বাসস ক্রীড়া-১৩ : কোলকাতার দর্শকদের জবাবের অপেক্ষায় ঢাকার ফুটবল দর্শক

137

বাসস ক্রীড়া-১৩
ফুটবল-বাংলাদেশ-দর্শক
কোলকাতার দর্শকদের জবাবের অপেক্ষায় ঢাকার ফুটবল দর্শক
ঢাকা, ৯ জুন ২০২০ (বাসস) : সবকিছু স্বাভাবিক হয়ে আসলে ঢাকার ফুটবল দর্শকরা অধীর আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করবে ১২ নভেম্বরের জন্য। কারণ ওই তারিখ ২০২২ ফিফা বিশ^কাপের বাছাইপর্বের ফিরতি ম্যাচে ভারতকে আতিথেয়তা দিবে বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল।
ইতোমধ্যে এ্যাওয়ে ম্যাচ খেলে ফেলেছে লাল সবুজ জার্সির দলটি। গত বছর ১৫ অক্টোবর কোলকাতার সল্ট লেক স্টেডিয়ামে উত্তেজনাপুর্ন ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হয়। আনুমানিক ৫৫ হাজার দর্শকের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত ম্যাচে অসাধারন দক্ষতা দেখাতে সক্ষম হয় জামাল ভুঁইয়ার নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল। দুর্ভাগ্য বশ:ত জিততে জিততেই ড্র দিয়ে ম্যাচটির ইতি টানতে হয়েছে সফরকারী দলকে।
ম্যাচটি উপভোগ করতে বিপুল সংখ্যক বাংলাদেশী ফুটবল সমর্থক পাড়ি জমিয়েছিল পার্শবর্তী দেশ ভারতের কোলকাতায়। ম্যাচ শুরুর আগে উৎসব মুখর পরিবেশে বাংলাদেশ ও ভারতের সমর্থকরা নিজ নিজ দলকে সমর্থন জানাতে জড়ো হয়েছিল স্টেডিয়ামের বাইরে। এই সময় নেচে গেয়ে তারা দারুন এক পরিবেশ সৃস্টি করে।
ম্যাচের ৪২ মিনিটে বাংলাদেশ যখন গোল করে এগিয়ে যায় তখন স্বাগতিক দর্শকরা একেবারেই নিস্তব্দ হয়ে যায়। এসময় জাতীয় পতাকা দুলিয়ে বাংলাদেশের দর্শকরা উৎসবে মেতে উঠে স্টেডিয়ামে। নেচে গেয়ে তারা উৎসাহিত করে বাংলাদেশ দলকে। তবে ৮৮তম মিনিটে গোলটি পরিশোধ করে দেয় স্বাগতিক ভারত। ফলে হাসি মুখেই ঘরে ফিরতে সক্ষম হয় স্বাগতিক সমর্থকরা।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে কি ঘটতে যাচ্ছে ফিরতি লেগের ম্যাচে। কারণ প্রথম ম্যাচে জয় পেতে ব্যর্থ হয়েছে বাংলাদেশ। তাই পরের ম্যাচে যে কোন কিছুই ঘটতে পারে। ভারত নিজের মাঠে জয় পেতে ব্যর্থ হওয়ায় ঢাকায় ফিরতি ম্যাচে জয়লাভের মাধ্যমে পুরো তিন পয়েন্ট সংগ্রহ করতে চাইবে। বাংলাদেশের সামনেও থাকছে একই লক্ষ্য। তাছাড়া হোম গ্রাউন্ডের সুবিধাকে কাজে লাগিয়ে তারা চাইবে আরো বেশী সফল হতে।
আসলে ১৫ অক্টোবরের ম্যাচের আগে স্বাগতিকরা ফলাফলের চেয়ে বেশী গুরুত্ব দিয়েছিল গ্যালারির দর্শক উপস্থিতিকে। ভারতীয় অধিনায়ক সুনিল ছেত্রি কোলকাতার দর্শকদের অনুরোধ করেছিলেন তারা যেন পুরো স্টেডিয়াম পরিপুর্ন করে দিয়ে বাংলাদেশ দলকে চাপের মধ্যে রাখে। কিন্তু এতে হিতে বিপরীত চিত্র ভেসে উঠে। বাস্তবতা হচ্ছে উল্টো চাপে পড়ে গিয়েছিল স্বাগতিক দল। এমন পরিস্থিতিতে কোন রকমে হার এড়িয়েছে ভারত।
