রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে অস্ট্রেলিয়ার সহযোগিতা কামনা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর

385

ঢাকা, ১২ জুন, ২০২০ (বাসস) : পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের নিজ-ভূমি মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনে অস্ট্রেলিয়ার সহযোগিতা কামনা করেছেন।
তিনি একইসাথে বাংলাদেশে বিনিয়োগের আকর্ষণীয় ও অনুকুল পরিবেশের উল্লেখ করে অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন কোম্পানিকে বাংলাদেশে বিনিয়োগ করারও আহবান জানিয়েছেন।
ড. মোমেন বৃহস্পতিবার অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও সিনেটর মারিস এ্যান পেইনের সাথে টেলিফোনে আলাপকালে এ আহবান জানান।
পেইনের সাথে আলাপকালে দৃঢ়তার সাথে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের যেকোন দেশের তুলনায় বাংলাদেশে বিনিয়োগ অত্যন্ত লাভজনক। কারণ এদেশে বিনিয়োগ-বান্ধব পরিবেশ বিদ্যমান।
অন্য-দেশ থেকে কোন কোম্পানি এদেশে তাদের বিনিয়োগ স্থানান্তর করতে চাইলেও বাংলাদেশ স্বাগত জানাবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বর্তমান বৈশ্বিক সমস্যা করোনার (কোভিড-১৯) কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে বাংলদেশ সরকার দেশে কর্মসংস্থান বৃদ্ধি করতে চায়।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ১০০টি অথনৈতিক অঞ্চল সৃষ্টি করছে, যেখানে অস্ট্রেলিয়ান বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগ করলে তারা যেমন লাভবান হবে, তেমনি বাংলাদেশিদেরও কর্মসংস্থান হবে। এছাড়া বাংলাদেশে ২৮টি হাইটেক পার্কের পাশাপাশি তথ্য-প্রযুক্তিতে দক্ষ বিপুল সংখ্যক জনগোষ্ঠী রয়েছে বলেও ড. মোমেন উল্লেখ করেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে অস্ট্রেলিয়ার সরকারের সহায়তা কামনা করে বলেন, রোহিঙ্গারা নিজ-ভূমি মিয়ানমারে ফিরে গেলেই কেবল তাদের ভবিষ্যৎ নিশ্চিত হতে পারে। অনুকুল পরিবেশ সৃষ্টি করে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে ফিরিয়ে নেওয়ার ওপর গুরুত্ব দিয়ে ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন বলেন,‘রোহিঙ্গারা বাংলাদেশের নাগরিক নয়। সম্পূর্ণ মানবিক কারণে বাংলাদেশ সাময়িকভাবে তাদের আশ্রয় দিয়েছে। মিয়ানমারে নির্যাতিত হয়ে রোহিঙ্গারা গভীর সমুদ্রে আশ্রয় নিলেও কোন দেশ তাদের উদ্ধারে এগিয়ে আসেনি। অন্যান্য দেশেরও উচিত তাদের দায়িত্ব নেওয়া।’
বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ সময় উল্লেখ করেন, মানবিক কারণে সমুদ্র থেকে উদ্ধার করা কিছু সংখ্যক রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে রাখা হয়েছে। সম্প্রতি সাইক্লোন আম্ফানের আঘাতে সারাদেশে ব্যাপক ক্ষতি হলেও ভাসানচরে-এর কোন প্রভাবই পড়েনি। সেখানে আশ্রিত রোহিঙ্গারা কিছু অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে নিজেদের সম্পৃক্ত করতে পারবে বলেও ড. মোমেন জানান।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ৪৮টি দেশের সংগঠন ‘ক্লাইমেট ভার্নারেবল ফোরামের’ (সিভিএফ) সভাপতি হিসেবে বাংলাদেশ ইতোমধ্যে দায়িত্ব গ্রহণ করেছে। তাই পৃথিবীর তাপমাত্রা যাতে কোনভাবেই ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডের বেশী বৃদ্ধি না-পায় সেজন্য এ ফোরামের নানা উদ্যোগের বিষয়েও তিনি অস্ট্রেলিয়ার সহায়তা কামনা করেন।
ড. মোমেন ফোনালাপে অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে জানান, জাতিসংঘে কমনওয়েলথের কোন অফিস বা প্রতিনিধি না থাকায় জাতিসংঘের আলোচনায় এ ফোরাম (সিভিএফ) সদস্য রাষ্ট্রগুলোর স্বার্থ রক্ষায় যথাযথ ভূমিকা রাখতে ব্যর্থ হচ্ছে। জাতিসংঘের আলোচনায় প্রতিনিধিত্ব থাকলে ‘সংস্থা’ হিসেবে কমনওয়েলথের মতো এ ফোরামেরও কার্যকারিতা বৃদ্ধি পাবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
এসময় ড. মোমেন করোনা মহামারীকালে অস্ট্রেলিয়ায় অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীসহ সেদেশে বসবাসকারি বাংলাদেশীদের সহযোগিতার জন্য অস্ট্রেলিয়ার সরকারকে ধন্যবাদ জানান।