রাজিস-৩ : রংপুরে ছাদে ও বসতবাড়ির আংগিনায় মসলা ফসল চাষের উদ্যোগ

153

রাজিস-৩
মসলা-চাষ-ছাদ-আংগিনা
রংপুরে ছাদে ও বসতবাড়ির আংগিনায় মসলা ফসল চাষের উদ্যোগ
রংপুর, ১৬ জুন, ২০২০ (বাসস) : মুজিব শতবর্ষে করোনা সংকটকালীন সময়ে নতুন কৃষি প্রযুক্তির প্রথম মাঠ প্রয়োগের অংশ হিসেবে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের রংপুর আঞ্চলিক কার্যালয় রংপুর মেট্রো এলাকার বসতবাড়ির ছাদে ও আংগিনায় মসলা জাতীয় ফসল চাষের উদ্যোগ গ্রহন করেছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘এক ইঞ্চি জমিও অনাবাদি রাখা যাবে না’ ঘোষণা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের রংপুর অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবিদ মোহাম্মদ আলী সোমবার বিকেলে তাঁর অফিস চত্বরে ছাদবাগানী ও স্থানীয় কৃষিজীবীদের মাঝে আদা ও মরিচের চারা বিতরনের মাধ্যমে এ উদ্যোগের উদ্বোধন করেন।
পর্যায়ক্রমে তিনি সাড়ে তিন হাজার আদার চারা ও সমপরিমান হাইব্রিড মরিচের চারা ছাদবাগানী ও স্থানীয় কুষিজীবীদের বাড়ি বাড়ি পৌছে দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছেন।
উক্ত আয়োজনের বিশেষত্ব হল, আদা চাষে চারা উৎপাদন ও রোপণ পদ্ধতির মাঠ প্রয়োগ, যে প্রযুক্তিটি বাংলাদেশে এই প্রথম বলে দাবি করছেন চারা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান নাশিক প্লান্ট এন্ড পট, রংপুরের কর্মকর্তারা।
প্রযুক্তি সম্পর্কে ব্যখ্যা প্রদান করতে গিয়ে সিনজেনটা ফাউন্ডেশন ফর সাসটেনেবল এগ্রিকালচারাল, বাংলাদেশ এর প্রোগ্রাম ম্যনেজার কৃষিবিদ মো. শাহিনুর ইসলাম শাহিন বলেন, আদা চাষে যে পরিমাণ বীজ-আদা প্রয়োজন হয় তার এক অষ্টমাংশ আদার প্রয়োজন হবে সমপরিমাণ জমিতে আদা চাষের জন্য। আদা চাষের মোট উৎপাদন করচের প্রায় অর্ধেক সাশ্রয় হবে এই প্রযুক্তি প্রয়োগে।
কৃষিবিদ মোহাম্মদ আলীর পরিকল্পনা, অনুপ্রেরণা ও আগ্রহে কুষিবিদ শাহিনের তত্বাবধানে নাশিক প্লান্ট এন্ড পট এর কৃষিবিদ জান্নাত মৌ এর নিবিড় পরিচর্যায় সফল ভাবে আদার চারা উৎপাদন করা হয়। কৃষিবিদ মোহাম্মদ আলী জানান, সরাসরি বীজ হিসেবে আদা রোপনের পর অতি বৃষ্টিপাত হলে উক্ত বীজ আ্দা পচে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকে। কিন্তু,প্রযুক্তি প্রয়োগ করে আদা চারা রোপণের পর সে ধরনের ক্ষতির সম্ভাবনা থাকেনা এবং এতে করে আগাছার আক্রমন তুলনামূলক কম। চারা উৎপাদনের ফলে মুল জমি অন্য কোন বাড়তি ফসল আবাদেও জন্য বাড়তি এক মাস খালি পাওয়া যাবে।
কৃষিবিদ মোহাম্মদ আলী জানান, এবারের উৎপাদিত চারার ফলাফল নিরুপনের জন্য নিবিড় মনিটরিং করা হবে। ফলাফল সন্তোষজনক হলে আগামীতে এই প্রযুক্তির মাধ্যমে আদা চাষের ব্যপক পরিকল্পনা গ্রহন করা হবে।
বর্তমান কৃষিবান্ধব সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে মুজিব বর্ষে এমন উদ্যোগ নিতে পেরে তিনি আনন্দিত বলে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।
এসময় আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে কৃষিবিদ মোহাম্মদ আলী তার অফিস চত্বরে আমন্ত্রিত আদা চাষি, ছাদবাগানী ও স্থানীয় কৃষিজীবীদের মাঝে আদা ও মরিচের চারা বিতরন করেন।
অন্যন্যদেও মধ্যে চারা বিতরন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বংগবন্ধু কৃষিবিদ পরিষদ, রংপুর জেলা শাখার সভাপতি ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অবসরপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মোঃ আলী আজম, রংপুর জেলার উপ-পরিচালক কুষিবিদ ড. মোঃ সরওয়ারুল হক, রংপুর মেট্রো কৃষি অফিসের কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোসলেমা, সিনজেনটা ফাউন্ডেশন ফর সাসটেনেবল এগ্রিকালচারাল, বাংলাদেশ এর প্রোগ্রাম ম্যনেজার কৃষিবিদ মোঃ শাহিনুর ইসলাম শাহিন, নাশিক প্লান্ট এন্ড পট, রংপুর এর কৃষিবিদ জান্নাত মৌ, মেট্রো রংপুর এর উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা ও আমন্ত্রিত প্রায় ৩০ জন কৃষিজীবী ও ছাদবাগানী। নতুন প্রযুক্তি প্রয়োগের সুযোগ পেয়ে আমন্ত্রিত কৃষিজীবীরা তাদের সন্তুষ্টি প্রকাশ করে এ উদ্যোগের প্রশংসা করেন।
বাসস/এমআই/১৩২০/নূসী