ওই ম্যাচে কোলকাতার দর্শকরা কিছুটা হাল্কা ভাবেই নিয়েছিল বাংলাদেশ দলকে। তাদের ধারনা ছিল সফরকারী দলটি বড় ব্যবধানে পরাজিত হবে। এমনকি ওই ম্যাচে ভারতীয় অধিনায়ক হ্যাট্রিক করছেন, এমন ব্যানারও সঙ্গে করে নিয়ে এসেছিল কোলকাতার দর্শকরা। তবে ফুটবলে সচরাচর এমনটিই হয়। কারণ ফুটবল ম্যাচের বড় অনুপ্রেরনা হচ্ছে দর্শক উপস্থিতি।
কোলকাতার ওই ম্যাচ দেখতে যাওয়া বাংলাদেশী দর্শকরা এবার চাইবে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামকে ভরপুর করে তুলতে। এটি বলার অপেক্ষা রাখেনা যে তারা কোলকাতার দর্শকদের জবাব দেয়ার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষমান রয়েছে।
এখন দর্শকদের প্রশ্ন হচ্ছে বাংলাদেশ কি সুযোগ পাবে? তবে এর সম্ভবনা কিছুটা ক্ষীন। কারণ বড় প্রশ্ন হচ্ছে কতোদিন স্থায়ী থাকবে করোনা ভাইরাসের দাপট। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে আরো সময় লাগবে বলেই মনে হচ্ছে।
বাংলাদেশ দলের কোচ কোচ জেমি ডে অবশ্য শংকাই প্রকাশ করেছেন। কারণ বিশে^র অন্যান্য দেশের বাছাই পর্বের ম্যাচ গুলো দর্শকশুন্য স্টেডিয়ামেই আয়োজনের কথা ভাবছে ফিফা। এমনকি আগামী তিন চার মাসের মধ্যে ফুটবল মাঠে ফিরলেও অবশিষ্ট ওই সময়ের মধ্যে মাঠে দর্শক আনা সম্ভব হয়ে উঠবে না।
ফিফা ও এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশন (এএফসি) অবশ্য গ্যালারিতে দর্শক উপস্থিতির কথা না ভেবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই বাছাইপর্বের ম্যাচ শেষ করার দিকে বেশী জোর দিচ্ছে। তবে এখনো পর্যন্ত এসব বিষয় নিয়ে তারা কোন মতামত প্রকাশ করেনি।
তবে যদি এমনটিই হয়, তাহলে গ্যালারি পুর্ন করে কোলকাতার দর্শকদের জবাব দেয়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবে ঢাকার দর্শকরা। আর একই ভাবে স্বাগতিক দর্শকদের সমর্থন পাওয়া থেকে বঞ্চিত হবে জামাল ভুঁইয়ারা।
কিছুদিন আগে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগ বলেছেন, ফিফার নির্দেশনা মোতাবেক এএফসি বাছাইপর্বের বাকী ম্যাচের জন্য একটি খসড়া সুচি ঘোষণা করেছে। এজন্য তারা বিভিন্ন সদস্য দেশের করোনা পরিস্থিতির খোঁজ খবর নিচ্ছে। ফিফা এবং এএফসির নির্দেশনা মোতাবেক বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন পরবর্তী ম্যাচের আয়োজন করবে।
বাসস/এমএইচসি/১৮০৮/স্বব