বাসস দেশ-২০
জাল টাকা-গোয়েন্দা
জাল টাকা বিস্তার রোধে বাড়ানো হয়েছে গোয়েন্দা নজরদারী
ঢাকা, ২১ জুলাই, ২০১৮ (বাসস) : কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে পশুর হাটসহ দেশব্যাপী জাল টাকা বিস্তার রোধে গোয়েন্দা নজরদারী বাড়ানো হয়েছে।
জাল টাকা তৈরি চক্রের তৎপরতা বৃদ্ধির পাশাপাশি পুলিশও নতুন নতুন কৌশল নিয়ে মাঠে নামছে উল্লেখ করে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি-মিডিয়া) মো. ওবায়দুর রহমান বাসসকে বলেন, জালটাকা তৈরি চক্র ঈদকে সামনে রেখে সক্রিয় হয়ে উঠছে। আর এর বিস্তাররোধে গোয়েন্দা তৎপরতাও বৃদ্ধি করেছে আইনশৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনী।
তিনি বলেন, ঈদকে সামনে রেখে দেশের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালানো হচ্ছে। জাল টাকাসহ চক্রের সদস্যদের গ্রেফতার করা হচ্ছে। পুলিশের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে জাল টাকা চক্রের ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
জাল টাকা চক্রের সঙ্গে জড়িতরা ধরা পড়ার পরও সহজেই জামিনে বেরিয়ে আসে। জাল টাকার অবৈধ ব্যবসা বন্ধ না হওয়ায় এটিকে অন্যতম কারণ উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই চক্রের সঙ্গে জড়িতরা প্রায় প্রত্যেকেই পারিবারিকভাবে এই অবৈধ কাজে সম্পৃক্ত। স্বামী পুলিশের হাতে ধরা পড়লে তার স্ত্রী, ভাই ধরা পড়লে তার বোন কিংবা তাদের সন্তানরা জড়িয়ে পড়ে এই কাজে।
ওবায়দুর রহমান বলেন, ইতোমধ্যে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে গোয়েন্দা পুলিশ অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমান জালটাকাসহ বেশ কয়েকজনকে আটক করেছে। গোয়েন্দা নজরদারির কারণে গত ১৯ জুলাই রাজধানীর কল্যাণপুরে ৩২ লাখ জাল টাকাসহ চারজনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত মো. জসিম মোড়ল (৩০), মো: আব্দুল জলিল (২৮), সাগর ওরফে রিপন দাশ (৩০) ও মো: জালাল উদ্দিন (২৮) পুলিশকে জানিয়েছে তারা কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে এসব জাল টাকা তৈরি করছে এবং তাদের নেটওয়ার্কের মাধ্যমে সারাদেশে ছড়িয়ে দিচ্ছে।
গোয়েন্দা পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা জানিয়েছে, ৫/৬ বছর যাবৎ তারা পরস্পর যোগসাজশে বাংলাদেশী জালনোটসহ বিভিন্ন দেশের জাল মুদ্রা প্রস্তুত ও বাজারজাত করে আসছে।
এ ব্যাপারে মিরপুর মডেল থানায় একটি নিয়মিত মামলা দায়ের করা হয়।
এডিসি-মিডিয়া ওবায়দুর রহমান বলেন, জাল টাকার ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে র্যাব-পুলিশসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সর্তক রয়েছে। জাল টাকার প্রতিরোধে গোয়েন্দা পুলিশের একটি পৃথক টিম রয়েছে। ওই টিম জাল টাকা প্রস্তুতকারী ও সরবরাহকারীদের বিরুদ্ধে কার্যক্রম চালাচ্ছে।
পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পুলিশ সদর দফতরের নির্দেশ অনুযায়ী জাল টাকা তৈরি ও এইসব জাল টাকা বিস্তার প্রতিরোধে গোয়েন্দা নজরদারির সঙ্গে জড়িত সকল গোয়েন্দা সংস্থাকে শক্তিশালী করা হয়েছে। আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জালমুদ্রা তৈরি সিন্ডিকেটের সাথে সম্পর্কিত তথ্য সংগ্রহ করছে।
পুলিশ সদর দফতর সূত্রে জানা গেছে, পুলিশের শীর্ষ পর্যায় থেকে জালটাকা তৈরি চক্রের সদস্যদের সনাক্তের পর বিশেষ অভিযান চালানোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
বিশেষ করে শপিংমল ও ব্যাংক এলাকায় গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানোর ওপর তাগিদ দেয়া হয়েছে। কারণ ঈদকে সামনে রেখে জালটাকার বিস্তার বেড়ে যায়।
এই চক্রে বিভিন্ন জালমুদ্রা বিশেষ করে মার্কিন ডলার, ইউরো, পাঊন্ড, রুপিসহ ৩০টিরও বেশি সিন্ডিকেট জড়িত রয়েছে বলে পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
পুলিশ জানায়, এই অবৈধ ব্যবসা চালানোর জন্য অপরাধীরা সাধারণত ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, সাভার টঙ্গী, গাজীপুর, মুন্সিগঞ্জ ও কেরানীগঞ্জের বিভিন্ন অংশের বস্তি এলাকাগুলোকে বেছে নেয়। জালটাকা তৈরির চক্র ৫০০ টাকার নোট তৈরির জন্য ১৫০ টাকা খরচ করে এবং প্রথম পক্ষের কাছে ৩৫০ টাকায় বিক্রি করে থাকে।
বাসস/এমএমবি/এসপিএল/২০০২/- জেজেড