হজের জন্য এবার যারা নাম নিবন্ধন করেছেন তাদের নিবন্ধন ২০২১ সালের জন্য বহাল থাকবে : ধর্ম সচিব

208

ঢাকা, ২৪ জুন, ২০২০ (বাসস) : চলতি বছর (২০২০) পবিত্র হজে যাওয়ার জন্য যারা নাম প্রাক নিবন্ধন ও নিবন্ধন করেছেন তাদের উভয় নিবন্ধনই আগামী বছরের (২০২১) হজের জন্য বহাল থাকবে।
আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পবিত্র হজ বাতিলের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশের করণীয় নির্ধারণ করতে আজ দুপুরে এক আন্তঃমন্ত্রণালয় (অনলাইন) সভায় এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ নূরুল ইসলাম।
সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক, চলতি ২০২০ সালের পবিত্র হজের জন্য যারা নাম নিবন্ধন করেছেন তারা চাইলে আগামী ১৩ জুলাই থেকে নিবন্ধন বাতিল করে টাকা ফেরত নেয়ার জন্য আবেদন করতে পারবেন। সে ক্ষেত্রে হজের নিবন্ধনের পাশাপাশি প্রাক নিবন্ধনও বাতিল হয়ে যাবে।
সভার পর ভিডিও বার্তায় ধর্মসচিব মো. নুরুল ইসলাম বলেন, হজের ওয়েবসাইটে নিবন্ধন ও প্রাক নিবন্ধনের মতোই নিবন্ধন বাতিলের নতুন একটি সফটওয়্যারযুক্ত করা হবে আগামী ১২ জুলাইয়ের মধ্যে। ফলে আগামী ১৩ জুলাই থেকে যারা নিবন্ধন বাতিল করে টাকা ফেরত নিতে ইচ্ছুক তারা আবেদন করতে পারবেন।
তিনি জানান, কোন রকম চার্জ কর্তন ছাড়াই সরকারি ব্যবস্থাপনার যাত্রীদের সোনালী ব্যাংক থেকে চেক বা পে অর্ডারের মাধ্যমে ফেরত দেয়া হবে। বেসরকারি ব্যবস্থাপনার হজযাত্রীরা স্ব-স্ব এজেন্সির মাধ্যমে ধর্ম মন্ত্রনালয়ে নিবন্ধন বাতিলের আবেদন করবেন। তারাও সরাসরি অথবা চেক কিংবা অনলাইন ট্রান্সফারের মাধ্যমে টাকা ফেরত নিতে পারবেন।
ধর্মসচিব বলেন, টাকা ফেরতের ক্ষেত্রে যাতে কোন রকমের জটিলতা তৈরী না হয় তার জন্য ধর্ম মন্ত্রনালয় নিবীড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করবে। হজের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে চিকিৎসা সরঞ্জামাদিক্রয়সহ অন্যান্য ক্রয়ের যেসব প্রক্রিয়া চলমান ছিল সেগুলো বাতিলের সিদ্ধান্ত হয়েছে এবং চিঠি দিয়ে সংশ্লিষ্টদের জানিয়ে দেয়া হবে বলে জানান তিনি।
বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাসের ভয়াবহ সংক্রমণ পরিস্থিতিতে সৌদি আরব সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, বাহির থেকে কোন দেশের হজযাত্রী এ বছরের হজ কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করবেন না।
ধর্ম সচিব মোঃ নুরুল ইসলাম জানান, সভার শুরুতে ধর্ম বিষয়ক মন প্রতিমন্ত্রী শেখ মোঃ আব্দুল্লহর আকস্মিক মৃত্যুতে তাঁর রুহের মাগফিরাত কামনা করে মোনাজাত করা হয় ও তাঁর শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করা হয়।
ধর্ম সচিব বলেন, ২০২০ সালের জন্য যাদের প্রাক-নিবন্ধনের মেয়াদ বৈধ ছিল তা ২০২১ সালের জন্য বলবৎ থাকবে।
সরকারি ও বেসরকারি উভয় ব্যস্থাপনার যেসব প্রাক-নিবন্ধিত ব্যক্তি ২০২০ সালের হজের জন্য নিবন্ধন করেছিলেন তাঁদের নিবন্ধন ২০২১ সালের জন্য বৈধ থাকবে। নিবন্ধনকারী হজযাত্রীদের জমাকৃত টাকা ২০২১ সালের প্যাকেজ মূল্যের সাথে সমন্বয় করা হবে।
তিনি বলেন, নিবন্ধন বাতিলকারী হজযাত্রীদের প্রাক-নিবন্ধন ও নিবন্ধনের টাকা কোন প্রকার কর্তন ব্যতিত ফেরৎ প্রদান করা হবে। সরকারি ব্যবস্থাপনার হজযাত্রীদের ক্ষেত্রে সোনালী ব্যাংক থেকে প্রাক-নিবন্ধন ও নিবন্ধনের অর্থ সরাসরি হজযাত্রীর একাউন্টে স্থানান্তর করা হবে। কোন হজযাত্রীর ব্যাংক হিসাব না থাকলে তাঁর ইচ্ছানুযায়ী চেক/পে-অর্ডারের মাধ্যমে পরিশোধ করা হবে।
ধর্ম সচিব বলেন, বেসরকারি ব্যবস্থাপনার হজযাত্রীদের ক্ষেত্রে নিবন্ধনের জন্য জমাকৃত অর্থ হজযাত্রীর ইচ্ছানুযায়ী সরাসরি ব্যাংক থেকে অথবা এজেন্সির মাধ্যমে গ্রহণ করতে পারবেন। এক্ষেত্রে প্রাক-নিবন্ধনের জন্য জমাকৃত অর্থ পূর্বের ন্যায় পরিচালক, হজ অফিস, ঢাকা থেকে হজযাত্রীর ইচ্ছানুযায়ী সরাসরি তাঁর ব্যাংক হিসাবে চেক এর মাধ্যমে অথবা এজেন্সির মাধ্যমে ফেরৎ প্রদান করা হবে।
তিনি বলেন, এ বছর বাংলাদেশ থেকে কোন হজযাত্রী প্রেরণ করা হবে না বিধায় স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ কর্তৃক কোন ভ্যাকসিন ক্রয় করা হবে না। এছাড়া এ বছর বাংলাদেশ থেকে কোন হজযাত্রী প্রেরণ করা হবে না বিধায় ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে আহ্বানকৃত ঔষধ ও চিকিৎসা সরঞ্জামাদি ক্রয় সংক্রান্ত দরপত্র বাতিল করে সংশ্লিষ্ট সকলকে অবহিত করতে হবে।
ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব হজ এবিএম আমিন উল্লাহ নূরী’র সঞ্চালনায় এ অনলাইন সভায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়, সুরক্ষা সেবা বিভাগ, জননিরাপত্তা বিভাগ, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগ, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, তথ্য মন্ত্রণালয়, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স লি., ইসলামিক ফাউন্ডেশন, ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর, ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার, কাউন্সেলর (হজ), জেদ্দা, পরিচালক, হজ অফিস, ঢাকা, বাংলাদেশ ব্যাংক, সোনালী ব্যাংক লি., প্রিমিয়ার ব্যাংক লি., হজ এজেন্সিজ এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব) এবং বিজনেস অটোমেশন লিমিটেড এর প্রতিনিধিগণ অনলাইনে অংশ গ্রহণ করেন।