চাঁদপুর জেলায় জুন ২০১৮ পর্যন্ত ৯৬.৬২ ভাগ স্যানিটেশন অর্জন

198

চাঁদপুর, ২২ জুলাই, ২০১৮ (বাসস) : জেলায় জুন ২০১৮ পর্যন্ত শতভাগ লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে ৯৬. ৬২ ভাগ স্যানিটেশন গড় অর্জিত হয়েছে। চাঁদপুর জেলা ব্রান্ডিং বাস্তবায়নে শতভাগ সাফল্য অর্জনকে জরুরি মনে করছেন স্বাস্থ্য সচেতন নাগরিকগণ। এখনো ৩.৩৮ ভাগ বাকি রয়েছে। তবে শতভাগ স্যানিটেশন অর্জনের লক্ষ্যে সরকার কাজ করছে।
সর্বপ্রথমে ২০০৩ সালে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণি রসায়ন বিভাগের সহায়তায় দেশব্যাপী একটি জরিপ কাজ পরিচালনা করে। ওই জরিপ রিপোর্ট মতে, চাঁদপুরের ৮ উপজেলার ৭৯ ইউনিয়নে তখন পরিবারের সংখ্যা ছিল ৩ লাখ ৫০ হাজার ২০ টি। আর স্বাস্থ্যসম্মত ল্যাট্রিন ব্যবহারকারীর সংখ্যা ছিল ১ লাখ ৬২ হাজার ৯২৫ পরিবার। পরবর্তীতে ২০১১ সালের জাতীয় আদমশুমারি অনুযায়ী চাঁদপুরের সব উপজেলার পরিবারের সংখ্যা জানুয়ারি ২০১৮ সালের জুন পর্যন্ত দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ৩২ হাজার ২৬০ পরিবার। ২০১১ সাল থেকে জেলা ও উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের সহায়তায় ডিপিএইচই, স্ব-স্ব ইউনিয়নের ২০% উন্নয়ন কাজের তহবিল কর্তৃক, সরকারের অনুমোদিত এনজিও, পারিবারিক বা ব্যক্তিগত উদ্যোগে ও কমিউনিটি কর্তৃক স্থাপিত বা নির্মিত স্বাস্থ্যসম্মত ল্যাট্রিন ব্যবহারকারীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে থাকে। এদের সংখ্যা ২০১৮ সালের মাথায় বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়ায় ২ লাখ ৫৯ হাজার ৪৬টি পরিবার। যা বৃদ্ধি পেয়ে স্বাস্থ্যসম্মত ল্যাট্রিন ব্যবহারকারী পরিবারের সংখ্যা মোট দাঁড়ায় ৪ লাখ ২১ হাজার ৯৭১টি। প্রাপ্ত পরিসংখ্যান মতে, আরো ১০ হাজার ২৮৯টি পরিবার এখনো স্বাস্থ্যসম্মত ল্যাট্রিন ব্যবহার করতে পারেনি। যার হার শতকরা ৩ দশমিক ৩৮ ভাগ।
চাঁদপুর জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের দেয়া তথ্য মতে, ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী জানুযারি ২০১৮ সালের জুন পর্যন্ত স্বাস্থ্যসম্মত ল্যাট্রিন ব্যবহারকারী চাঁদপুরের উপজেলাগুলোর মধ্যে চাঁদপুর সদরে ৯৬.২৭%, কচুয়ার ৯৯.৯৬%, শাহরাস্তির ৯৭.৪২%, ফরিদগঞ্জের ৮৪.৩৭%, হাজীগঞ্জের ৯৮.৮২%, মতলব দক্ষিণে ৯৮.৩৭%, মতলব উত্তরের ৯৭.৪৭% ও হাইমচরের ৮৪.৮২%।
প্রাপ্ত পরিসংখ্যান মতে, স্যানিটেশন অর্জনের দিক থেকে এগিয়ে রয়েছে কচুয়া উপজেলা এবং সবচেয়ে পিছিয়ে রয়েছে হাইমচর উপজেলা। বিশেষ করে পৌরসভার শহরতলি বা পল্ল¬ী এলাকা ও চরাঞ্চলে স্বাস্থ্যসম্মত ল্যাট্রিন ব্যবহার কিছুটা নি¤œ পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এ ছাড়াও যৌথ পরিবারগুলো পারিবারিক কারণে একান্নভুক্ত পরিবারে পরিণত হওয়ায় স্যানিটেশন পরিসংখ্যানের পরিবর্তনও হচ্ছে। এদিকে জেলার ৫০টির ওপর ইউনিয়নে শতভাগ স্বাস্থ্যসম্মত ল্যাট্রিন ব্যবহারের আওতার ভেতর রয়েছে ।
চাঁদপুরের জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহমুদ কবির চৌধুরী জানান, স্যানিটেশনের ক্ষেত্রে আমাদের অনেক সাফল্য অর্জিত হয়েছে। পরিবেশগত দিকে তাকালে আমরা দেখতে পাই উম্মুক্ত স্থানে মলমূত্র ত্যাগ করার প্রবণতা মানুষের ভেতর এখন নেই বললেই চলে। তবে শতভাগ আশা করা সম্ভব নয়। কেননা প্রতিদিনই নতুন নতুন বাড়ি হচ্ছে, সংসার ভেঙ্গে আলাদা হচ্ছে ও নদীভাঙ্গন পরিস্থিতিতে স্যানিটেশন ল্যাট্রিন ভেঙ্গে যাচ্ছে। তিনি আরো বলেন , সাধারণ মানুষের মধ্যে স্বাস্থ্যসম্মত ল্যাট্রিন ব্যবহারে ব্যাপক সচেতনতা বেড়েছে। পানিবাহিত রোগ ডায়রিয়া ও ডিসেন্ট্রি দিন দিন হ্রাস পাচ্ছে। গ্রামের বাড়িতে নিজ নিজ পরিবারের ভেতর একটি স্বাস্থ্যসম্মত ল্যাট্রিন পারিবারিক মার্যাদা বাড়িয়ে দিচ্ছে ও বাড়ির ঐতিহ্য ধরে রাখছে। জাতীয়ভাবে ২০১৮ সালের মধ্যে সারা দেশে শতভাগ স্যানিটেশন অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। তিনি আরো জানান, বাংলাদেশ পল্ল¬ী উন্নয়ন ও স্যানেটারি প্রজেক্টের আওয়াতায় চাঁদপুর জেলার শাহারাস্তি হাজীগঞ্জ ও কচুয়ায় জুন ২০১৫-১৬, ২০১৬-২০১৭ বছরে প্রাথমিক স্কুলের শতভাগ স্যানিটেশন অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল, যা অর্জিত হয়েছে। ২০১৭-২০১৮ বছরে বাকি উপজেলার প্রাথমিক স্কুলগুলো স্যানিটেশনের আওতায় আসবে, যার কাজ চলমান আছে ।