বাসস দেশ-৩২ : ব্যাংক ঋণ নির্ভরতা বেসরকারি বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত করতে পারে

220

বাসস দেশ-৩২
আ্যামচেম- বাজেট
ব্যাংক ঋণ নির্ভরতা বেসরকারি বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত করতে পারে
ঢাকা, ১৭ জুন, ২০২০ (বাসস) : যখন বেরকারি খাতে বিনিয়োগ প্রবাহ কাঙ্খিত মাত্রায় পাওয়া যাচ্ছে না,এমতাবস্থায় প্রস্তাবিত ২০২০-২১ অর্থবছরে বাজেটের ঘাটতি ব্যয় মেটাতে ব্যাংক ঋণ নির্ভরতা বেসরকারি খাতের বিনিয়োগকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে।
বুধবার আমেরিকান চেম্বার অব কমার্স ইন বাংলাদেশের (অ্যামচেম) বাজেট পরবর্তী এক আলোচনায় অর্থনীতিবিদ ও ব্যবসায়ী নেতারা এমন মত প্রকাশ করেন। ওয়েবিনারে অ্যামচেম সভাপতি সৈয়দ এরশাদ আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনায় পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ও অর্থনীতিবিদ ড. এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম, বেসরকারি গবেষনা সংস্থা পলিসি রিসার্স ইন্সটিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর,জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া ও অ্যামচেমের সাবেক সভাপতি আফতাব-উল-ইসলাম আলোচনায় অংশ নেন।
স্বাগত বক্তব্যে অ্যামচেম সভাপতি সৈয়দ এরশাদ আহমেদ বলেন, তারল্য সংকটের এই মুহূর্তে প্রস্তাবিত বাজেটে ঘাটতি ব্যয় মেটাতে ব্যাংক ঋণ নির্ভরতা বেসরকারি খাতের ঋণের প্রবৃদ্ধিকে বাধাগ্রস্ত করবে। এক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে বেশিরভাগ ঋণ নেয়া যেতে পারে। যা বাজারে অর্থসহায়তা বাড়াতে সাহায্য করবে।
আলোচনায় অংশ নিয়ে মির্জ্জা আজিজ বলেন,ঘাটতি ব্যয় মেটাতে সরকার ৮৫ হাজার কোটি টাকা ব্যাংক ঋণ নেয়ার পরিকল্পনা করেছে। এর কতটুকু বেসরকারি ব্যাংক এবং কতটুকু কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে নেয়া হবে তা বলা হয়নি। গত কয়েক বছর যাবৎ বেসরকারি বিনিয়োগ স্থবির হয়ে আছে। এ অবস্থায় মাত্রাতিরিক্ত সরকারের ব্যাংক ঋণ নির্ভরতা বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবাহকে বাঁধাগ্রস্ত করবে।
মির্জ্জা আজিজের বক্তব্যের প্রেক্ষিতে পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান বলেন, প্রবৃদ্ধির আশাবাদ আছে। আমাদের রেমিট্যান্স আসছে, রিজার্ভ ভালো, ইউরোপীয় ইউনিয়ন খুলে গেছে। এসব বিবেচনায় নিয়ে প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এরপরও বলব সংখ্যা কেবলমাত্র সংখ্যা। এটা সামনের কথা। তিনি বলেন, ঘাটতি মেটাতে সরকার ব্যাংক থেকে, সঞ্চয়পত্র থেকে ধার নেবে। ব্যাংক খাত যথেষ্ট শক্তিশালী। এছাড়া বিশ^ব্যাংক ও আইএমএফের কাছ থেকে টাকা চাইতে পারি। আমাদের অতীত রেকর্ড ভালো। বিদেশি উৎস থেকে ঋণ পেতে সমস্যা হবে না।
বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে বাংলাদেশকে ব্য্রান্ডিংয়ের বিষয়ে জানতে চাইলে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, সংস্কার চলমান প্রক্রিয়া। বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে অর্থনৈতিক অঞ্চল, কর্পোরেট কর হ্রাস, কর অবকাশসহ নানা উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। তারপরও কাঙ্খিত পর্যায়ে বিদেশি বিনিয়োগ আসছে না। প্রকৃতপক্ষে পৃথিবী আগের জায়গায় এখন নেই। দুয়ারে দুয়ারে গিয়ে সেলসম্যানের মতো বিনিয়োগ আনতে কাজ করতে হবে। এটাতে সময় লাগবে। কারণ আমলাতন্ত্র একটু ধীরেই চলে। তারপরও প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ অন্য সব দেশের চাইতে ভালো অবস্থানে আছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
কর্মসংস্থান বাড়াতে বাজেটে কী উদ্যোগ আছে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, নতুন কর্মসংস্থান তো পড়ে, কোভিডের কারণে যারা চাকরি হারিয়েছে আগে তাদের চিন্তা করা হচ্ছে। সরকার দুটি টার্গেট নিয়ে কাজ করছে। প্রথমত; করোনার কারণে যারা দারিদ্র্যসীমার নীচে ঢুকে গেছে তাদের তৎক্ষণাৎ সার্পোট দেয়া। এ জন্য ৪০ লাখ পরিবারকে ১০ টাকা কেজিতে চাল ও আড়াই হাজার টাকা দেয়া হয়েছে। দ্বিতীয়ত; লকডাউনের পর সরকার ঝুঁকি নিয়ে সব উন্মুক্ত করে দিয়েছে। এতে যারা দিন এনে দিন খায় তারা কাজে ফিরেছেন।
বাসস/এএসজি/আরআই/২১২৫/স্বব