ত বিভাগের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, অভ্যন্তরীণ ও সমুদ্রগামী নৌযান নিরাপদ ও দক্ষতার সঙ্গে পরিচালনা, জ্ঞান-সম্পন্ন জনবল প্রস্তত এবং একই সঙ্গে বেকার সমস্যা দূর করা ও বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের জন্য প্রকল্পটি হাতে নেওয়া হয়েছে। অভ্যন্তরীণ নৌযান ও আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে দক্ষ সমুদ্র নাবিক তৈরিতে উপকূলবর্তী জাতি হিসাবে বাংলাদেশের দীর্ঘ ঐতিহ্য রয়েছে। উপযুক্ত শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ হচ্ছে দক্ষ সমূদ্র নাবিক তৈরির পূর্ব শর্ত এবং এটিই তাদের বাণিজ্যিক নৌযানে চাকরির সুযোগ তৈরিতে সহায়তা করে। সঠিক শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের জন্য বাস্তব কারিগরি সুবিধাসহ আদর্শ পরিবেশ প্রয়োজন। মেরিন একাডেমি স্থাপন করা হলে সম্ভাব্য মেধাবী সমুদ্র নাবিক চিহিৃতকরণসহ তাদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণের মাধ্যমে স্বয়ংসম্পূর্ণ করে গড়ে তোলা যাবে।
উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা শেষ করেই মেরিন একাডেমিতে শিক্ষার্থীরা ভর্তি হতে পারবে। প্রাথমিক অবস্থায় প্রি-সি নার্টিক্যাল সাইন্স ও প্রি-সি মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং এ ২টি কোর্সে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে। ৪ বছর মেয়াদী এ কোর্সে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের প্রি-সি মেরিন মার্চেন্ড সনদ দেয়া হবে। জাতি সংঘের অঙ্গ সংস্থা মেরিটাইম অর্গানাইজেশন সুইডেনের ওয়ার্ল্ড মেরিটাইম ইউনির্ভাসিটির নিয়ন্ত্রণে এ মেরিন একাডেমি পরিচালিত হবে। এখান থেকে উত্তীর্ণরা জাহাজ চালনা, নৌ প্রকৌশল, ইলেকট্রিক ও যোগাযোগ ব্যবস্থা বিভাগে চাকরির সুযোগ পাবেন। প্রায় ৫ লাখ থেকে ২৫ লাখ টাকা পর্যন্ত বেতন পেয়ে থাকেন একজন দক্ষ মেরিনার্স।
এব্যপারে বরিশালের প্রবীণ সাংবাদিক কাজী আবুল কালাম আজাদ বলেন, মেরিন একাডেমি নির্মাণ ও শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হলে দক্ষিণাঞ্চলের নদী ও সমুদ্র পথ সমৃদ্ধশালী এবং গতিশীল করা সম্ভব হবে। দেশের হাজার-হাজার শিক্ষার্থী মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ওপর লেখাপড়া করার সুযোগ পাবে, সৃষ্টি হবে কর্মসংস্থানের।