প্রস্তাবিত বাজেটে সিগারেট ও বিড়ির দাম বাড়ানো হয়েছে

587

ঢাকা, ১১ জুন, ২০২০ (বাসস) : ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে সিগারেট ও বিড়ির দাম বাড়ানো হয়েছে। বিশ্বব্যাপী ধূমপানবিরোধী রাষ্ট্রীয় নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য বিধান, তামাকজাত পণ্যের স্বাস্থ্যঝুঁকি থাকায় এর ব্যবহার কমানো এবং রাজস্ব আয় বাড়ানোর লক্ষ্যে এ দাম বাড়ানো হচ্ছে বলে বলা হয়েছে।
বাজেটে সিগারেটের নিম্নস্তরের ১০ শলাকার দাম ৩৭ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩৯ টাকা করার প্রস্তব করা হয়েছে। সেই সঙ্গে সম্পূরক শুল্ক ৫৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৫৭ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
মধ্যম স্তরের ১০ শলাকার দাম ৬৩ টাকা ও তদূর্ধ্ব এবং উচ্চস্তরের ১০ শলাকার দাম ৯৭ টাকা ও তদূর্ধ্ব এবং অতি উচ্চস্তরের ১০ শলাকার দাম ১২৮ টাকা ও তদূর্ধ্ব এবং এই স্তরের সিগারেটের সম্পূরক শুল্ক ৬৫ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
এ ছাড়া ফিল্টারবিহীন বিড়ির ২৫ শলাকার দাম ১৪ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৮ টাকা, ১২ শলাকার দাম ৬ দশমিক ৭২ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৯ টাকা, ৮ শলাকার দাম ৪ দশমিক ৪৮ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৬ টাকা ও সম্পূরক শুল্ক ৩০ শতাংশ অব্যাহত রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে।
ফিল্টারযুক্ত বিড়ির ২০ শলাকার দাম ১৭ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৯ টাকা। ১০ শলাকার দাম সাড়ে ৮ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১০ টাকা ও সম্পূরক শুল্ক ৪০ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
অন্যদিকে স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর আরেকটি পণ্য হলো জর্দা ও গুলএর ব্যবহার কমানোর জন্য প্রতি ১০ গ্রাম জর্দার দাম ৩০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৪০ টাকা ও প্রতি ১০ গ্রাম গুলের দাম ১৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২০ টাকা করা হয়েছে। পাশাপাশি দুটোরই সম্পূরক শুল্ক ৫০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৫৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে।
সিগেরেট ও বিড়ির মূল্য বুদ্ধি নিয়ে তাৎক্ষণিক বাজেট প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে তামাক বিরোধী সংগঠন প্রজ্ঞা ও আত্মা।
প্রজ্ঞার কো-অর্ডিনেটর মো. হাসান শাহরিয়ার স্বাক্ষরিত লিখিত তাৎক্ষনিক প্রতিক্রিয়ায় বলা হয়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাসহ জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞগণ তামাককে করোনা সংক্রমণ সহায়ক হিসেবে চিহ্নিত করে এর ব্যবহার নিরুৎসাহিত করার জন্য জোর তাগিদ দেয়া হয়েছে।
প্রতিক্রিয়ায় সিগারেটের ৪টি মূল্যস্তর বহাল রাখায় কমদামি সিগারেট বেছে নেয়ার সুযোগ অব্যাহত থাকবে এবং তরুণরা ধূমপান শুরু করতে উৎসাহিত হবে উল্লেখ করে বলা হয়, ফলে সিগারেটের ব্যবহার না কমে বরং বৃদ্ধি পাবে।
বলা হয়, বাজেট প্রস্তাবে নিম্নস্তরে ১০ শলাকা সিগারেটের দাম ২ টাকা বাড়িয়ে ৩৯ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে, অর্থাৎ প্রতি শলাকায় দাম বৃদ্ধি পাবে মাত্র ২০ পয়সা বা ৫.৪ শতাংশ। অথচ একইসময়ে মানুষের মাথাপিছু আয় বেড়েছে ১১.৬ শতাংশ।
সিগারেট বাজারের প্রায় ৭২ শতাংশই নিম্নস্তরের সিগারেটের দখলে উল্লেখ করে আরো বলা হয় , এই স্তরে সম্পূরক শুল্ক ধার্য করা হয়েছে ৫৭ শতাংশ, যা গতবছর ছিল ৫৫ শতাংশ। প্রস্তাবিত বাজেট কার্যকর হলে এই স্তরের সিগারেটের প্রকৃতমূল্য হ্রাস পাবে এবং ব্যবহার বাড়বে।
এতে আরো বলা হয় ,তামাক কর ও মূল্য বৃদ্ধি সংক্রান্ত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বাজেট প্রস্তব গ্রহণ করা হলে সরকার তামাক খাত থেকে ১১ হাজার কোটি টাকা পর্যন্ত অতিরিক্ত রাজস্ব আয় অর্জন করতে পারতো। দীর্ঘমেয়াদে প্রায় ৬ লাখ মানুষের অকাল মৃত্যু রোধ করা সম্ভব হতো।