‘ইউনাইটেড নেশনস পাবলিক সার্ভিস অ্যাওয়ার্ড-২০২০’সংশ্লিষ্ট সকলকে ভূমিমন্ত্রীর অভিনন্দন

390

ঢাকা, ৫ জুন ২০২০ (বাসস) : ভূমি মন্ত্রণালয় জাতিসংঘের মর্যাদাপূর্ণ ‘ইউনাইটেড নেশনস পাবলিক সার্ভিস অ্যাওয়ার্ড-২০২০’ অর্জন করায় সংশ্লিষ্ট সকলকে অভিনন্দন জানিয়েছেন ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী।
তিনি আজ গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এই অর্জনের জন্য মন্ত্রণালয়ের সচিব, ভূমি সংস্কার বোর্ড, আইসিটি বিভাগ, এটুআই, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং মাঠ পর্যায়ে কর্মরত সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে এই অভিনন্দন জানান।
সাইফুজ্জামান চৌধুরী মর্যাদাপূর্ণ এই অর্জনের সঙ্গে এর ধারাবাহিকতা রক্ষার জন্যও সকলের প্রতি আহবান জানিয়েছেন।
বিবৃতিতে ভূমিমন্ত্রী বলেন, “জাতিসংঘের মর্যাদাপূর্ণ ‘ইউনাইটেড নেশনস পাবলিক সার্ভিস অ্যাওয়ার্ড-২০২০’ পেয়েছে বাংলাদেশের ভূমি মন্ত্রণালয়। দেশব্যাপি ই-মিউটেশন’উদ্যোগ বাস্তবায়নের স্বীকৃতি স্বরূপ “স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক সরকারি প্রতিষ্ঠানের বিকাশ” ক্যাটেগরিতে এই অ্যাওয়ার্ড অর্জন করে ভূমি মন্ত্রণালয়।”
তিনি বলেন, জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক বিষয়ক বিভাগের আন্ডার সেক্রেটারি কর্তৃক জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমাকে প্রদত্ত এক চিঠির বরাত দিয়ে আজ আনুষ্ঠানিকভাবে ভূমি মন্ত্রণালয়কে বিষয়টি জানায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধিকে লেখা চিঠিতে জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক বিষয়ক বিভাগের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল ল্যু ঝেনমিন উল্লেখ করেন, “জনস্বার্থে সেবার উন্নয়নে অসামান্য সাফল্য অর্জন করেছে মন্ত্রণালয়টি (ভূমি) এবং আমি বিশ্বাস করি, ভূমি মন্ত্রণালয়ের এই উদ্যোগ আপনার দেশে জনপ্রশাসনের উন্নয়নে তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রেখেছে। প্রকৃতপক্ষে, এই কাজ (ই-নামজারি) জন সেবায় ব্রতী হতে অন্যদের জন্য অনুপ্রেরণা এবং উৎসাহ হিসাবে কাজ করবে”।
প্রতিবছর ২৩ জুন, যথাযোগ্য মর্যাদা ও আনুষ্ঠানিকতার সঙ্গে জাতিসংঘ দিবসটি উদযাপন করে আসছে। এই সময়ে বিশ্বজুড়ে সরকারি খাতে গৃহীত সর্বোত্তম উদ্ভাবনী উদ্যোগসমূহকে পুরস্কারের মাধ্যমে স্বীকৃতি দেওয়া হয়।
বিশ্বব্যাপী কোভিড-১৯ মহামারীর প্রাদুর্ভাবের প্রেক্ষাপটে জাতিসংঘ এ বছর পাবলিক সার্ভিস পুরস্কার বিতরণ আপাতত অনুষ্ঠান স্থগিত করেছে। তবে, জাতিসংঘ তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্নমুখী প্রচার কার্যক্রমের মাধ্যমে এই অসামান্য অর্জন ও পুরস্কার বিজয়ের বিষয়টি তুলে ধরার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।
ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ”প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক রূপকল্প ২০২১ ও ২০৪১ বাস্তবায়নে এবং প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব আহমেদ ওয়াজেদ এর স্বপ্ন ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনে ভূমি মন্ত্রণালয় অধিকাংশ ভূমি সেবা ডিজিটাল সেবায় রূপান্ত সম্পন্ন করেছে এবং অবশিষ্ট ভূমি সেবাসমূহ ডিজিটাল করার কার্যক্রম হাতে নিয়েছে। আমার নেতৃত্বে এবং ভূমি সচিব মোঃ মাকছুদুর রহমান পাটওয়ারীর প্রত্যক্ষ তত্বাবধানে আইসিটি বিভাগ এবং এটুআই প্রকল্পের সার্বিক সহায়তায় ভূমি সংস্কার বোর্ডের মাধ্যমে ই-নামজারি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। আমার নির্দেশে গত ১ জুলাই ২০১৯ হতে সারাদেশে(তিনটি পার্বত্য জেলা বাদে)। একযোগে শতভাগ ই-নামজারি বাস্তবায়ন শুরু হয়।’
তিনি বলেন, বর্তমানে ৪৮৫ টি উপজেলা ভূমি অফিস ও সার্কেল অফিসে এবং ৩৬১৭ টি ইউনিয়ন ভূমি অফিস ই-নামজারি বাস্তবায়ন হচ্ছে। ২০১৯-২০ সনের মে মাস পর্যন্ত ১৫,৫৮,৭৭০ টি আবেদন পাওয়া যায় এবং ১৪,৭২,৫৮৮ টি আবেদন অনলাইনে নিষ্পত্তি হয়েছে। মুজিব শতবর্ষ উদযাপন উপলক্ষে ১৭ মার্চ ২০২০ হতে ম্যানুয়াল আবেদন গ্রহণ বন্ধ করা হয়েছে। প্রচলিত বিধান অনুযায়ী জনগণকে ভূমি অফিসে গিয়ে মিউটেশন করতে হতো। এতে জনগণের সময়, অর্থ ও যাতায়াতে অনেক ব্যয় অর্থ হতো। বর্তমানে এই সেবা ৪৫ কার্যদবসের পরিবর্তে সর্বোচ্চ ২৮ দিনেই ঘরে বসেই ই-নামজারি করতে পারছে। ভূমি মন্ত্রণালয়ের “স্লোগান হাতের মুঠোয় ভূমিসেবা” এর ধারাবাহিকতায় জনগণ তাদের দোরগোড়ায় কম সময়ে, কম অর্থ খরচে এবং কম যাতায়াত করেই তাদের সন্তুষ্টি সহকারে সেবা পাচ্ছেন।
ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান বলেন, জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রীর ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনে ভূমি মন্ত্রণালয় ২০০৯ সাল হতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় ভূমি মন্ত্রণালয়ের সকল কার্যক্রম অটোমেশন করা হচ্ছে। ই-মিউটেশন তারই একটি গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম।