নীল নদের বাঁধ ভরাট বিলম্বিত করতে সম্মত হলো মিশর, ইথিওপিয়া ও সুদান

568

কায়রো, ২৭ জুন, ২০২০ (বাসস ডেস্ক) : একটি চুক্তিতে উপনীত না হওয়া পর্যন্ত নীল নদ তীরে আদ্দিস আবাবার মেগা-বাঁধ ভরাট বিলম্বিত করার ব্যাপারে ঐক্যমতে পৌঁছেছে মিশর, ইথিওপিয়া ও সুদান।
মিশরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল সিসি শুক্রবার জানান, প্রকল্পটি নিয়ে সব পক্ষের জন্য আইনগতভাবে বাধ্যতাবাধক একটি চূড়ান্ত চুক্তির একটি অংশ হিসেবে বাঁধ ভরাট বিলম্বিত করার ব্যাপারে এই তিন দেশের মধ্যে এই ঐকমত্য হয়েছে, যা নিয়ে এতদিন সংশ্লিষ্ট দেশত্রয়ের মধ্যে উত্তেজনা চলছিল। আগামী সোমবার এই রেঁনেসা বাঁধ নিয়ে আলোচনা উত্থাপনের জন্য জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে এ ব্যাপারে একটি চিঠি পাঠানো হবে ।খবর এএফপি’র।
ইথিওপিয়া ইতোপূর্বে শক্তিশালী প্রতিপক্ষ মিশর ও সুদানের অসম্মতিকে উপেক্ষা করেই নীল নদের ওপর সুবিশাল বাঁধটি আগামী মাস থেকে ভরাটের জন্য চাপ সৃষ্টি করেছিল। মিশরের প্রেসিডেন্ট ফাত্তাহ আল-সিসি আরো বলেছেন, ‘বাঁধ ভরাটসহ যে কোনো এক তরফা প্রচেষ্টা রোধ করার ওপর গুরুত্বারোপ করে সকল পক্ষকে আইনগত বাধ্যবাধকতায় আনার জন্যই চুড়ান্ত চুক্তি আলোচনার বিবেচনায় আনার জন্যই চিঠটি প্রেরণ করা হবে।’
সুদানের প্রেসিডেন্ট আব্দাল্লা হামদোক এক বিবৃতিতে বলেন, ‘কোনো চুক্তি সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত বাঁধ ভরাট বিলম্বিত হতে হবে।’ সুদানের প্রেসিডেন্টের অফিস জানায়, ইথিয়পিয়ার প্রস্তাব অনুসারে তিনটি দেশের প্রযুক্তিগত কমিটি দুই সপ্তাহের মধ্যে একটি চূড়ান্ত চুক্তির চেষ্টা করবে। হামদোক বলেন,‘সুদান বাঁধটির বড় ধরণের সুভিধাভোগী তবে বাঁধের ঝুঁকির প্রশোমন না হলে তারা বড় ধরণের ক্ষতিগ্রস্থ হবে, সুতরাং এর প্রয়োজনীয়তার কথা ভেবে মিশর ও ইথিয়পিয়াকে এর সমাধান খুঁজে বেরে করতে হবে।’
আফ্রিকান ইউনিয়নের কার্যনির্বাহী পরিষদের জরুরি ভার্চুয়াল অধিবেশনে এই ব্যাপারে কিছুটা অগ্রগতি হয়েছিল। দক্ষিণ আফ্রিকার রাষ্ট্রপতি সিরিল রামাফোসার সভাপতিত্বে ওই অধিবেশনে অন্যান্যদের মধ্যে কেনিয়ার রাষ্ট্রপতি উহুরু কেনায়াত্তাও উপস্থিত ছিলেন।
‘ইথিওপিয়ান রেনেসাঁ ড্যাম (জিইআরডি)’ নামে পরিচিত বাঁধটি নিয়ে সা¤প্রতিক মন্ত্রী পর্যায়ের আলোচনায় বাঁধ ভরাট সংক্রান্ত কোন চুক্তি গঠনে ব্যর্থ হওয়ায় ইথিপিয়া, মিশর ও সুদানের মধ্যে রাজনৈতিক উত্তেজনা চলছে।
জুলাই মাসে নীল নদের তীরের বাঁধটি ভরাট শুরু করার পরিকল্পনা নিয়েছিল আদ্দিস আবাবা।
রেনেসাঁ বাঁধটি মূলত ইথিপিয়ার জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য নির্মিত। মিশর এই বাঁধকে অস্তিত্বের হুমকি হিসেবে দেখছে এবং গত সপ্তাহে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদকে এই বিরোধ অবসানে হস্তক্ষেপের অনুরোধ জানিয়েছে।
কায়রো আশঙ্কা করছে, বাঁধটি ৯৭ শতাংশ প্রয়োজনীয় পানি সরবরাহকারি নীল নদের পানি সরবরাহকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। তবে ইথিয়পিয়া বাঁধটিকে বিদ্যুতায়ন ও উন্নয়নের জন্য অপরিহার্য বলে মনে করছে।